তবুও আমরা রাস্তার খাবার খাই!

নুরুন নাহার লিলিয়ান
Published : 22 March 2017, 05:54 PM
Updated : 22 March 2017, 05:54 PM

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই মোটামুটি স্ট্রিট ফুড বা রাস্তার খাবার জনপ্রিয়। রাস্তায় মানুষ বের হলে মানুষ খাবেই। কিন্তু আমাদের দেশে রাস্তার খাবারগুলো কিংবা নরমাল ফাস্ট ফুড রেস্তরার খাবারগুলো কতটুকু স্বাস্থ্য সম্মত? একদিন এক পরিচিত সাংবাদিক অসুস্থ ছিল পিজি হাসপাতালে। আমরা কয়েকজন দেখতে গিয়েছিলাম। যেতে যেতে রাস্তায় চা খেতে ইচ্ছে হল। কিছু দূর এগুতেই দেখি ড্রেনের নোংরা পানি দিয়ে কেটলি ঘষা মাজা করছে। সাধারণ প্রতিবাদ করলাম। অভদ্র লোকেরা নিজের দোষ কখনও স্বীকার করে না।

যাই হোক কিছুদিন আগে সাধারণ শপিং এবং ঘুরতে নিউ মার্কেট গেলাম। আমার ক্ষুধা লাগল। এর মধ্যে কয়েক রেস্তরাঁর লোক আপা এখানে আসেন…. আপা এখানে আসেন- এই টাইপ জোরাজুরি করতে লাগল। যারা নিয়মিত ঢাকার নিউমার্কেট দু'তলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করে তারা এই দৃশ্য দেখে থাকবে।

(ময়লা সহ সিদ্ধ না হওয়া মাংস)

আমি একজন কর্মীকে বললাম ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হবে আরে হবে হবে। আরে আপারে বসতে দে। একটা খাবারের মেন্যু নিয়ে একটা ছেলে আসলো। আমি দেখে শুনে একটা সেট অর্ডার করলাম। সেখানে চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, সেভেন আপ ড্রিঙ্ক আর ক্ল সালাদ।

মুরগি খেলাম হাল্কা গন্ধ শুকে শুকেই। ব্যস্ততার কারণে মেন্যু দেখিনি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম মুরগির মধ্যে ময়লা! কিন্তু যখন আমি প্রায় সব টাই খেয়ে নিয়েছি। এরপর চোখ গেল মেন্যুর দিকে ক্ল সালাদ দেয়নি। দিয়েছে তিন টুকরা শসা।

আমি রেস্তরার লোক কে ডেকে বললাম এই যে মুরগির ভিতরে ময়লা আর আর আপনারা তো ক্ল সালাদ দেন নি। তখন লোকটা বলল, এই তিন টুকরা শসাই ক্ল সালাদ। আমি গুগল এ দেখালাম। সসা আর ক্ল সালাদ কি? লোকটার কিছু বলার নাই। মাথা চুলকায় আর হাসে। তারপর বলে- আসলে অনেকেই ক্ল সালাদ খায় না তাই শসা দেই। আমি হেসে দিলাম আমি তো এটা আছে বলেই এই সেট নিলাম। লোকটা তখন বলে-  আসলে আপা আজকে সালাদটা বানায় নাই।

আমি বললাম টাকা তো কম নিবেন না। শসা আর সালাদ কি এক জিনিস হলো? যাইহোক আমি টাকা দিচ্ছি অযথা সময় ব্যয় বা ঝামেলা বাঁচাতে। তবে মনে রাখবেন ছদ্মবেশে ভ্রাম্যমান মেজিস্ট্রেট বা পুলিশ আসতে পার। সততার সাথে ব্যবসা করুন। নয়তো একদিন মহা বিপদে পরবেন। লোকটা কিছু বলে না। তারপর আসার সময় বলে এর পর হবে না।

আর আমি ভাবলাম তবু লোকটা বাজে মন্তব্য করেনি। কিছুটা হলেও স্বীকার করেছে। আমাদের দেশে কেউ এখন নিজের দোষ স্বীকার তো করেই না বরং গায়ের জোর দেখায়। তাই ভাবলাম থাক তবুও স্বীকার করেছে। তাই পুরো টাকা দিয়েই বের হলাম।


(ভীড়ে রেস্তরাঁর ছবি তুলতে ব্যর্থ চেষ্টা।)

নুরুন নাহার লিলিয়ান
nnahar55@yahoo.com