সেদিন হাওড়া ব্রিজ থেকে আসলাম ধর্মতলা, সেখান থেকে গেলাম টালিগঞ্জ। ছায়াছবি দেখা হবে, মেনকা সিনেমা-হলে। সিনামা দেখবো রাত্রিকালীন শো। শো আরম্ভ হবে রাত ৯ টায়, শেষ হবে রাত ১২টায়। ছায়াছবি 'বাজিগর' নায়ক শাহরুখ খান, নায়িকা কাজল অভিনীত। দেখলাম, ভারতের সিনেমা-হলে বসে বড় পর্দায় সিনেমা। আমি আরও দেখেছি, সেখানকার মানুষ খুবই সংস্কৃতি প্রিয়। একবেলা খাবার না খেয়ে, সেই টাকা দিয়ে তারা সিনেমা দেখবে। এমনও পরিবার দেখেছি, তাদের রান্না-বান্না চলে পাথর-কয়লা দিয়ে। সেই পাথর-কয়লা থেকে একটি-দুইটি করে কাঁচ-কয়লা প্রতিদিন রেখে দেয়। যখন একদিন রান্না করার মত কয়লা হয়, তখন গৃহিণী তার স্বামীর কাছ থেকে সেই টাকা আদায় করে নেয়। পরে সেই টাকা দিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী দুইজনে গিয়ে সিনেমা দেখে। যেদিন সিনেমা দেখবে, সেদিন ঘরে ফিরে আর রান্না-বান্না করবে না। সিনেমা দেখে আসার সময় কিছু চানাচুর বা বিস্কুট সাথে নিয়ে এসে তা-ই খেয়ে থাকবে। তবু সিনেমা দেখা চাই ই চাই। এ ছাড়াও যেকোন সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলে-দলে যোগদান করে থাকে। যেমন- যাত্রাপালা, লোকনাট্য, থিয়েটার, কবিগান সহ নানারকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। আর আমাদের দেশে বর্তমানে সিনেমা হলে তো কেউ যায় ই না। বহু জাগায় দর্শক সংকটে সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
সিনেমা দেখে সেদিন বাসায় ফিরতে রাত হয়েছিল প্রায় দেড়টা। কানাই আগেই জানত যে, এত রাতে বাসায় গেলে বাড়িওয়ালার ঘর বন্ধ থাকবে। তাই সিনেমা দেখে আসার সময়ই দুইটা পাউরুটি কিনেছিল। বাসায় গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে একটা পাউরুটি খেয়ে বিছানায় গিয়ে শুলাম। কিন্তু কিছুতেই আমার ঘুম আসছে না, মনটা কেমন যেন ছটফট করছে। মনে পড়ছে স্ত্রী ও সন্তানের কথা আর দাদা বৌদির কথা। আবার ভাবছি নিজের পকেটের কথাও, ভাবছি যেখানে যাব সেখানকার কথা। এই ঘুরাঘুরির মধ্যে নিজের বেশকিছু টাকা খরচও হয়ে গেল। পকেট শূন্য হয়ে গেলে কানাই যদি সহযোগিতা না করে? হয়ত করবে। তা-ও ক'দিন করবে, ওরও তো এখানে একটা সংসারের মতো আছে। যদিও বিয়ে শাদী এখনও করেনি, তাতে কী হয়েছে? দুইটা বোন তো সাথে আছে। আমাকে একা বাসায় রেখে কানাই কোনও কাজে কর্মেও যেতে পারছে না। এসব কিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম তা নিজেও জানিনা।
ছ'দিনের মাথায় কানাই বলল, তাড়াতাড়ি জামাকাপড় নিয়ে রেডি হয়ে নে, ফুলিয়া যাবো। কানাইর কথা শুনে আমি জামাকাপড় ব্যাগের ভেতরে ভরে প্রস্তুত। আমি বাড়িওয়ালার ঘরে গিয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম। কানাইর দুবোনকে বললাম, এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসেছিস, ভালোভাবে চলাফেরা করবি। এমনভাবে চলবি, যাতে অন্য কেহ কোনও খারাপ মন্তব্য না করতে পারে। এরমধেই কানাই রেডি হয়ে আমাকে ডাকল, আমি কানাইর সামনে এসে বললাম, আমি রেডি আছি, চল বাইর হই।
কানাইর ভাড়া বাসা থেকে শিয়ালদা রেলস্টেশন অনেকদূর। এতদূর রিকশা যাবে না, তাই একটা অটোরিকশা রিজার্ভ নিলাম। তবুও শিয়ালদা যেতে বেজে গেল সকাল ১০টা। শিয়ালদা থেকে ফুলিয়া যেতে সময় লাগল, ২ ঘণ্টার মতো। ফুলিয়া হলো পশ্চিমববঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার একটা থানা এলাকা। ফুলিয়া রেলস্টেশনের একটু পূর্বদিকে গেলেই রতন চক্রবর্তীর বাড়ি। কানাই আমাকে নিয়ে গেল রতনদার বাড়িতে। আসলে রতনদার কোনও বাড়ি নেই, আছে শুধু বাড়ি করার জায়গা। বর্তমানে যেই লোকটা রতনদার জায়গা দেখাশুনা করে তার নাম গৌরাঙ্গ। একসময় এই গৌরাঙ্গ দাদা আমার খুবই কাছের মানুষ ছিল। আগে বাংলাদেশে থাকতে একই মহল্লায় আমরা বসবাস করতাম। তিনি যে রতনদার জায়গা দেখাশোনা করে তা আর আমার জানা ছিল না।
আমাকে দেখেই গৌরাঙ্গদা বলল, কী রে! কেমন আছিস? কীভাবে এলি। বাসার সবাই কেমন আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বললাম, হ্যাঁ দাদা, আমি ভালো আছি, আর বাসার সবাই ভালো আছে। এখানে এসেছি কানাইর সাথে। তো আপনি কেমন আছেন? বৌদি কোথায়? গৌরাঙ্গদা উত্তর দিল, সবাই ভালো আছি, বলতে বলতে ঘর থেকে পিঁড়ি এনে দিয়ে বলল, বস। তখন গৌরাঙ্গদার বউ (বৌদি) বাসায় ছিল না। বৌদি গেছেন, কোনও এক জায়গায় বেড়াতে। এরপর কানাই গৌরাঙ্গ দাদাকে বিস্তারিত খুলে বলল, গৌরাঙ্গ দাদা শুনলেন। কানাইর কথা শুনে গৌরাঙ্গ দাদা বললেন, বেশতো, ভালো করেছিস। এবার ওকে রতনের জায়গায় একটা ঘর উঠাইয়ে দে, ও থাকুক।
কানাই কোনও কথা বলছে না, চুপ করে বসে আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে রে? আমি তো কিছু বুঝে ওঠতে পারছি না। কানাই আমাকে বলল, কিছু একটা তো হয়েছে রে। খেলা দেখাব, রতন না হয় রতনের বউকে।
আমার আর বুঝতে অসুবিধা হলো না, তারপরেও আমি বললাম, রতনদার ঘর কোনটা গৌরাঙ্গ দাদা? রতনদার ঘরে গিয়ে একটু বসি। এখানে থাকি বা না থাকি, রতনদার ঘরটা দেখে যাই। গৌরাঙ্গদা বললেন, রতনের ঘর তো তার জমিতে পরে আছে, ঠেলে ওঠাতে হবে। কানাইকে বল ঘরখানা ওঠানোর ব্যবস্থা করতে। গৌরাঙ্গদার কথা শুনে কানাই বলল, হয়েছে আর ঘর দেখতে হবে না, দেখব এবার রতনকে। আমি কানাইকে বললাম, কানাই তুই এখানে থাকিস, অথচ তুই কিছুই জানিস না! এটা কী বিশ্বাসযোগ্য? আমার কথা শুনে কানাই বলল, বিশ্বাস কর আমি জানি না যে, রতন চক্রবর্তীর বাড়ি নেই। যদি জানতাম, তা হলে অন্তত আমি তোকে আমার সাথে আনতাম না।
কানাইর কথা শুনে আমি বললাম, যা হবার হয়েছে এখন তোর বাসায় চল। আগামীকাল একটু কষ্ট করে দেখবি, কোনও মিলে সিট খালি আছে কি না। যদি কোনও কাপড়ের মিলে চাকরি না পাই, তা হলে আমি চলে যাব দিদির বাড়িতে। আমার কথা শুনে কানাই কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল। হয়ত আমার কথায় ওর একটু লজ্জাবোধ হচ্ছিল। লজ্জা তো পাবার কথাই কারণ, ওই তো আমাকে এখানে আনল। আর রতন চক্রবর্তীর সাথে ওই কথা পাকাপাকি করেছিল। এখন আমার কথায় ওর একটু লজ্জা লাগা স্বাভাবিক।
কিছুক্ষণ পর কানাই আমাকে বলল, শুন, কষ্ট করে যখন এখানে এসেছিস, তো একটা কিছু করতেই হবে। দরকার হয় ট্রেনে, বাসে, ট্রামে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করবি। একটু কষ্ট আর ধৈর্য ধরে থাকতে পারলেই, এখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিতে পারবি। কানাইর কথা শুনে আমি বললাম, তা পরে দেখা যাবে, এখন অন্তত এখান থেকে চলে যাই।
কানাই বলল, যাব, আগে তোকে নিয়ে ফুলিয়া এলাকাটা একটু ঘুরাইয়ে দেখাই। এখানে ছোট ছোট অনেক টেক্সটাই মিল আছে। যদি কপাল ভালো হয় একটা মিলে কাজ হয়ে যায় ক্ষতি কী? তা হলে রতন চক্রবর্তীর আর দরকার হবে না। আমি বললাম, চল তাহলে। বেলা অনেক হয়েছে, আবার তো বাসায় ফিরতে হবে। আমার কথা শুনে কানাই বলল, আচ্ছা ঠিক আছে, চল।
এরপর কানাই আর আমি গৌরাঙ্গ দাদার কাছ থেকে বলে কয়ে বিদায় নিলাম। আসলাম ফুলিয়া রেলস্টেশন, তখন দুপুর গড়িয়ে বিকাল হবার পালা। ক্ষিদে পেয়েছে খুব, কানাইকে কিছু না বলার আগেই, কানাই বুঝতে পেরেছে। কানাই আমাকে বলল, দেখ, এটা ভারত। এখানে খুবই হিসাব করে মানুষ চলে। গৌরাঙ্গ দাদা আমাদের খুবই কাছের লোক হয়েও দুপুরের খাবারের কথা কিছু বলল না। আর আমাদের বাংলাদেশ হলে কী হতো? নিজেরা না খেয়েও অতিথিকে খেতে দিতো। আমি বললাম, যা হবার হয়েছে, এখন চল একটা হোটেলে যাই, আগে কিছু খেয়ে নেই।
গেলাম ফুলিয়া রেলস্টেশনের বাইরে, খাবারের কোনও হোটেল নাই। মফস্বল এলাকা, এখানে বহিরাগত মানুষের বসবাস কম। হোটেলে কেউ খাবার খেতে আসে না, তাই হোটেলের ব্যবসাও কেউ করেও না। অথচ এই ফুলিয়া রেলস্টেশনের একটু পশ্চিমে কোলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার মেইন রোড। আছে বাসস্টপ আর অনেক বড় বাজার, তবু একটা খাবারের হোটেল নেই। আছে দুই একটা চা দোকান আর কয়টা মিষ্টির দোকান। হোটেল খুঁজে না পেয়ে একটা চা দোকানে গেলাম। চা দোকান থেকে দুইটা পাউরুটি কিনে গেলাম মিষ্টির দোকানে। মিষ্টির দোকান থেকে দুইজনে চারটে মিষ্টি নিয়ে পাউরুটি দিয়ে খেলাম।
এরপর কানাই আমাকে নিয়ে গেল একটা টেক্সটাইল মিলে। এই কাপড়ের মিলে তৈরি হয় ৬০ কাউন্টের সুতার গ্রে কাপড়। এই কাপড়গুলো ডাইং ও প্রিন্ট করে প্রস্তুত করা হয় শাড়ি। মিলে গিয়ে কানাই কর্তব্যরত সুপারভাইজারের সাথে আমার ব্যাপারে আলাপ করল। সুপারভাইজার আমাকে একটা চালু তাঁতের সামনে নিয়ে গেল, সাথে কানাইও আছে। সুপারভাইজার আমাকে বলল, মেশিনটা বন্ধ করুন। আমি সাথে সাথে মেশিনের হেন্ডেল ধরে চালু মেশিনটা বন্ধ করলাম। মেশিনটা বন্ধ করে পাঁচ মিনিট পর আবার চালু দিয়ে দিলাম মেশিন চলছে। আমার মেশিনে হেন্ডেল ধরা দেখেই সুপারভাইজার বলল, এই তো দেখছি তাঁতের ওস্তাদ। আগে কোথায় কাজ করেছে? কানাই বলল, আপনাকে তো আগেই বলেছি, ও বাংলাদেশ থেকে এসেছে। এখন আপনাদের মিলে কী কাজ করা যাবে? সুপারভাইজার বলল, বর্তমানে আমাদের এখানে কোনও সিট খালি নাই। খালি হতে আরও মাসেকখানি দেরি হতে পারে।
আমি সুপারভাইজার বাবুকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের এখানে 'ব' গাঁথার কোনও লোক লাগবে কি না? সুপারভাইজার বাবু বললেল, আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না যে, 'ব' গাঁথা কাকে বলে? আমি জিজ্ঞেস করলাম, শানা এবং বয়ার ভেতর দিয়ে সুতা ভরার কাজটাকে আপনারা কী বলেন? আমার কথা শুনে সুপারভাইজার বাবু বললেন, ওহ! বুঝেছি-বুঝেছি ওটাকে আমরা রিচিং বলি। আর যিনি এই কাজটা করে থাকে, তাকে বলি রিচিং ম্যান। আমি বললাম, আমার এই কাজটাও জানা আছে। যদি আপনার এখানে এই কাজের লোক না থাকে, তাহলে আমাকে এই কাজটা দিতে পারেন।
সুপারভাইজার বাবু হেসে বললেন, দুঃখিত! এই কাজটা এলাকার একজন লোকে করে। আর আপনি তো এই কাজ এখানে করতে পারবেন না। কেননা, আপনার তো হেলপার নাই। এই কাজ করতে হলে আগে দরকার হেলপার। কিন্তু আপনার তো তা নেই, করবেন কী করে? আমি আরও জিজ্ঞেস করলাম, থাক এই কাজও আমার দরকার নেই, এখন শুনি আপনাদের এখানে তাঁতিদের মজুরি দিয়ে থাকেন কীভাবে? সুপারভাইজার বাবু বললেন, প্রতি গজ কাপড় বুননকারিকে ৬০ পয়সা মজুরি দিয়ে থাকি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, একজন তাঁতিকে কয়টা করে মেশিন চালাতে দেন? সুপারভাইজার বাবু বললেন, দুইটার বেশি মেশিন কেউ কী চালাতে পারে? আর পারলেও আমরা দেই না। কারণ, বেশি মেশিন দিলে বুননের সময় কাপড় খারাপ করে ফেলে, তাই। আমি সুপারভাইজার বাবুকে বললাম, আমরা বাংলাদেশে একজন তাঁতি অন্তত ৬ থেকে ৮ টা করে মেশিন চালাই।
আমার কথা শুনে সুপারভাইজার বাবু মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পরলেন। চেয়ারে বসে বসে আমার দিকে আর কানাইর দিকে শুধু তাকাচ্ছে। এমনভাবে তাকাচ্ছে, যেন সুপারভাইজার বাবু বোবা হয়ে গেছে। সুপারভাইজার বাবুর এই অবস্থা দেখে কানাই বলল, কী স্যার, কিছু বলছেন না যে? আমারা তাহলে এবার আসি? সুপারভাইজার বাবু বললেন, দেখুন, আপনারা দিল্লি চলে যান, দুইটা টাকা কামাতে পারবেন। ওখানে অনেক উন্নতমানে কাপড় তৈরির মেশিন আছে। সেসব মেশিন আপনাদের জন্যই দরকার। এখানে কাজ করে আপনাদের কখনোই পোষাবে না। এখানে যারা তাঁত চালায়, তাদের সকলের বাড়িই মিলের আশেপাশে। তাদের কোনরকম বাজার করার টাকা হলেই হলো। সেটা তো আপনাদের বেলায় চলবে না দাদা। আপনাদের চাই, ভালো টাকা বেতনের চাকরি। সুপারভাইজার বাবুর কথা শুনে আমি বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে, দেখি কী করা যায়!
এরপর মিল থেকে কানাই আর আমি চলে এলাম বাইরে। তখন রাত প্রায় ৮ টার মতো বাজে। কানাই বলল, সর্বনাশ হয়েছে রে। এতো রাত হয়ে গেল, একটু টেরও পেলাম না। চল শিগগির ফুলিয়া রেলস্টেশনে। রাত ৯টায় একটা ট্রেন আছে, সেটা না ধরতে পারলে মহাবিপদ হবে।
কানাই আর আমি তাড়াতাড়ি হাঁটতে লাগলাম, আসব মেইন রোডে। হাইওয়ে পার হয়ে আসলাম, ফুলিয়া রেলস্টেশনের সামনে। তখন রাত ৯ টা বাজতে ৩০/৩৫ মিনিট বাকি আছে। আমার খুব ক্ষিদেও পেয়েছে। কিন্তু কানাইকে কিছু বলতেও পারছি না যে, কানাই আমার ক্ষিদে পেয়েছে। আমার অবস্থা দেখে কানাই বুঝতে পেরেছে যে, আমার ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে। কানাই আমাকে বলল, ট্রেন আসতে এখনও সময় আছে, চল কিছু খেয়ে নিই।
কানাইর কথা শুনে আমি খুবই খুশি হয়ে বললাম, আমিই তোকে বলতাম যে, আমার খুব ক্ষিদে লেগেছে, কিছু খেয়ে নিই। তার আগেই তুই বলে ফেললি? এখন চল একটা চা দোকানে যাই, ঝটপট কিছু খেয়ে নিই।'
গেলাম একটা চা দোকানে, আবারও নিলাম দুইটা পাউরুটি আর দুই কাপ চা। চা খেতে না খেতেই শোনা যাচ্ছে ট্রেনের হুইসেল। আমি কেবল পাউরুটিটা অর্ধেক খেয়েছি, হুইসেল শোনার পর আর খেতে পারিনি। তাড়াতাড়ি করে চা টা গিলে রুটিটা পকেটে ভরলাম। দোকানদারকে চা-রুটির টাকা দিয়ে দে দৌড়। আমর মতো কানাইরও একইরকম অবস্থা, দুইজনেই স্টেশনের দিকে দৌড়াচ্ছি। আসলাম স্টেশনে, কানাই বুকিং-এ গিয়ে শিয়ালদার টিকিট নিল দুইটা। ওঠলাম ট্রেনে, রাত ১১টার সময় পৌঁছলাম শিয়ালদা স্টেশনে। এদিন বাসায় যেতে রাত হয়েছিল প্রায় ১ টা।
চলবে…