মির্জা আব্বাস এবং তাবিথ আউয়ালকে না বলুন

সাইদ
Published : 26 April 2015, 05:53 PM
Updated : 26 April 2015, 05:53 PM

মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ  ওরফে মির্জা আব্বাস

মির্জা আব্বাস, ১৯৯১ সালের ১৯ মে থেকে শুরু করে ১৯৯৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তৎকালীন এই প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত (নির্বাচন ছাড়াই ) অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ছিলেন।  মেয়র মনোনীত হয়ে কয়েক বছরেরমধ্যেই মিস্টার ২০% নামে পরিচিতি হয়ে ওঠেন সবার কাছে। আর ওই ২০%এর যাদুতেই নিতান্ত সাধারণ মানুষ থেকে বনে যান কোটিপতিতে। ঠিকাদারির কমিশনের  ২০ % টাকায় রাতারাতি হয়ে ওঠেন অগাধ সম্পদের মালিক । তার যতো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, কাঁচা টাকা, ব্যাংক ব্যালেন্স অধিকাংশেরই মালিক হন তিনি ঢাকার মেয়র হওয়ার পর এমনকি একটি ব্যাংকের মালিকানাও বনে যান তিনি সেই সময়। সম্পদের আমলনামা অনুযায়ী বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির এক শ' কোটি টাকার সম্পদের মালিক এবং অন্যান্য মেয়র প্রার্থী চেয়ে বার্ষিক আয়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়কমির্জা আব্বাস একজন চরম দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি এবং তার এলাকায় তিনি একজন ভূমিদস্যু হিসাবে সুপরিচিত (?)। খিলগাঁও সহ আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা, অবৈধ সম্পত্তি, জমি-দোকান পাট এবং সন্ত্রাস সব কিছুই আব্বাসের দখলে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ প্লট বরাদ্দের  এবং  পাতানো দরপত্রের মাধ্যমে বাড়ি বিক্রির হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা আর আছে ফৌজদারি অপরাধের দায়ে ৩৭ টি মামলা।   এছাড়া মীর্জা আব্বাস তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান  ঢাকা টেলিকম এর মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ার সঙ্গেও জরিত ছিলো। সিটি নির্বাচনে এই প্রার্থীর নামে দায়দেনা আছে ৭৫ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ৯০৩ টাকা।
সিটি নির্বাচনে স্বামীর হয়ে, বিএনপির এই নেতার স্ত্রী হিজাব মাথায় দিয়ে আদর্শবান মুসলমান নারীর মুখোশ পড়ে ভোটারদের মন জয়ের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এমন চিত্রই আমরা টিভির কল্যাণে প্রত্যেক দিনই দেখতে পাচ্ছি । অথচ এই মহিলাকে অন্য সময় বা কোন অনুষ্ঠানে বোরকা দূরে থাক হিজাবও পড়তেও দেখেনি কেও। এলাকার মানুষের কাছে তিনি একজন অতি আধুনিকা ও পোশাকে- আশাকে খোলামেলা মহিলা হিসাবেই বেশী পরিচিত। অথচ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুজি করে হিজাব মাথায় দিয়ে, ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন নিলজ্জ ভাবে। ক্ষমতার জন্য, রাজনীতির জন্য পবিত্র ধর্মকে অপমান করা বোধহয় এদের দ্বারাই সম্ভব।

তাবিথ আউয়াল

তাবিথ আউয়াল, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর বড় ছেলে। ২০০১ সালে আবদুল আউয়াল মিন্টু আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ওই সময় থেকে তাবিথ, বিএনপিকে সমর্থন করলেও মূলত  ২০১৩ সাল থেকে দলের কর্মী হিসাবে পরিচিত হন ।

তাবিথ আউয়াল মূলত তার বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর হয়েই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। সিটি নির্বাচনের কোনোটিতেই জামায়াত মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ না পেয়ে না দলের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতার মেয়ের জামাই (তাবিথের শ্বশুর, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতপন্থী নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইস্কান্দার আলী ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসীর দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মীর কাশেম আলীর পত্রিকা দৈনিক নয়া দিগন্ত ও দিগন্ত টেলিভিশনের পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান) যেন বিএনপি ও ২০ দলের মনোনয়ন পায় তার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছিল জামাত। ফলে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামাত-বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে দলের কর্মী তাবিথকেই মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। তাবিথ বড় কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়।তারসকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আসল মালিক তার বাবা। ১৭ টি কোম্পানির মধ্যে ১৪ টির মালিক তার বাবা, এবং তার বেশীর ভাগই কাগুজে কোম্পানী হিসাবে পরিচিত। আউয়াল অ্যান্ড কোং দের প্রদর্শিত সম্পদের চেয়ে ব্যাংক ঋণ কয়েকগুণ বেশি ।আব্দুল আউয়াল মিন্টুরই নামে রয়েছে হাফ ডজনেরও বেশি বিস্ফোরক আইনে মামলা।

আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার (তাদের ভাষায়) কথা বলে, গত তিন মাস পেট্রোল বোমায় যারা প্রায় ১৮০ জন মানুষ হত্যা করেছে, যাদের তথাকথিত আন্দোলনে  শত শত সংসার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। যাদের পেট্রোল বোমায় আহত অনেক মানুষ এখনোও যন্ত্রণায় ছটপট করছে। যাদের হাত মানুষ হত্যার রক্তে রঞ্জিত। তাদেরই একজন অংশীদার তাবিথ, তাবিথের পিতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ওরফে মির্জা আব্বাস ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।

তাই আমাদের সকলের উচিৎ আসন্ন সিটি নির্বাচনে মির্জা আব্বাস বা তাবিথের মতো স্বাধীনতা বিরোধী, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভোট না দিয়ে  সৎ, আদর্শবান, মানবিক ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষকে ভোট দিয়ে ঢাকার মেয়র নিবাচিত করা। বিনপির সব প্রার্থীই জামাত আর হেফাজতের সমর্থনকারী।  গতদুমাসে এরাই পেট্রোল বোমায় শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। তাই দয়া করে এদেরকে "না" বলুন।  পেট্রল বোমায় যারা ঢাকাকে রক্তাক্ত করেছে তাদের কেও মেয়র হোক আমরা চাই না।