ই-কমার্সে ক্রেতাকে সন্তুষ্ট করার ১০টি কিলার টিপস!

রাসেল আহমেদ রাজু
Published : 21 Oct 2016, 07:45 PM
Updated : 21 Oct 2016, 07:45 PM

বড় বড় কোম্পানি গুলো এসে আমাদের ই-কমার্সের বাজার দখল করে নিবে ! এই আশঙ্কাতে আছেন বেশ কিছু নবীন উদ্যোক্তা । কিন্তু মজার ব্যাপার হল, সব কিছু যদি ইনভেস্ট দিয়ে হতো তাহলে আমাদের মুস্তাফিজ-সাকিবদের মত ডজন ডজন তারকার জন্ম দিতো ভারত । ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপ নিয়ে যেতো আমেরিকা ।

বিপণনের নিজস্ব কৌশল, অভিনব ব্রান্ডিং পদ্ধতি , গ্রাহকদের চাহিদার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন, ভাল কোয়ালিটির পণ্য সরবরাহ করতে পারলে আপনার ব্যাবসা কেউ নিতে পারবেনা । মনে রাখবেন , বড় বড় সুপার শপ গুলো আসার পর ও কিন্তু গলির ব্যাবসায়ীদের ব্যাবসা বন্ধ হয়ে যায়নি । তো আসুন দেখি কিভাবে ক্রেতার মন জয় করবেন।
১.রিয়েল টাইম রেসপন্স :
কোন ক্রেতা যখন আপনার সাইটে , ফেসবুক পেজে অথবা ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে চাইবে তখন আপনি যদি তৎক্ষণাৎ রেসপন্স করতে পারেন তাহলে ক্রেতার প্রাথমিক সন্তুষ্টি আপনি পেয়ে যাবেন ।
২. অমায়িক ব্যাবহার :
শত শত সাইট থাকতে একজন ক্রেতা কেন আপনার সাইটে আসবে? উত্তর তা হল আপনার আন্তরিক ব্যাবহার ও সুন্দর বাচন ভঙ্গি । যা আপনার ক্রেতার আস্থা অর্জনে অনেক কাজে দিবে । ক্রেতা কে আগ্রহে ভরে জিজ্ঞেস করুন, "স্যার, আপনাকে কিভাবে হেল্প করতে পারি?" প্রয়োজন মত তথ্য সরবরাহ করুন ।
৩.সরি বলতে শিখুন :
কোন কারনে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দিতে অপারগ হলে অথবা কোন ভুল বুঝাবুঝি হলে ক্রেতাকে " সরি" বলতে দ্বিধা করবেন না । আপনার এই "সরি' বলাটা আপনাকে ছোট করবে না , বরং আপনার প্রতি ক্রেতার বিশ্বাস আর ও বাড়াবে ।
৪. ভাল পণ্য সরবরাহ করুন ঃ 
এ ব্যাপারে একটি কথা প্রচলিত আছে যে , অনলাইন শপ গুলো নিম্ন মানের পণ্য সেল করে !
কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও এটা একেবারে মিথ্যাও নয় । সস্তা আর নিম্নমানের পণ্য বাজারজাত করে আপনি সাময়িক প্রফিট করতে পারলে ও এটা পরবর্তীতে আপনার বিজনেসের স্থায়ী ক্ষতি করে দিবে । দাম একটু বেশি নিলে ও অরিজিনাল পণ্য বিক্রয় করুন । আর যদি কোন পণ্য ক্লোন বিক্রয় করতে হয়ও সেটা আপনার গ্রাহক কে বলে দিন । আখেরে লাভ কিন্তু আপনার ই…
৫.কাস্টমার রিভিউ :
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । আপনার ক্রেতাদের মতামত আপনার বিজনেসের উন্নতিকল্পে দারুন ভুমিকা রাখতে পারে । সার্ভিস বা প্রোডাক্ট কেমন হয়েছে ? ভাল লেগেছে কিনা ? এগুলো জানতে চাইলে কাস্টমার সন্তুষ্ট হন ।
৬.পরামর্শ চাওয়া :
ক্রেতার কাছে পরামর্শ চাইবেন । জানতে চাইবেন, স্যার ,
-স্যার,আমরা কিভাবে আমাদের সেবাকে আর ও মানসম্মত করতে পারি ?
– ঠিক কোন ধরনের পদক্ষেপ নিলে আপনার আর ও সুবিধা হবে ?
-কেমন ধরনের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস চান ? ইত্যাদি জানার আগ্রহ দেখান। এতে আপনি অনেক গুলো উপকার পাবেন। যেমন, কাস্টমার নিজে বেশ অনার ফিল করবেন । আপনার সাইটের প্রতি একটা টান অনুভব করবেন । মোদ্দাকথা ক্রেতাকে আপনার সাইটের প্রেমে ফেলতে হবে !
৭. ডেলিভারি ফ্রি তে দেওয়া :
ডেলিভারি ফ্রি তে দিলে তা প্রোডাক্ট সেলিং এর ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেয় । আপনার প্রোডাক্ট এর দামের সঙ্গে ডেলিভারি চার্জ যদি আলাদা ভাবে ধরেন তা দেখতে একটু দৃষ্টিকটু দেখায় । এজন্য মূল পণ্যের দামের সঙ্গে ডেলিভারি চার্জ এড করে পুরো দাম একসাথে শো করেন । আলাদা ভাবে দেওয়ার দরকার নেই । এক্ষেত্রে ডেলিভারি চার্জের খরচ ধরেই পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করুন ।
৮.সৎ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করুন :
আপনার সার্ভিস বা পণ্যের মান ও মূল্য সম্পর্কে নিজেকে সৎ হিসেবে প্রমান করুন। সহজ কথায় কথা আর কাজের সঙ্গে মিল রাখুন । দেখবেন শুধু এই সততাই আপনাকে হিট করে দিবে ! তখন রেফারেন্স থেকেই প্রচুর অর্ডার পাবেন ।
৯. পণ্য রিটার্ন দেওয়ার বাবস্থা রাখুন :
যদি সম্ভব হয় তাহলে পণ্য রিটার্ন দেওয়ার ব্যবস্থা রাখুন । এ ব্যবস্থা আপনার পণ্য ক্রয় করার ক্ষেত্রে ক্রেতাকে বাড়তি নিরাপত্তা বোধ প্রদান করবে । ক্রেতা নিশ্চিত থাকবে যে , তার টাকা অন্তত মার যাবে না ।
১০.শো রুমের ব্যবস্থা রাখুন :
সম্ভব হলে একটি ছোট আকারের হলে ও শো রুমের ব্যবস্থা রাখুন । আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি , শো রুম থাকলে ক্রেতার উৎসাহ কয়েক গুন বেড়ে যায় । এমনকি আপনি তখন পাইকারি বিজনেস ও করতে পারবেন। নিজের প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকে লিখলাম । আশা করি উপকৃত হবেন । সময় পেলে একদিন ব্রান্ডিং নিয়ে কিছু লিখবো ইনশাল্লাহ ।অগ্রিম ঈদ মোবারক ।
আল্লাহ হাফেজ ।