অনেক পাশ, ব্যাপক ফেল, শিক্ষাবাণিজ্যে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ

শহীদুল্লাহ শরীফ
Published : 26 Oct 2014, 04:24 PM
Updated : 26 Oct 2014, 04:24 PM

"খবরে প্রকাশ, মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছে মাত্র ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী।" এতো ফেল বেশি করায় লাভ হলো কার? আর কার, প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর।

মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলেও ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির। পত্রিকায় দেওয়া তথ্য মতে, সম্ভাবনার কথা হল, প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তারা। মেডিক্যালে পড়তে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে উচ্চ হারে টাকা নিতে পারবে ওই সব প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ। কারণ, সরকার একাধিকবার চেষ্টা করেও প্রাইভেট বা বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের জন্য সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করতে পারেনি। এবারও ভর্তির জন্য কোনো নির্দেশনা নেই সরকারের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত যে কমিটি রয়েছে, তারা এখনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করেনি। ফলে পোয়াবারো। পত্রিকা পড়ে জানা যায়, এই বিপুল অঙ্কের ভর্তি-বাণিজ্য রোধে স্বাস্থ্য দফতরের তেমন কিছু করণীয় নেই বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মহাপরিচালক।

আসলে এদেশে কারো কিছুই করার নেই। না-না, নাকি করার ইচ্ছে নেই। প্রশ্ন জাগে, করে কী লাভ, না করেই লাভটা বেশি। সবাই তো বদলে যাওয়া সময়ে/যুগে বেশি লাভের প্রতি ছুটবে, ঝুঁকবে এটাই স্বাভাবিক। হচ্ছেও তাই। ঘটছেও তাই।

একটি ইতিবাচক কথা প্রায়ই শুনি, প্রচুর মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় দেশের জন্য প্রচুর সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। দেশের বিপুল ছেলেমেয়েরা যারা পাবলিক মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে তারা আর বিদেশে পড়তে যেতে হয় না। বিদেশে টাকাগুলিও আর যায় না। ভালো কথা দেশের টাকা দেশে থাকবে। ব্যবসাটি ভালোই প্রশংসিত হয়েছে। ভালোই জমিয়া উঠিয়াছে। প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ বসায়ীরা উৎসাহী হচ্ছেন। ফলে বাড়ছে এসব ব্যবসায়িক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু একদল সুবিধাবাদী যারা ইতিমধ্যে গড়ে উছঠচে, তাদের বলি, এসব মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে যখন প্রশ্ন ওঠে তখনই যত ভয় জেগে উঠে আমাদের মনে। অভিজ্ঞ ডাক্তার মহোদয়দের তথা দুর্মুখদের মিডিয়াতে যখন বলতে শুনি (শুনেছি), "এসব প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে বের হয়ে অধিকাংশ ডাক্তার ডাক্তারের নামে প্যাশন্টকিলার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তখন ভয়ে সিটিয়ে উঠি।
রোগীরা সাবধান। রোগ ভাই, দাদা ডাকি, বাপ ডাকি, মাফ করে দাও। এসো না আমার বাড়ি, আমার দেহে, শেষে কোন প্রাইভেটে পড়া ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রাণে যাই মারা, অকালে খাই ধরা।