পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবিক সাহায্যের প্রস্তাবনা (আপডেট)

সুলতান মির্জা
Published : 28 June 2012, 06:26 PM
Updated : 28 June 2012, 06:26 PM

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আমাদের পার্বত্য অঞ্চল, অতি বর্ষনের ফলে গত কয়েকদিনে পার্বত্য চট্টগ্রাম এর কক্সবাজার,বান্দারবান ও চট্টগ্রাম এলাকার বিশাল একটি দরিদ্র জনগোষ্ঠী হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ।

পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছে এখন পর্যন্ত সরকারী হিসেব মতে ১১০ জনের মত। গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে লাখ লাখ দারিদ্র জনগোষ্ঠী। এই মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের জন্য হয়ে গেছে নৈতিক দায়িত্ব।

আমরা কী বিডি ব্লগ পরিবারের পক্ষ থেকে যার যতটুকু সামর্থে কুলোয় তা দিয়ে দুর্গত অঞ্চলের অসহায় মানুষ গুলোর পাশে দাঁড়াতে পারি না ? দেখি না একটু চেষ্টা করে তাদের জন্য কিছু করতে পারি কী না।

আপনার কাছে যদি ১০০ টাকা থাকে তাহলে তাদের জন্য ৫০ টাকা দিন। আর এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৫০ টাকা মিলে হয়ে যাবে বিশাল একটি পরিমাণ।

আর আমরা আমাদের সামর্থ্য নিয়ে সবাই এগিয়ে আসবো এমনটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেই বিডি ব্লগ পরিবারের ব্লগার, পাঠক-পাঠিক দের এর প্রতি ত্রাণ বিতরনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করছি।

সর্বশেষ আপডেট কক্সবাজার থেকে বিশ্বস্থ এক সাংবাদিকের মাধ্যমে সংগৃহীত

কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া উপজেলা খুটাখালি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে খুটাখালীর পাগলির বিল, লম্বা থলি, সেগুন বাগিচা, পূর্বপাড়া, জয়নগর পাড়া, ফরেষ্ট অফিস পাড়া, উত্তর মাইজ পাড়া, জলদাশ পাড়া, উত্তর ফুলছড়ি, বাঁশকাটা, উত্তর মেদা কচ্ছপিয়া, খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয়, কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন ও তমিজিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় এখনো পর্যন্ত বন্যার পানি রয়েছে। শুধুমাত্র খুটাখালীর মেদাকচ্ছপিয়ার পাগলির বিলে প্রায় ২০০ পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাছাড়া ও পুরো চকোরিয়াতে কিছু উচু এলাকার পানি সামান্য কমলেও আজকে পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজারেরও অধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

কক্সবাজারে ঈদগাঁওর বন্যা কবলিত অসহায় লোকজনের পুর্ণবাসনের যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বন্যার্তদের সহায়তায় এ পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেন নি। তবে সরকারী ভাবে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম।

কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রবল বর্ষনের ফলে পাহাড় ধ্বসে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকার সর্বত্র শোকের আবহ বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় প্রশাসন বা স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোন ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়নি।

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বন্যা কবলিত ১১ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে।উপজেলার ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, খুনিয়াপালং, চাকমারকুল, জোয়ারিয়ানালা, গর্জনীয়া, কচ্ছপিয়া, ঈদগড় ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। তবে পানি নেমে গেলেও রয়ে গেছে অন্তহীন দুর্ভোগ।পাহাড়ি ঢলের পানি ও পললে তলিয়ে গেছে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলার চাঁন্দের পাড়া পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর দু'তীরের শতাধিক একর বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। ফলে ওইসব এলাকায় চলছে কৃষকের হাহাকার। পানিতে মারা পড়েছে শতাধিক পোল্ট্রি ফার্মের কয়েক হাজার মুরগী। নদীতে ভাসছে মৃত গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগী। জানতে পেরেছি ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ চিড়া, গুড়, বিস্কিট, মুড়ি দিলেও তা খুবই অপ্রতুল। দুর্গত এলাকায় চলছে মানুষের হাহাকার।

নতুন করে নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসুন আবারো বলছি যার যা সাধ্যে কুলোয় তাই দিয়ে ওদের পাশে দাঁড়াই।

ত্রাণসামগ্রী- (তালিকা সংশোধনযোগ্য)


*খাবার স্যালাইন
*বিশুদ্ধ খাবার পানি
*পানি পরিশোধনকারী ট্যাবলেট বা ফিটকিরি
*হালকা খাবার (চিড়া, গুড়, বিস্কিট)
*ডায়রিয়া ও জ্বরের ঔষধ

বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হোক ও একটি ত্রাণ কমিটি করা হোক।

দুর্গত এলাকায় কে কে যেতে আগ্রহী তা মন্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি।

এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা নিয়ে অতি তাড়াতাড়ি ব্লগার কৌশিক আহম্মেদ, ব্লগার আইরিন সুলতানা, ব্লগার উত্তরপুরুষ, ব্লগার মঞ্জুর মোর্শেদ, ব্লগার জাহেদ উর রহমান আপনারা, আর্তমানবতার প্রশ্নে কোনও এক জায়গাতে বসে আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে তা আপডেট দিতে বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

দেরি করার সময় নেই। যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।

সকল সহব্লগার ও পাঠক-পাঠিকাদের কে বলছি মন্তব্য করে নিজের মতামত উপস্থাপন করার জন্য। আপনাদের উপস্থাপিত পরামর্শমূলক মন্তব্য গুলো উপরেল্লিখিত ব্লগাররা গুরুত্ত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে। যেহেতু বিডি নিউজ ব্লগের অনেক ব্লগার প্রবাসী আর তাই ব্লগে মন্তব্য ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প উপায় নেই।

যেহেতু হাতে সময় কম আর তাই মন্তব্যের ঘরে আপনারা ইচ্ছা করলে কে কী পরিমাণ সহায়তা করবেন তা ঘোষণা দিতে পারেন। পরবর্তীতে উপরেল্লিখিত ব্লগারদের সিদ্ধান্তের পর আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে কীভাবে সহায়তা গ্রহণ করা হবে।

এই পোস্ট প্রতিদিন আপডেট দেওয়া হবে।

বি.দ্র.চট্টগ্রাম, বান্দারবান, কক্সবাজার অঞ্চলের ব্লগারদের মন্তব্য করে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য বলছি।সাথে মোবাইল নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করার জন্য। কারণ ওই অঞ্চলের ব্লগার থাকলে খবরাখবর গুলো খুব সহজেই সংগ্রহ করতে সুবিধা হবে।

***আপডেট:১ [৩০ জুন ২০১২]***

২৯/০৬/২০১২ ইং তারিখ এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্লগার আইরিন সুলতানা,ব্লগার কৌশিক আহম্মেদ,ব্লগার আব্দুর রাজ্জাক, ব্লগার জাহেদ উর রহমান এর আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিডিনিউজ ব্লগার টিম আগামী ০৯/০৭/২০১২ ইং তারিখ থেকে দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ তৎপরতা চালাবে। সেই জন্য উল্লেখিত ব্লগারদের পরামর্শ মোতাবেক বিষয়টি আপডেট দেওয়া হইল। আর এই ক্ষেত্রে সহ ব্লগারদের পরামর্শ আহবান করা যাচ্ছে। পরামর্শ দিন কার কোনও আপত্তি রয়েছে কিনা?

***আপডেট:২ [৩০ জুন ২০১২]***
উল্লেখিত সকল ব্লগারদের সম্মতিতে ০১/০৭/২০১২ ইং তারিখ থেকে অনুদান পাঠানো যাবে।

কিভাবে পাঠাতে হবে?
বিদেশ থেকে প্রবাসী ব্লগার ও পাঠক-পাঠিকাদের জন্য ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম ও অন্যান্য সকল সুবিধার মাধ্যমে ঢাকা ব্যাংক, উত্তরা-ঢাকা শাখায়। অনুদানের টাকা প্রেরণ করে নিম্নে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে একটা এসএমএস জানিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। এছাড়া যারা অনুদান পাঠাবেন, তারা একটু কষ্ট করে এই পোস্টে মন্তব্য করে অর্থের পরিমাণ ও পাঠানোর তারিখ অবশ্যই জানিয়ে দেবেন। অর্থ সংগ্রহের পর সংগ্রহকারী ব্লগারও মন্তব্য প্রদান করে আপডেট বজায় রাখবেন। ফান্ড কালেকশনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রক্ষার স্বার্থে এটি করা জরুরী। তাই পাঠনো পরিমাণ যতই হোক না কেন, অনুগ্রহ করে তা জানান দিন। কারণ অর্থ সংগ্রহের পুরো হিসেব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেয়ার চেষ্টা করা হবে পোস্টে।

দেশ থেকে অনুদানের টাকা পাঠাবেন তাহলে সারা দেশের যেকোনো জায়গা থেকে, সুন্দরবন কুরিয়ার, এস এ পরিবহন এর মাধ্যমে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

উল্লেখ অনুদানের প্রাপ্ত সকল বিবরণী এই পোস্টে উপস্থাপন করা হবে।

ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও কুরিয়ার করতে দেশি/প্রবাসীদের যে তথ্যগুলো দরকার তা এখানে:
ঢাকা ব্যাংক/ব্র্যাক ব্যাংক, উত্তরা ব্রাঞ্চ
যার নামে মানি ট্রান্সফার হবে: আইরিন সুলতানা (IREEN SULTANA)

>>>অনুদান পাঠানো যাবে আগামী ০৫/০৭/২০১২ ইং তারিখের মধ্যে।

>>> বিডি ব্লগাররা কবে রওয়ানা হব: আগামী ০৫/০৭/২০১২ ইং তারিখ রাতে।

> দুর্গত এলাকাতে প্রশাসনিক সহযোগিতার দরকার আছে কি? হ্যা। এই বিষয়টা দেখবেন আমাদের ব্লগার জনাব আব্দুর রাজ্জাক ভাই।

***আপডেট:৩ [৫ জুলাই ২০১২ ইং]***

বৃহস্পতিবার রাতে ব্লগাররা রওনা দিচ্ছেন। একদিনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কক্সবাজারের চকোরিয়া বা রামুর প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষদের সহায়তা করা হবে যথাসম্ভব। যে সকল ব্লগার দুর্গত এলাকায় যাচ্ছেন –

ব্লগার আলোর সন্ধানে
ব্লগার আরিফ হোসেন সাঈদ
ব্লগার কৌশিক আহমেদ
ব্লগার মঞ্জুর মোর্শেদ
ব্লগার সুলতান মির্জা

***আপডেট:৪ [৫ জুলাই ২০১২ ইং]***

সংগৃহিত অর্থের পরিমাণ:

১.ব্লগার কাজী মুরাদ – ৩০,০০০/-
২. ব্লগার আব্দুল মোনেম – ১০,০০০/-
৩. ব্লগার উত্তর পুরুষ -৫০০০/-
৪. ব্লগার জাহেদ উর রহমান – ৫০০০/-
———————————-
সর্বমোট নগদ অর্থের পরিমাণ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা)

এছাড়া, ব্লগার নুরুন্নাহার শিরীন ওষুধ/স্যালাইন/বিস্কিট/শুকনা খাবার দিচ্ছেন।

বিস্তারিত: মন্তব্য নং ৪৮

***
ফিচার ছবি: সুমন বাবু/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/ চট্টগ্রাম, জুন ২৮, ২০১২