প্রয়োজনে জরুরী অবস্থা জারি করা হোক

মোঃ আখতারুজ্জামান পায়েল
Published : 31 Jan 2013, 05:46 PM
Updated : 31 Jan 2013, 05:46 PM

ভ্যানের যাত্রী দূরে ছিটকে পড়লো পেছনের যাত্রীবাহি মেক্সির আঘাতে। মেক্সির ড্রাইভার নিজের প্রাণ এবং মেক্সিটাকে শিবিরের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণে ছুটে চলছিল। যার প্রেক্ষিতে পথচারী এবং সামনে থাকা ভ্যান কে পেছন থেকে ধাক্কা দায়। লাভ হয়নি। বরং দুইজন আহত হলো, একজন পথচারী এবং আরেকজন ভ্যানচালক। আর মেক্সি ড্রাইভার? একটা দিক রক্তাক্ত। মুখের ডান দিক থেঁতলে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ছিলনা ঐ স্পটে। ছিল দূরে। পুলিশ আসার আগেই জনতা ঐ ড্রাইভারকে উদ্ধার করে। আর মেক্সির অবস্থা? জ্বালিয়ে দিল যুদ্ধাপরাধীদের যারা মুক্ত করার জন্য হরতাল আহবান করেছে। সরকার ব্যর্থ আমাদের নিরাপত্ত দিতে।

ছাত্রলীগকে নামানো হলো বগুড়ায়। কিন্তু এখন ছাত্রলীগ মাঠে নামবে? পুলিশ কি নেই? পুলিশ কে কেন নির্দেশ দেয়া হচ্ছে না এদের দমন করার জন্য? কেন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ কে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার জন্য এখন পথে নামানো হলো? বগুড়ায় তিন জনের মৃত্যু। পুলিশের গুলিতে কোন মৃত্যু নেই। তাহলে? নিশ্চয়ই ছাত্রলীগের হাতে। অথবা শিবির নিজেদের লোকদের কে হত্যা করেছে। যেটাই হোক না কেন, গোপনে তো আর হয়নি। প্রকাশ্যে কিছু লোক কে হত্যা করা হয়েছে। এর দায়ভার কে নিবে?

পুলিশ আছে, র‌্যাব আছে। তারা যদি ব্যর্থ হয় তবে বিডিআর, সেনাবাহিনী কে মাঠে নামানো হোক। সরকার শিবির কে সামাল দিতে না পারলে জরুরী অবস্থা জারি করুক। তবু ও এমন হত্যাকাণ্ড আমি দেখতে চাই না। রাজপথে গোলযোগের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটলে মন কে মানানো যায়। কিন্তু এভাবে দুই দলের মারামারিতে হত্যাকাণ্ড ঘটলে সেটা মেনে নেয়া সম্ভব না। পুলিশ কে পেটাচ্ছে শিবির। তখন পুলিশ গুলি করছেনা। মরিচের গুড়ো ছিটাচ্ছে না। তারমানে শিবিরের বিরুদ্ধে সরকারের পুলিশ বাহিনীকে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। আর মাঠে নামানো হচ্ছে ছাত্রলীগ কে। এটা কি আইনসিদ্ধ? সচেতন নাগরিকদের এখন উচিৎ হাইকোর্টে যাওয়া। দেশে যদি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে থাকে, সেটা ভিন্ন কথা। আর যদি না হয়ে থাকে, তবে পুলিশ-র‌্যাব দিয়ে শিবিরকে সামাল দিতে হবে। না পারলে সেনাবাহিনী, বিডিআর। এরপর ও না পারলে জরুরী অবস্থা। সর্বশেষে না পারলে গৃহযুদ্ধ। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা যে কাউকে রাজপথে নামানো হোক। কিন্তু এখন কেন?

ছাত্রলীগকে মাঠে নামানোর তত্ত্বের আবিষ্কারক আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উনি কি এমন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ারে বসে? সাগর-রুনির হত্যা রহস্য নাকি ১০দিনের মাঝে উনি আবিষ্কার করবেন। শুধুই লেকচার সর্বস্ব মানুষ ওনাকে মনে হচ্ছে। সর্বশেষে বিরোধীদলের চিফ হুইপকে আঘাত করা পুলিশ কে দিলেন রাষ্ট্রপতি পদক এবং সদম্ভে ঘোষণা ও করে দিলেন পদক দেয়ার কাহিনী। অথচ যখন পুলিশ কে মারমুখী হতে হবে, তখন উনি পুলিশ কে মাঠে মারমুখী হওয়ার নির্দেশ না দিয়ে ছাত্রলীগ কে মাঠে নামানো হলো। এই মানুষটার তার পদে থাকার অধিকার নেই। উনি যে পথে চলছেন, সেই পথে সরকার চলতে থাকলে পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে যাবে এবং ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে পরিচিতি পাবে। ছাত্রলীগের অবস্থা এমনিতেই নেতিবাচক। তার উপর শিবির নিধনযজ্ঞে যদি নামানো হয় এই মূহুর্তে তবে সেটা ছাত্রলীগের ভবিষ্যতের জন্য বুমেরাং হয়ে উঠবে।

অতএব, ছাত্রলীগ কে রাজপথ থেকে তুলে নেয়া হোক, শিবির কে মোকাবেলা করার জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনী কে সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়া হোক, প্রয়োজনে বিডিআর অথবা আর্মি নামানো হোক। কোন অবস্থাতেই ছাত্রলীগের উপর আইনশৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব অর্পণ না করা হোক। আর যদি সরকার কন্ট্রোল করতে না পারে, তবে জরুরী অবস্থা জারী করা হোক। তারপর ও আমরা শুনতে চাই না যে, ছাত্রলীগের হাতে কোন শিবিরকর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশের হাতে নিহত হলে ও মানার মতো। ছাত্রলীগের হাতে হলে মেনে নেয়া যায় না। কারণ, দেশে এখনো একটা সরকার আছে। আইনের শাসন সেখানে কিছুটা হলে ও আছে। আর মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। কারণ, পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভাঙ্গার জন্য ওনাকে আমি দায়ী করছি। পুলিশ বাহিনী যদি মনোবল ভেঙ্গে এভাবে মার খেতে থাকে, তবে নিশ্চিত যে, আমি আপনি ও মার খেতে চলেছি। কার হাতে? শিবিরকর্মীদের হাতে, যারা মুক্ত করতে চায় যুদ্ধাপরাধীদের।

জামান পায়েল
ফ্রিল্যান্সার ওয়েব ডিজাইনার
ময়মনসিংহ
http://facebook.com/akhtaruzzaman.payel