গোদনাইলে ‘মা’ তিন গাট্টি’র ৪৫তম বার্ষিক ওরস মোবারক!

নিতাই বাবু
Published : 25 March 2017, 00:44 AM
Updated : 25 March 2017, 00:44 AM

প্রতিবারের মতো এবারও শুরু হচ্ছে 'মা' তিন গাট্টি পাগলিনীর ৪৫তম ওরস মোবারক। তিন দিনব্যাপী এই ওরস মোবারককে ঘিরে 'তিন গাট্টি' মাজার এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। শান্তিপূর্ণভাবে ওরস মোবারক সম্পন্ন করতে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং মাজার কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

ওরস মোবারক সফলভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে মাজার কমিটি এলাকার কয়েকজন মানুষকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, যেন ওরস চলাকালীন সময়ে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে।

জানা গেছে, আজ থেকে ৪৪ বছর আগে বাংলা চৈত্রমাসের ১০ তারিখে 'মা' তিন গাট্টি পাগলিনী মৃত্যুবরণ করেন। তখন থেকে এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবছর চৈত্রমাসের ১০.১১.১২ তারিখ পর্যন্ত 'মা' তিন গাট্টি পাগলিনীর নামে বাৎসরিক শাহাদাৎ বার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই তিন গাট্টি পাগলিনীর কাঁধে সবসময় থাকতো তিনটা গাট্টি। তিন গাট্টি পাগলিনীর জন্মস্থান কোথায় ছিল তাও মানুষ কোনদিন জানতে পারে নাই, তার ভাষাও কেউ বুঝতো না। কেউ কিছু দিলে তা তিনি সাথে থাকা গাট্টির ভেতরে ভরতো। সেই থেকে এলাকার লোকে তাকে তিন গাট্টি বলেই ডাকতো বা চিনতো।

তিন গাট্টি পাগলিনী মৃত্যুর পর এলাকার লোকে চিত্তরঞ্জন কটন মিলের ফুটবল খেলার মাঠের এককোণে তাকে কবর দেয়। সেই কবর-ই আজ 'মা তিন গাট্টি মাজার' নামে পরিচিত। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও পালিত হচ্ছে পবিত্র ওরস মোবারক। ১০ চৈত্র ১৪২৩ বাংলা (২৪ মার্চ ২০১৭ইং) রোজ শুক্রবার হতে শুরু হয়েছে 'মা' তিন গাট্টি পাগলিনীর ওরস মোবারক। শেষ হবে ১২ চৈত্র ১৪২৩ বাংলা (২৬ মার্চ ২০১৭ইং) রবিবার।

শুক্রবার সকাল নয়টার পর গিলাফ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হবে তিন দিনব্যাপী ওরসের কার্যক্রম। রবিবার দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। পরদিন সকালবেলা শিরণী বিতরণের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওরসের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। 'মা' তিন গাট্টি পাগলিনীর ওরস উপলক্ষে তিন গাট্টি মাজারের আশেপাশে ১০/১২ দিন যাবত থাকে লোকজ মেলা।

লোকজ মেলায় থাকছে লোকজ সংস্কৃতির নানা উপাদান। হস্তশিল্প, মৃৎশিল্পের তৈজসপত্র, পোশাক, পিঠা, ম্যাজিক শপ, বই, প্রসাধনী পণ্যসহ নানা ধরণের স্টল। থাকছে ধামরাইয়ের তামা, পিতল আর কাঁসা শিল্প। কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা আর টাঙ্গাইলের বাঁশের শিল্পকর্ম ইত্যাদি। মেলার একপাশে আছে বেশ কিছু মুড়ি মুড়কি, মিঠাই, মুড়ালি, পিঠে-পুলির স্টল। এছাড়া পুতুল নাচ, নাগর দোলা ইত্যাদিও আছে মেলা প্রাঙ্গণে।

সকলকে আনন্দ দানের জন্য থাকছে পুতুল নাচ, সাপ খেলা, ম্যাজিক, রেলগাড়ি, মোটরসাইকেল খেলা শোসহ বিভিন্ন খেলা ও প্রদর্শনী। প্রতি বিকেলে বসছে লোকজ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো, দিনের বেলায় থাকে ঐতিহ্যবাহী বাউলগান, কবিগান। এছাড়া মেলায় রাত ১০ টার পর থাকে বিশেষ আকর্ষণ পালাগান, মুর্শিদী, মারফতি গানসহ লোকসঙ্গীতের বিশাল আয়োজন, তা চলে সারারাত। এসব সংস্কৃতি অনুষ্ঠান, ছাড়াও তিনদিন পর্যন্ত থাকে 'মা তিন গাট্টি পাগলিনী' কে নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান।

'মা' তিন গাট্টি ওরসের মেলা শুরু হতেই এলাকাজুড়ে থাকে উৎসবের আনন্দ। ঐতিহ্যবাহী চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্ এর ফুটবল খেলার মাঠখানা কানায়-কানায় ভরে যায় মেলায় আসা দোকানপাটে। মাজার কমিটির পক্ষ থেকে দূর থেকে আসা দোকান মালিকদের প্রতিদিন দুপুরে একবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, সাথে 'মা তিন গাট্টি পাগলিনী'র ভক্তবৃন্দদের জন্যও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।

এবার মা তিন গাট্টি মাজার কমটির সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।

জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মাদবর
বীর মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, ১০ নং ওয়ার্ড গোদনাইল নগর পঞ্চায়েত কমিটি।
জনাব মোহাম্মদ মোখসেদুর রহমান-সদস্য সচিব
জনাব মোহাম্মদ রুবেল মাদবর-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ হালিম মাদবর-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ শামীম মাদবর-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ করিম-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ জাকির হোসেন-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ আলী আকবর(ফকির)-সদস্য
জনাব মোহাম্মদ আরিফ-সদস্য
উক্ত ওরস মোবারক উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন
জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মাদবর
বীর মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি ১০ নং ওয়ার্ড, গোদনাইল নগর পঞ্চায়েত কমিটি

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন কবেন
আলহাজ্ব মিনোয়ারা বেগম
মহিলা কাউন্সিলর, ১০.১১.১২ নং ওয়ার্ড নাসিক

সার্বিক পরিচালনায়
জনাব মোখসেদুর রহমান
জনাব রুবেল মাদবর