সংস্কৃতির বিস্তার প্রক্রিয়ায় খ্রিষ্ট্রিয় নববর্ষ

মোঃ আব্দুর রাজ্জাক
Published : 31 Dec 2016, 10:27 AM
Updated : 31 Dec 2016, 10:27 AM

ইংরেজি নববর্ষ সমাগত হলেই বাঙালি সমাজে কিছুটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ নববর্ষ পালন করা কি আমাদের চিরায়ত সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? 'থার্টিফার্স্ট নাইট' নামের যে সান্ধ্যক্রিয়া— এটা কি আমাদের সমাজে মানায়? আমাদের মেয়েদের এমনিই তো রাতের বেলা বাইরে যেতে মানা। তার উপর একটা বিজাতীয় বর্ষবরণ পালনের উদ্দেশ্যে তারা যদি টিএসসি-ফিএসসিতে নিশিজাগে সেটা কি তাদের জন্য শোভনীয়?

বলতে কি ইংরেজি নববর্ষ বরণে আমার দিলে তেমন কোন টান নেই। ২০০০ সাল মানে নতুন শতাব্দী বরণের সময় ছিলাম সিরাজগঞ্জে। সেখানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সালকে বরণের জন্য নানাবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। জেলার একটি দফতরের প্রধান হওয়ায় আমিও সেই আয়জকদের অন্যতম ছিলাম। কিন্তু ঐ রাতটি বরণের জন্য আমার মনে তেমন কোন আবেগের সঞ্চার হয়নি। সরকারি কর্তব্য পালনের তাগিতেই কেবল আমি ঐসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলাম, মনের টানে নয়।

নোয়াখালীতে ২০১০ সালকে বরণের জন্য পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমাডেন্ট ডিআইজি শহীদ স্যার জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। পরিবার নিয়ে উপস্থিত ছিলাম সেই অনুষ্ঠানে। সেখানে হয়েছিল বিস্তর আতসবাজি। কিন্তু সিনিয়র অফিসারের ইচ্ছাই আদেশের অনুরূপ বলে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। উপভোগ করা যাকে বলে সেটা করিনি।

কিন্তু এ সাল বরণের ক্ষেত্রে আমার মনের টান থাক বা না থাক, ইংরেজি নববর্ষ আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই জড়িয়ে আছে। আমাদের সালতামামির ক্ষেত্র বিশেষ ছাড়া সব কিছুই ইংরেজি বর্ষেই গণনা করা হয়। আমাদের স্কুলের পরীক্ষা থেকে শুরু করে জীবনের পরীক্ষার তারিখও আসে ইংরেজি কালপঞ্জি থেকেই। ইংরেজি ভাষার মতো তাই ইংরেজি সনও এখন সার্বজনীনতা পেয়েছে।

আমরা যখন বিশ্বজনীনতার কথা বলি, তখন ইংরেজদের চালু করা ভাষা থেকে শুরু করে তাদের প্রবর্তন করা বহুবিধ আচার আমাদের সামনে এসে উপস্থিত হয়। কিন্তু ইংরেজদের দ্বারা আমাদের সমাজে অনুপ্রবেশকৃত বলেই এগুলো যে আগাগোড়াই ইংরেজি সংস্কৃতি সেটা বলা উচিৎ নয়। কারণ আজ ইংরেজি বর্ষ বলে আমরা যেটা জানি সেটা কিন্তু অগাস্টাস সিজার কর্তৃক চালু করা খ্রিষ্টিয় সন। আর সিজার ছিলেন একজন রোমান।

অনেক লেখক-বুদ্ধিজীবীই ইংরেজি নববর্ষ বরণের বিরোধীতা করতে গিয়ে বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে বাহুল্য কিছু প্রশ্ন তোলেন যাদের অনেকগুলিরই ভিত্তি নেই। অনেকে বলার চেষ্টা করেন, বাঙালি সংস্কৃতি হল মোহাম্মদীয় ইসলামী সংস্কৃতি। তারা দাবী করেন যে আমরা হলাম ভারতীয় মুসলমান। আমাদের সংস্কৃতির মূল রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। তাই আমাদের আসল নববর্ষ হচ্ছে পহেলা মুহররম, আমাদের ক্যালেন্ডার হল হিজিরি ক্যালেন্ডার। আর দুর্ভাগ্যক্রমে মুসলমান হয়েও যখন বাঙালির কোকে জন্মেছি আর ঐ পাক মনোয়ারায় হিজরত করারও সুযোগ নেই, তাই পহেলা বৈশাখখান কোন প্রকারে ইসলামী ঢঙ্গে পালন করা যেতে পারে। কিন্তু খ্রিস্টীয় সনের অনুষ্ঠানাদি একেবারেই পরিত্যাজ্য।

এসব মতের মানুষদের প্রতি আমার বিরক্তিকর অশ্রদ্ধা নেই। মতামতের জন্য তাদের আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু একই সাথে তাদের এ মত বাংলাদেশের সংস্কৃতির ক্ষেত্রে মূলহীন বলে করুণাও করি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্বেও কতিপয় বুদ্ধিজীবী  বাংলাকে হিন্দু ও মুসলমান দুই ভাগ করে দুই ধর্মের মানুষের জন্য ভিন্নধর্মী দুটো বাংলা সাহিত্য সৃষ্টির দিকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তাই তারা পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলা থেকে রবীন্দ্রনাথকে বিতাড়িত করতে চেয়েছিলেন, পূর্ব বাংলার ভাষাকে মুসলমানী ভাষায় রূপান্তরিত করার বালখিল্যপনায় মেতেছিলেন। কিন্তু আইয়ূবী মগজের কোন সার অনেক চেষ্টা করেও বাঙালির জমিনে কোন ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হয়েছিল। বাংলাকে ইসলামী ভাষা বানানোর প্রচেষ্টা সফল না হয়ে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় বাংলা আরো বেশি দেশি বাংলায় পরিণত হয়েছিল। ঐসময় আমরা অনেক প্রথিতযশা কবি সাহিত্যিকদের পেয়েছিলাম যারা পরবর্তী সময়ে আমাদের স্বাধীনতার আন্দোলনকে বেগবান করতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে ঐ তথাকথিত ইসলামী বাংলা সাহিত্য সৃষ্টির উন্মাদনার সাথে পাক বাহিনীর অনুচরগণ আমাদের সেই দেসজ সংস্কৃতির সন্তানদের আমাদের স্বাধীনতার প্রাক্কালে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।

একটা কথা প্রায় শুনি যে আমাদের সংস্কৃতি বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনে বিপন্ন হতে চলেছে। তাই একে রক্ষা করতে হবে। তবে এখানে বিজাতীয় বলতে দূরবর্তী ইংরেজিকে যতটুকু বুঝি তার চেয়েও অনেক বেশি প্রতিবেশি হিন্দিকে বুঝি সেটা কাউকে বোঝাতে হবে না। তাই আমাদের বাংলায় যেমন পশ্চিমাদের প্রভাব আছে, তেমনি হাল আমলের হিন্দির প্রভাবও যে থাকবে – এটাকে অস্বীকার করব কিভাবে?

যাহোক, কোন সংস্কৃতিকেই বিশুদ্ধ বলার কোন উপায় আগেও ছিল না, এখনও নেই। সংস্কৃতির বিস্তারের যে অনুমান-প্রকল্পক বা হাইপোথেসিস আছে তাতে বলা হয়েছে এক স্থানের সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডগুলো যদি অন্য স্থানে গিয়ে শেকড় গাড়ার সুযোগ পায় এবং সেই স্থানের আলো-বাতাস মাটি-পানি যদি সংস্কৃতির নতুন কোন উপাদানকে টিকে থাকার অনুমতি দেয়, আনুকুল্য দেয়, তবে সংস্কৃতির সেই উপাদানটি এক সময় সেখানে এমনভাবে আসন গেড়ে বসবে যে পরবর্তী প্রজন্ম তাকে নিজ সংস্কৃতির অবিচেছদ্য অঙ্গ হিসেবেই মনে করবে।

মুহররম মক্কা-মদিনায় সাড়ম্বরে পালন করার কোন ধর্মীয় আচার নয়। এটা ইরানি শাসকদের শীয়া মতের আতিসয্য। ভারতের মুসলিম শাসকদের মধ্যে শীয়া মতালম্বীই শুধু নয়, ইরানিদের কেউ কখনও ছিল বলে ইতিহাসে প্রমাণ নেই।

সিন্দু বিজয়ী মোহাম্মদ বিন কাসিম ছিলেন খাস আরবী। বাংলা দখলকারী ইখতিয়ার উদ্দীন ছিলেন খাস তুর্কী। আর দিল্লির মোঘলরা ছিলেন চেঙ্গিস খাঁর দূর সম্পর্কিয় আত্মীয়। তারা সরকারি কাজে ইরানি ভাষা ব্যবহার করতেন বলে তারা কিন্তু পারস্যের কেউ ছিলেন না। কিন্তু তাদেরই রাজত্বে পারস্যের শিয়াদের মুহররম উৎসব এমনভাবে ভারত বর্ষে শেকড় গেড়েছে যে এই আধুনিক বাংলাদেশের ঢাকা শহরেও মুহররমের তাজিয়া মিছিলকে সামলাতে কয়েক হাজার পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের প্রয়োজন পড়ে।

একই ভাবে মিলাদ পড়ানো কিংবা মাজারকে ঘিরে যে ওরস-উৎসব হয় তাদেরও কোন ইসলামী ভিত্তি নেই। কিন্তু আমাদের মাটিতে এগুলো এমনভাবে স্থান নিয়েছে কিংবা প্রবর্তিত হয়েছে যে এসব অনুষ্ঠানকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ধর্মীয় অনুভূতির বাস্তব প্রয়োগ বলেই মনে হয়। আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ থেকে শুরু করে গোষ্ঠীগত এমনকি সরকারি উদ্যোগসমূহ মিলাদের মাধ্যমে সূত্রপাত লাভ করে। অনৈসলামিক বলে এসব অনুষ্ঠানাদি বন্ধ করা তো দূরের কথা এসবের বিরুদ্ধে দুচার কথা লিখাও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। এমন আরো অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যায় যেগুলোর মাধ্যমে ধর্মীয় আচার সামাজিক ও স্থানীয় আচারের বিকল্প হয়ে পড়েছে কিংবা স্রেফ সামাজিক আচরণ ধর্মীয় আচারে পর্যবসিত হয়েছে।

কেবল ইংরেজগণই নন ইউরোপীয় শক্তি তাদের উপনিবেশ নিয়ে যেসব স্থানে গিয়েছেন, সেসব স্থানেই তাদের ভাষা-সাহিত্য আচার-অনুষ্ঠান চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ইউরোপীয়দের অনুপ্রবেশের পূর্বেই যেসব জাতি ভাষা-সাহিত্য, কৃষ্টি-কালচারে উন্নত, তথা ইউরোপীয় মানের কাছাকাছি ছিল তাদের উপর হয়তো ইউরোপীয়গণ প্রভাব বিস্তার করেছেন কিন্তু সেই সব গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে কখনও নষ্ট বা বিলুপ্ত করতে সমর্থ হয়নি।

অধিকাংশ আফ্রিকান কলোনি তাদের প্রভূদের ভাষা গ্রহণ করে নিজেদের ভাষাকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিয়েছেন। কিন্তু এরই মাঝে বেশ কিছু জাতি তাদের নিজেদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রেখেছে। এই টিকিয়ে রাখার কাজটি যে তাদের গায়ের জোরে বা কেবল মনের জোরেই হয়েছে তা নয়। এর আসল কারণ হল, তাদের নিজস্ব ভাষা-সাহিত্য ও সংস্কৃতির মধ্যে এমন সব জীবনী শক্তি নিহিত ছিল যারা নিজগুণেই বিদেশিদের উদরস্থ হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করেছে।

এমনিভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের নানান ভাষার ভীড়ে ইংরেজি স্থান করে নিতে পারলেও এ অঞ্চলের কোন দেশ বা জাতীর কাছেই ইংরেজি এখনও মাতৃভাষা তো দূরের কথা প্রথম ভাষার মর্যাদাও পায়নি। কিন্তু তাই বলে ইংরেজি ভাষা-সংস্কৃতির মধ্যে যে নিজস্ব জীবনী শক্তি আছে তার প্রভাব থেকে আমরা কিন্তু মুক্ত হতে পারিনি। বরং আধুনিককালে আমাদের উপলব্ধি ঘটেছে যে এই ইংরেজি প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়াটা আধুনিকতা থেকে মুক্ত হওয়ারই সামিল। আমাদের মেধার মূল্যায়ন এখনও ইংরেজিতেই হয়। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের নিভৃত পল্লীতেও এখনও নিয়মিত গজিয়ে উঠছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। অতি যত্নের সাথে আমরা আমাদের ছোট ছোট সোনামনিদের ইংরেজি আদব কায়দা শেখানোর ব্রত চালিয়ে যাচ্ছি।

আমাদের অফিস-আদালত আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এর বিকাশ ঘটেছিল ইংরেজ আমলে। আমাদের অফিসের জন্য যেমন নতুন ভাষা গ্রহণ করেছি, তেমনি এর জন্য নতুন পোশাকও গ্রহণ করেছি যা ইংরেজদের পোশাকই বটে। আমার জানা মতে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি কোন অফিসেই প্যান্ট-শার্ট না পরে কার্য নির্বাহের কোন সুযোগ নেই। পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে অনেক সময় অফ-আওয়ারে আমরা অফিসে যাই বটে, কিন্তু অফিস চলাকালীন এই পোশাক অন্যান্য সহকর্মী বা অধঃস্তনদের মনে বস সম্পর্কে এই ধারণাই দিবে যে হয়তো তিনি অনেকটাই পাগলামীতে ভুগছেন।

এখন আমরা যদি ইংরেজদের দেয়া প্যান্ট-শার্ট, কোর্ট-টাইকে বিজাতীয় বলে পরিত্যাগ না করি, তবে তাদের চালু করা পঞ্জিকার নববর্ষ পালনকে এতটা উপেক্ষা করব কেন? বেলেল্লাপনার কথা যদি বলেই থাকি, কেবল কি থার্টিফাস্ট নাইটেই বেলেল্লাপনা হয়, অন্য দিন/রাত কিংবা অন্য পার্বণে কি কিছুই হয় না?

প্রত্যেক সমাজেই স্টাটাসের স্তর আছে। সমাজ নিজের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই স্তরীভূত হতে থাকে। আমাদের দেশের পুরানা ঢাকার সাথে নতুন ঢাকার স্তরে পার্থক্য আছে। সরকারি কোয়ার্টারগুলোর সাথে বেসরকারি আবাসিক এলাকার অনেক পার্থক্য আছে। তেমনি গুলশান-বনানী-বারিধারার সাথে রমনা, মোহাম্মদপুর বা আজিমপুরের বাসিন্দাদের আচরণ ও ত্যাগ-ভোগের পার্থক্য আছে।

প্রত্যেক নববর্ষের খানাপিনায় উৎসবে অনুষ্ঠানে নানাবিধ পার্থক্য থাকে। বাংলা নববর্ষ যেমন পান্তা ইলিশের ব্রান্ড পেয়েছে, তেমনি ইংরেজি নববর্ষ থার্টিফার্স্ট নাইট মদ বিয়ারের ব্রান্ড পেয়েছে। এই নববর্ষ পালনকারীদের পাণ্ডারা অনুকূল পরিবেশ পেলে দুচার বোতল মদ বা কয়েক ক্যান বিয়ার উদরস্থ করবে। কিন্তু এই মাতালত্বকে আমরা তো মূল সংস্কৃতিতে এখনও স্থান দেইনি। গ্রাম বাংলার কোথাও ইংরেজি নববর্ষ পালনের কোন খবর পাইনা। কিন্তু ঢাকা শহরসহ কয়েকটি বড় শহরে এটার ঘনঘটা চলতে থাকে। আর আমাদের পর্যটন এলাকাগুলোতে ব্যবসায়িক স্বার্থেই এর ঘনঘটা হওয়া বাঞ্ছনীয়।

পরিশেষে বলব, নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি তার নিজস্ব জীবনী শক্তির বলেই টিকে আছে। গ্রহণ-বর্জন যে কোন চলমান সংস্কৃতিরই জাত ধর্ম। নতুনকে গ্রহণ করার আর পুরাতনকে বর্জন করার ক্ষমতা যদি নাই থাকে তবে সেই সংস্কৃতি হয়ে পড়ে অথর্ব, গতিহীন। স্রোতহীন নদী যেমন কালক্রমে মজা ডোবায় পরিণত হয়, স্রোতহীন সাগর যেমন শ্যাওলার দিঘিতে পরিণত হয়, তেমনি গ্রহণে অক্ষম ও বর্জনে অনিচ্ছুক সংস্কৃতিও একদিন নিজেই বর্জনীয় হয়ে পড়ে। বলাবাহুল্য বাঙালি সংস্কৃতির এ গ্রহণ-বর্জনগুণটি পুরোমাত্রায় রয়েছে। তাই ইংরেজি নববর্ষের মতো কোন খ্রিষ্টিয় উৎসব সে নিজের ভিতর স্থান দিবে কি না সেটা সে নিজেই স্থির করে নিবে, আমাদের স্থির করা বাহুল্যমাত্র।

(৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ইউএন হাউজ, জুবা, দক্ষিণ সুদান।)