আমেরিকার টোপ: প্রেসিডেন্ট আসাদ এবার কি করবে?

সুকান্ত কুমার সাহা
Published : 29 August 2016, 02:18 PM
Updated : 29 August 2016, 02:18 PM

এতক্ষণে আসল কথা জানা গেল। আর তা হল সিরিয়া যদি তার রাসায়নিক অস্ত্রগুলো আমেরিকা অথবা তৃতীয় কোন দেশের হাতে তুলে দেয় তাহলে সে 'আমেরিকা'র দ্বারা আক্রান্ত হবে না। সিরিয়া নিয়ে এত ঘটনার এটাই হচ্ছে আসল কথা। এর মাজেজা হল ইজরাইল ও সৌদি আরবকে এই অস্ত্রের আক্রমণ থেকে যেকোন উপায়ে রক্ষা করা অথবা অস্ত্রগুলো ভুলিয়ে ভালিয়ে হাতিয়ে নিয়ে তারপর আক্রমণ করা।

ইজরাইলের ভয়- যদি সিরিয়ার সেনাবাহিনী বা লেবাননের শিয়া-পন্থি গেরিলা যোদ্ধাদল "হিজবুল্লাহ" এই অস্ত্র হাতে পায় আর তার দেশের উপর এগুলোর একটাও প্রয়োগ করে তাহলেই সব শেষ। এক ঝটকায় প্রচুর মানুষ মারা যাবে। তারপরে আর যতই পাল্টা আক্রমণ করা হোক না কেন, এই ক্ষতি আর পোষাবে না।

অপরদিকে সৌদি আরবের ভয়- সিরিয়ার শিয়া-পন্থী সরকার যদি ইরানের সাথে মিলে বা নিজ থেকেই তার উপর এই অস্ত্র ব্যবহার করে তাহলে তারও দফারফা হবে। সৌদি আরব এটা ভাল করেই জানে- যদি যুদ্ধ একবার শুরু হয়, তাহলে সিরিয়া কখনোই আমেরিকার একজন সৈন্যেরও নাগাল পাবে না, কারণ তারা থাকবে কমপক্ষে হাজার মাইল দূরে, জাহাজে, নিরাপদ বেজে বা কোন দ্বিপে। সেখানে সিরিয়ার বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র পৌঁছানোর আগেই তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। তাই সিরিয়া আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে সে পাল্টা আক্রমণ আমেরিকাকে না করে করবে সৌদি আরবকে কারণ নাগালের মধ্যে সে তাকেই পাবে। সেক্ষেত্রে সিরিয়া নিশ্চিতভাবেই প্রথম আক্রমণটা তার সেরা অস্ত্র দিয়েই করতে চাইবে এবং সেটা যদি হয় রাসায়নিক, তাহলে তো এক আঘাতেই রাজা বাদশাদের খেল খতম। জারিজুরি দেখানোর আর সময় কই? ভোগ দখল সব শেষ! তার চেয়ে রিভার্স খেলে এইসব মারাত্মক অস্ত্র হাতানোই ভাল না? পরে যা হোক একটা কিছু করা যাবে! সিরিয়া 'মরুবালির'র মধ্যে আর কত নরমাল বোম মারবে?

অপরদিকে- আমেরিকার উদ্দেশ্য, আসাদকে সরানোর পর সে দেশের ক্ষমতা নিশ্চিত ভাবেই চলে যাবে সুন্নি গেরিলাদের হাতে, যারা মূলত আল কায়দার অনুসারী এবং ইজরাইল ও আমেরিকার জাতশত্রু। তাই তাদের হাতে কোনক্রমেই এই রাসায়নিক অস্ত্র পরতে দেওয়া যাবে না।

কে চায় নিজের পায়ে কুড়াল মারতে? আর আমেরিকা, যে কিনা পৃথিবীর দেশে দেশে কুড়াল মেরে বেড়াচ্ছে, সে কিনা এই ভুল করবে? মানা যায়? অবশ্যই না। তাই সে ফাঁদ পেতেছে, যদি ভুলিয়ে ভালিয়ে এই অস্ত্রগুলো নিজেদের কব্জায় নেওয়া যায় অথবা কোনভাবে যদি রাশিয়ারও হাতে তুলে দেওয়া যায়, তাহলেই কেল্লাফতে। একঢিলে অনেক পাখি মারবে …

এখন দেখা যাক, প্রেসিডেন্ট আসাদ সেই পাতা ফাঁদে পা দেয় কিনা? আর বন্ধু বেশধারীরা বিভীষণের রূপ ধরে কিনা?

০৯/০৯/২০১৩ রাতঃ ০৯.০০

নোটঃ পুরোনো লেখা কিছুটা পরিমার্জন করে পোষ্ট দিলাম। যা ছিল সামু ও বদলে যাও ব্লগে।