সিটিং নামের চিটিং হইতে সাবধান!!

রাজিব রাজ
Published : 4 Oct 2015, 01:26 PM
Updated : 4 Oct 2015, 01:26 PM

ঈদের আমেজ শেষ হতে না হতেই, রাজধানীর কর্মজীবি মানুষগুলোর আবার গ্রাম থেকে নগরমুখী ফিরেচলা। গত কয়েকদিনের শান্ত শহরটি যেন আবার তার প্রাণ চঞ্চলতা ফিরে পেতে শুরু করেছে। সবুজ-শ্যামল গ্রামের আবাহনে কিছুটা সময়ের জন্য প্রশান্তির দোলা পেয়ে থাকলেও ফিরতে হচ্ছে ইট-পাথরে ঘেরা যান্ত্রিক নগরীতে। এমনি সময়, শহরের লোকাল সার্ভিসগুলোর অপ্রতুলতা এবং তাদের সিটিং সার্ভিস নামক বাড়তি ভাড়া আদায়ের চিটিং কর্মকান্ডের শিকারে- ভোগান্তিতে নগরবাসী।

সাম্প্রতিক গণ-পরিবহণের ভাড়া বাড়ার বিষয়টিকে পুঁজি করে, কিছু অসাধু চক্র বিআরটিএ এর ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ এর প্রজ্ঞাপন অনুসারে নির্দেশিত ভাড়ার চার্টের- ভাড়ার পরিমাণগুলো নিজেদের মতো করে বাড়িয়ে দিয়ে সীল মোহর ও সহি স্বাক্ষর জাল/নকল করে অসদুপায়ে প্রায় হুবহু আরেকটি ভাড়ার চার্ট বানিয়ে- তা বাসে প্রদর্শন করে প্রতারণার সামিল হয়েছেন, যা ১লা অক্টোবর ২০১৫ থেকে কার্যকর বলে কতিপয় পরিবহণ শ্রমিকদের দাবী।

উপরে সংযুক্ত ছবি দুটি- আজ সকালে অফিসপানে যাওয়ার পথে বলাকা সার্ভিসের একটি গাড়ী থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। প্রথমে লাল কালিতে লেখা ভাড়ার তালিকাটি দেখে বেশ স্তম্ভিত হই!! বাসের কন্ডাক্টরকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন, "ভাড়া কি আমরা বাড়াইছি, সামনে টাঙ্গানো আছে দেখেন।" কৌতুহল বশতঃ মূলত বাসের পেছন থেকে সামনে এসে উক্ত টাঙ্গানো চার্টটির ছবি (২য় টি) তুলেছিলাম, কিন্তু এর দুটিতেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে এত দক্ষতার সাথে ভাড়ার পরিমাণের মিল রাখা হয়েছে তাতে জনসাধারণের বোঝার কোন কায়দা আছে বলে মনে হয়না।

এবার আসুন নিচে সংযুক্ত আরেকটি ভাড়ার চার্টের প্রসঙ্গে, যা অদ্যই বলাকা সার্ভিসের অন্য আরেকটি গাড়ী থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। সম্মানিত পাঠক, আপনারা একটু ছবি দুটি লক্ষ্য করলেই পরিষ্কার হবেন- ব্যাপারটি আসলে কি ঘটেছে?

তবে না, পাঠক- এত প্রমাণসহ আলোচনার পরও আপনি একটি ব্যাপারের এখনো সত্যতা খুঁজে পাননি বটে যে, কোন চার্টটি আসল বা কোন চার্টটি নকল? শুধু এইটুকু বুঝতে পেরেছেন যে, বিআরটিএ'র বরাত দিয়ে করা দুটি চার্টের ভাড়ার হার এক নয় বা ভিন্ন রকম। আপনাদের মতো আমিও সত্যিই এরকম সন্দেহের চিতায় আগুন জ্বালাতে জ্বালাতে বিআরটিএ'র ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিচের চিত্রটি দেখে এতক্ষণে ক্ষান্ত হয়েছি।

সম্মানিত পাঠক, ক্ষান্ত আমি হয়েছি বটে- শান্ত যে পারিনি হতে। তাই, এ ধরণের প্রতারণার হাত হতে নগরবাসীকে রক্ষা করতে সরকারী নজরদারীর জরুরী প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।