বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষক

রাশেদুল ইসলাম রাজ
Published : 4 April 2015, 07:18 PM
Updated : 4 April 2015, 07:18 PM

"Education is the backbone of a nation" এই প্রবাদটির সাথেে আমরা ছোটবেলা থেকেই পরিচিত। এ বাক্যটি একবারও পড়েনি এরকম কাওকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা বলেই আমার বিশ্বাস। যে জাতি জ্ঞান বিজ্ঞানে যত এগিয়ে সে জাতি বিশ্বের দরবারে ঠিক ততটাই প্রভাবশালী। বাংলাদেশের স্বাধীণতার ৪৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে ততটা আগাতে পারিনি বলেই আমাদের বুদ্ধিজীবিরা বলে থাকেন্। একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান নির্ভর করে সেদেশের প্রাথমিক শিক্ষার উপর।

একটি প্রবাদ আছে  "Morning shows the day" । কিন্ত বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার সিলেবাস যাই থাকুক না কেন প্রাথমিক শিক্ষকদের মান নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের ইউনিয়নের গ্রামগুলোর তথ্যমতে ১৯৭০ এর দশকে একটি গ্রামে ম্যাট্রিক অথবা আইএ পাশ ব্যক্তির সংখ্যা ১-২ জন ছিল। এখন সেটা ঘরে ঘরে পৌঁছেছে। কিন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। মেয়েদের বেলায় এস এস সি ও ছেলেদের বেলায় ডিগ্রি পাশ। কিন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের জন্য যে পরীক্ষা হয় তা পাশ করার মত মেধা/যোগ্যতা তাদের অনেকেরই থাকেনা। আমার জানামতে গত ৩/৪ বছর আমাদের এলাকার যে কয়জন শিক্ষক হয়েছেন তাদের অধিকাংশই টাকার বিনিময়ে (অফেরতযোগ্য জামানত!!)। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষার ভিত্তিটা গড়ে দেন। কিন্ত তাদের যে যোগ্যতা/নৈতিকতা তা যদি প্রশ্নের মুখে দাঁড়ায় তাহলে তাদের ছাত্রদের কি হবে? প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগ্যতা যেমন বৃদ্ধি করা দরকার ঠিক তেমনি তাদের জীবন যাত্রার মানও বৃদ্ধি করা দরকার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটি সবসময়ই অবহেলিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে ঠিক কত নম্বর সারির মেধাবী সেটা বোধহয় আপনারা সবাই জানেন। ভাল একটা স্বপ্ন দেখার জন্য অবশ্যই ভাল একজন কারিগর আপনার সামনে থাকতে হবে যে কিনা আপনাকে স্বপ্ন দেখা শেখাবে। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমাদের ৯৫% শিক্ষার্থীই স্বপ্ন দেখতেই পারেনা। বর্তমান সময়ের সেরা মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে থাকে। কিন্ত তাদের কেও ই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়না। না হওয়ার কারণটাও সবা্রই জানা। জীবনযাত্রার মান। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো যদি আকর্ষনীয় করা যায় তাহলে অবশ্যেই মেধাবীরা সেখানে যাবে। এবং যোগ্যতার মাপকাঠিও তখন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এই খাতে আমুল পরিবর্তন আনার মাধ্যমে একটি উন্নত জাতি গঠনে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।