জাপানি শিশুর সংস্কৃতি বিনিময়

নুরুন নাহার লিলিয়ান
Published : 4 May 2016, 03:32 AM
Updated : 4 May 2016, 03:32 AM

জাপান সাগর আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভালবাসার দ্বীপ হোক্কাইডো। সেই দ্বীপের  অত্যন্ত সুপরিকল্পিত শহর  সাপ্পোরো। বেশকিছু এশিয়ান দেখা গেলেও ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের সংখ্যা হাতে গোনা প্রায় একশ।  যদিও দিন দিন সে সংখ্যা বাড়ছে।

এখানে জাপানি ভাষা না জানলে জীবন খুব কঠিন। সব দিক থেকে উন্নত  হলেও ভাষা এবং সংস্কৃতির যেন তাদের খুব গোপন মায়া। কিছুতেই তারা সেখান থেকে বের হতে পারে না। তথ্যপ্রযুক্তি আর যোগাযোগের এই যুগেও অনেক দেশের মানুষ এখনও বাংলাদেশেরর নাম জানেনা। সাপ্পেরো শহরের অনেকেই জানেনা। আমিও অবাক হয়েছিলাম যখন আমাকে ভারতীয় ভাবা হল। তখন  এই দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারনা নেই।

মারুয়ামা পাহাড়ের এক স্কুলে আমি কিছুদিন খণ্ডকালীন চাকরি করছি। সেখানে নানা দেশের মায়েরা তাদের সন্তানদের আধুনিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য জাপানি ইংরেজী স্কুলে নিয়ে আসে। আমার বিচিত্র সংস্কৃতির মাঝে নতুন বিষয় জানতে ভালই লাগছিল। আমিও বাংলাদেশি সংস্কৃতি কে সুযোগ পেলেই তুলে ধরি।

সেদিন ছিল স্কুলের স্পোর্টস ডে। পাহাড়ের যেখানে খেলা হবে সেখানে নানা দেশের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। সেই পতাকা গুলোর মাঝে ভারতীয় পতাকা থাকলেও বাংলাদেশি পতাকা নেই। স্কুলের ডিরেক্টর চিয়ো সাইতো আমাকে খুব ভাল জানে। আলাদা তার সাথে আমার দাদী-নাতনি সম্পর্ক। সেদিন আমাকে স্কুলের অভিবাবকদের সাথে পরিচয় করাতে গিয়ে দেখে বাংলাদেশের পতাকা নেই। ডিরেক্টরের  মন খারাপ হলো। তিনি অর্ডার করলো সবুজের ভিতর লাল বৃত্ত।  জাপানি পতাকার কাছাকাছি ডিজাইনের বাংলাদেশের পতাকা  জায়গা করে নিল।

পুরো বিষয়টা আমাকে পরিচয় করাতে গিয়ে হয়েছিল। আমি আমার নিজ দেশের পোশাক শাড়ি  পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু শিশু শ্রেণীর বাচ্চা গুলোর চোখ থমকে গিয়েছিল। ওরা ওদের ছোট ছোট চোখ দিয়ে আমাকে অদ্ভুত ভাবে দেখছিল। যেন ভিন গ্রহের এলিয়েন। তবে এটা ভাবতে কেমন যেন লাগছিল এই সময়েও কেউ কেউ বাংলাদেশকে ভিন গ্রহ ভাবে। আমাদের ভাবে এলিয়েন।