বিভিন্ন টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

স্বপন মোল্যা
Published : 13 Nov 2012, 05:09 PM
Updated : 13 Nov 2012, 05:09 PM

সরকারী দল ও বিরোধী দলের মধ্যে যে সকল জাতীয় ইস্যু গুলি নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য তৈরী হয়, যেমন-বর্তমানে সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে "নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা" নিয়ে দুই দলের মধ্যে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান , তারপর বিরোধী দলের লাগাতর" সংসদ বর্জন" অন্যতম। এই দুইটি ইস্যুতেই সরকারী দল ও বিরোধীদলের মধ্যে সমঝোতার কোন সম্ভাবনা নাই। অথচ দুইটি ইস্যুই জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বের দাবী রাখে। আমাদের সরকারী দল ও বিরোধীদল উভয়ের কাছেই এই দুইটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমত সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষিত। দুই দলই তাদের পক্ষে দেশের ১৬ কোটি জনগন আছে বলে দাবী করে। কিন্তু বাস্তবে তাদের দাবীর পক্ষে জনমত কতটুকু আছে তা পরখ করে দেখারও সাহস দেখাতে পারে না তারা । নিজেরা যা ভাল মনে করে তা-ই জনগনের উপর জনগনের মত হিসাবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্ঠা করে । তাদের এই স্বেচ্ছাচারী মনোভাব জনগনের জন্য চরম বিরক্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছে বর্তমানে । এর একটি বিহিত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

তাই উপরোক্ত ধরনের জাতীয় ইস্যু গুলি নিয়ে টিভি চ্যানেল গুলিতে "জনমত আসলে কোনদিকে?" নামক_ জনগনের ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক _ জনমত যাচাইয়ের অনষ্ঠান করা অতীব জরুরী বলে আমি মনে করি । দেশে যেহেতু প্রায় ১০ কোটি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী আছে ,যা আমাদের মোট ভোটার সংখ্যার চেয়েও বেশী , তাই আমার প্রস্তাবিত জনমত যাচাইয়ের এই অনুষ্ঠানটির সফলতার ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী।

এই অনুষ্ঠানটির নিয়মাবলী হতে পারে নিম্নরুপ:যথা,

১) প্রথমেই একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বা ইস্যু নির্বাচন করতে হবে‍ যা সরকারী দল ও বিরোধীদল দ্বারা সমাধান সম্ভব না,

২) ইস্যুটির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল গুলির পক্ষ থেকে কমপক্ষে ১জন করে প্রতিনিধির নাম , সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের নাম, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের যেমন-আইনজীবি,ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,কবি, সাহিত্যিক,বিচারপতি,পুলিশ,বর্ডার গার্ড, সশস্ত্রবাহিনী, ব্যবসায়ী,শিক্ষকদের প্রতিনিধির নাম তালিকাভুক্ত করতে হবে অর্থ্যাৎ যাদের ভোটাধিকার আছে তাদের সকলেরই দেশের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখা একান্ত ভাবে প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কারন দেশের যে কোন বড় দুর্যোগের ফল সকল শ্রেনীর নাগরিককেই ভোগ করতে হয়,

৩) অনুষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য শুধুমাত্র একজন উপস্থাপক থাকবে কোন বিচারক থাকবে না,

৪) নির্ধারিত ইস্যুটির পক্ষে একজন বিপক্ষে একজন এভাবে পালাক্রমে তালিকাভুক্তদের মধ্য থেকে একজন একজন করে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবে,

৫) প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে ইস্যুটির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে করে তালিকাভুক্তদের যে কয়দিন সময় লাগবে ততদিন পর‍্যন্ত জনগন ১টি মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে ইস্যুটির পক্ষে বা বিপক্ষে ১টি করে ভোট নির্দিষ্ট কোড নম্বর দুইটিতে পাঠাতে পারবেন এবং টিভি স্ক্রিনে ইস্যুটির পক্ষে বিপক্ষে এসএমএস এর মাধ্যমে আসা ভোটগুলি সরাসরি দেখা যাবে ক্রিকেট খেলার স্কোর এর মতো,

৬) যুক্তি উপস্থাপন পর্বটি অবশ্যই সরাসরি উপস্থাপন করতে হবে ।

উপরোক্ত পদ্ধতিতে আমরা খুব সহজেই একটি জাতীয় সমস্যা বা ইস্যুর জনগনের ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক মতামতের ভিত্তিতে সকলের কাছে গ্রহন যোগ্য সমাধানে পৌঁছতে পারি। অবশেষে বলব যেহেতু, সরকারী ও বিরোধী উভয় দলের প্রধানই দেশের ১৬ কোটি জনগনকেই দেশের মালিক বলে মনে করেন, তাই আমার এই প্রস্তাবটির পক্ষে তারা ইতিবাচক মনোভাব পোষন করে সার্বিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবেন । আর বিভিন্ন টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার আকুল আবেদন হইল এই যে, আমার এই প্রস্তাবটি দেশের প্রয়োজনে, দেশের আপামর জনগনের প্রয়োজনে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করত: বাধিত করিবেন।