কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাল্যবিবাহের বিপক্ষে শপথ

রিফাত কান্তি সেন
Published : 10 March 2017, 06:13 AM
Updated : 10 March 2017, 06:13 AM

বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,অর্ধেক তার নর!
ভেঙে ফেল দ্বার, ভেঙে ফেলো তালা নারীকে ঘরে আটকে রাখবে এ কেমন বাহানা!'

জাতীয় কবি নজরুল যেমন নারীদের জয়গান গেয়েছেন, তেমনি রোকেয়া সাখাওয়াত, নূরজাহান বেগমরা ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছিলেন বদ্ধপরিকর। নারী এখন আর ঘরের বোঝা নয়। নারী সর্বদা এগিয়ে চলেছে। রোকেয়া বিদ্যা শিক্ষার্জনে যেমন বৈরি প্রতিকূলতা পার হয়ে পৌঁছেছে সাফল্যের চূড়ায়। যেমনি বেগম পত্রিকার সম্পাদিকা নূরজাহান বেগম তার লেখনির মাধ্যমে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। তেমনি দেশের সমস্ত নারী এক হয়ে নারীকে তার সম্মান, অধিকার আদায়ে নিজেরাই স্লোগান দিতে শুরু করেছেন।

আজ ৮ই মার্চ, বিশ্ব নারী দিবস। সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালন করছে জাতি। দিবসটি উপলক্ষে চাঁদপুর জেলার, ফরিদগঞ্জ থানার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাত্রীরা শপথ বাক্য পাঠ করেন। শপথ করে বাল্য বিবাহ মুক্ত সমাজ গঠনে সকলকে দৃঢ় প্রত্যয়ী হওয়ার অঙ্গিকার করেন।

শপথে বাল্য বিবাহ মুক্ত চাঁদপুর গঠনে সকল শিক্ষার্থী অঙ্গিকার বদ্ধ হয়। নারীকে ঘরের বোঝা নয় ঘরের আলো ভেবে নারীর সম্মান বাড়িয়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীরা বাল্য বিবাহের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহব্বান জানান।


কথা হয় উক্ত স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে, নবম শ্রেণি পড়ুয়া রোকসানা বলে, সারাদেশে নারীদের সাফল্যের গল্প শুনে তার বড় হওয়ার স্বাদ জেগেছে।
সে বলে, আমি অনেক অনেক পড়ালেখা শিখতে চাই। বাল্যবিবাহের স্বীকার হতে চাই না!  বেগম রোকেয়া, বেগম পত্রিকার সম্পাদিকা নূরজাহান বেগমদের মত বলিষ্ট প্রতিবাদী কন্ঠস্বর নারী হতে চায় সে।

উক্ত স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী হাওয়া বলেন, আমরা বাল্যবিবাহের বিপক্ষে। বাল্যবিবাহ সমাজে একটি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অচিরেই বাল্যবিবাহ মুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের তৎপরতা অসীম কাজে দিবে। আমরা শপথ নিয়েছি নিজেও বাল্যবিবাহের শিকার হবো না। অন্য কাউকেও বাল্য বিবাহের শিকার হতে দেবো না।

নারীকে সম্মান জানাতে গিয়ে ৭২ এ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে বঙ্গবন্ধু একাত্তর এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক নির্মমভাবে ধর্ষিত নারীদের বাবার নামের পাশে যেনো লিখে দেয় তার নাম এবং বাড়ির ঠিকানা ধানমন্ডি ৩২ দিয়ে দেয়া হয় বলে বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তোলেন।

দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন নারী, যখন সংসদ স্পিকার নারী, যখন বিরোধীদলীয় নেত্রীও নারী,  যখন নারীর পদচারনা বিশ্ব কাতারে প্রশংসার দাবিদার ঠিক তখন সামান্য লোভ আর একটি ভুল সিদ্ধান্তের জন্য বাল্যবিবাহের অভিশাপে যেনো আর কোন নারী অভিশপ্ত না হয় এটাই কামনা।