জামায়াত ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক মরণঘাতী ক্যান্সার! বিএনপি সেই ক্যান্সারে আক্রান্ত ফুসফুস!

সুলতান মির্জা
Published : 10 Feb 2012, 03:09 AM
Updated : 10 Feb 2012, 03:09 AM

আজকে চারদিকে এত হতাশা কেন কেউ কী বলতে পারেন? বাংলাদেশে গণতন্ত্র যাও ছিল তাও অনেকটা হুমকির মুখে। মুখে মধু অন্তরে বিষের মত। জানি না কিসের আশায় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উনার দল বিএনপি তে এই মরণঘাতী রোগটিকে এখন ও লালন পালন করছে। সেটা যদি হয় শুধু ক্ষমতার জন্য তাহলে আমি মনে করি এটা বিএনপি নেত্রীর একধরনের অদূরদর্শী পলিসি। বিএনপি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্‍ একটি রাজনৈতিক দল যাদের রয়েছে দেশপ্রেমিক অনেক নিজস্স কর্মী বাহিনী, ১৯৯১-১৯৯৬ একক ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা। বিএনপি নেত্রী ইচ্ছা করলে এখন ও একক ভাবে যেতে পারে। এখন যদি কেউ বলে বিএনপি নেত্রী বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা করার জন্য রাজনীতি করছে তাহলে আমি বলব তার এখনো বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। বিএনপি নেত্রী জামায়েত এর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খুজছে। একটু খেয়াল করে দেখবেন কী, বিএনপির দেশপ্রেমিক নেতারা এখন প্রায় নিশ্চুপ। কিন্তু কেন ? আমি যতটুকু জানি এইসব দেশপ্রেমিক নেতারা এখন চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসে, কারণ বেশি কথা বললে দল থেকে বহিস্কারের ভয় আছে।

বলতে পারেন বাংলাদেশের মোট জনসংখার কত % জামায়াতের মূল রাজনীতির ভোটার? ধরে নিন ৪% বা ৫% হবে, এই ভোটের জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই জামায়াত প্রীতি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে সেটা আমার মত সাধারণ একজন মানুষ বললে হয়তো কেউ কেউ সরকার পক্ষের দালাল বলে গালি ও দিতে দ্বিধা করবে না। কিন্তু যখন সেটা বাস্তবে পরিণত হবে তখন হয়তোবা আগের অবস্থায় ফিরে আসাটা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না। শুধু একটা বাস্তবতা দেখুন, এই মুহূর্তে আমাদের রাজনীতির অস্থিরতা কোন পর্যায়ে ? এই অস্থিরতার জন্য কী শুধু সরকার একা দ্বায়ী ? আমি মনে করি মোটেই না। আন্দোলন গণতান্ত্রিক দেশের একটি গণ অধিকার, সরকারের সকল অপকর্মের গঠনতান্ত্রিক সমালোচনা করা বিরোধী দলের একটি রাজনৈতিক অধিকার তাহলে জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে। মজার ব্যাপার হলো আমরা গত ৩ বছরে বিরোধী দলের হরতাল দেখেছি, কিসের জন্য ডাকা হরতাল দেখলাম ? কেউ ভাল করে জানি না। তবে এইটুকু বলতে পারি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুন:উদ্ধার, জ্বালানি তেলের মুল্য বৃদ্ধি, বাস ভাড়া বৃদ্ধির, নাগরিক জীবনে খরচ বৃদ্ধির, প্রতিবাদে বিরোধী দলের ডাকা কোনও হরতাল দেখিনি। ভুল করে শুনিনি প্রধান বিরোধী দল সংসদে জনগণের জন্য কথা বলতে গেছে। এখন যদি আমরা ধরে নেই, জামায়াত নেতাদের রক্ষা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দৃষ্টি (সরকার বিরোধী দলের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে) আকর্ষণের জন্য সু-কৌশলী জামায়াত বিএনপি কে দিয়ে এইসব ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী (মানে মিছিলের মধ্যে যেন লাশ পড়ে সেই পরিস্থিতি তৈরি করা) এইসব তথাকথিত গণ মিছিল,হরতাল গুলো করাচ্ছে।

মগজ ধোলাই জামায়াতের প্রথাগত রাজনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ইসলামী ছাত্র শিবির হলো জামায়াতের মগজ ধোলাই এর হাতিয়ার। বলতে পারেন, দেশে এই মুহূর্তে কতগুলো কোচিং সেন্টার আছে ? আমি বললে আপনাদের কাছে আজব মনে হতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টার হলো শেষ ধাপ, শুরুটা হলো কিণ্ডারগার্ডেন পর্যায় থেকে, বাংলাদেশের মোট প্রতিষ্ঠানের ৭৫% প্রতিষ্ঠান জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের আর্থিক সহযোগিতায় ইসলামী ছাত্র শিবির পরিচালনা করে থাকে। শুধু তাই নয় ইদানিং ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো ও জামায়াত, শিবিরের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। উদ্দেশ্য পড়াশুনার মাধ্যমে আধুনিক মগজ দোলাই। যার কারণে আমাদের তরুণ সমাজ বিপদগামী হচ্ছে। আপনার আমার সাথে একমত কিনা জানি না, জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক ভিত বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ে শক্ত। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রইউনিয়ন আরও যে সকল ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশে রয়েছে এদের কারও কিন্তু বেসামরিক প্রশিক্ষণ নেই। শিবিরের প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে। বলতে পারেন কেন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, আমাদের দেশের রাজনীতিতে কী এই ধরনের প্রশিক্ষণ খুব দরকার আছে ? এদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড অনেক সময় খুব নিকৃষ্ট আকার ধারণ করে।

একটা উদাহরণ দেই, আপনারা মদের দোকান মানে বার চিনেন তো ? তো বারে গেলে একটা ব্যাপার খেয়াল করবেন ওই খানে বারটেন্ডার থাকে (বারটেন্ডার হলো অথিতিদের মাঝে যারা মদ বিতরণ করে)অবস্থাটা এমন হয়েছে এই বারটেন্ডাররা কিন্তু সার্বক্ষণিক মদ সরবরাহের মাধ্যমে অতিথিদের মাতাল করে তুললেও নিজেরা কখন ও ডিউটির সময় মদ্যপান করে না। জামায়াত, শিবির ঠিক এইভাবে বারটেন্ডাররের আদলে বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি পরিচালনা করে থাকে। যেমন টা এখনকার বিএনপি কে দিয়ে করাচ্ছে। আজকের বিএনপির যেই আচরণ জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ হওয়ার আগে এমনটা ছিল না। এখন বিএনপি হঠাত্‍ করে এমন হয়ে গেল কেন ? উত্তর মিলিয়ে নিন এর জন্য জামায়াতের হিংসাত্তক মনোভাবই দ্বায়ী।

এই মুহূর্তে বিএনপি এই জামায়াত নামক ক্যান্সারের মরণঘাতী কোষ নিযন্ত্রণে কেমোথেরাপি যদি না করে, তাহলে একটা সময় আসবে যখন আর কেমোথেরাপি তে কাজ হবে না তখন কিন্তু কোষটা কেটে ফেলতে হবে আর সেজন্য অস্ত্রোপচার জরুরী হয়ে পড়বে, আর বিএনপি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।