একটু লক্ষ্য করে বলুন তো দু’টি ঘটনা একইরকম কি না?

তানভির-- আজব দেশের বাসিন্দা
Published : 29 Jan 2013, 02:55 AM
Updated : 29 Jan 2013, 02:55 AM

১-
>>তার দেশে অঢেল সম্পদ ছিল, তার ছিল জনপ্রিয়তা, দেশের জনগণ তাকে প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসতো ।
>>তার প্রতিষ্ঠানের অনেক সম্পদ ছিল, তার ছিল জনপ্রিয়তা, প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা তাকে প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসতো

২-
>>হায়েনারা দেশের সম্পদের দিকে লোভাতুর দৃষ্টি দিল এবং ঈর্ষান্বিত হল প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তায় । ষড়যন্ত্র করলো কিভাবে দেশের সম্পদ লুট করা যায় ।
>> হায়েনারা প্রতিষ্ঠানের সম্পদের দিকে লোভাতুর দৃষ্টি দিল এবং ঈর্ষান্বিত হল এমডি'র জনপ্রিয়তায় । ষড়যন্ত্র করলো কিভাবে প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ লুটা যায় ।

৩-
>>ধোঁয়া তোলা হল দেশটিতে পারমানবিক বোমা আছে কিন্তু তদন্তে কিছু পাওয়া গেল না ।
>>ধোঁয়া তোলা হল প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণা করছে, আছে অনিয়ম । কিন্তু তদন্তে কিছু পাওয়া গেল না ।

৪-
>>আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে দেশটির জনগনকে বিভ্রান্ত ও ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয় । বলা হয় দেশের মানুষ তার কাছে নিরাপদ নয় । কিন্তু জনগন তা কানে তোলেনি । ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে ।
>>কতিপয় হলুদ মিডিয়ায় নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের বিভ্রান্ত ও ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয় । বলা হয় সদস্যদের বিনিয়োগ নিরাপদ নয় । কিন্তু সদস্যরা তা কানে তোলেনি । ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে ।

৫-
>>অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল করতে দেশটির প্রতি অমানবিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শকুনের দল ।
>>অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দিতে প্রতিষ্ঠানটির সকল ব্যাংক একাউন্ট অন্যায়ভাবে জব্দ করে রাখে ।

৬-
>>এতকিছুর পরও যখন দেশটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল তখন যুদ্ধ শুরু করলো গায়ের জোরে । হত্যা করা হল শিশু, নারী, বৃদ্ধসহ লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ । গ্রেফতার হলেন প্রেসিডেন্ট, অতঃপর…… প্রহসনের বিচার, অতপর…… মৃত্যুদন্ড ।

>>এতকিছুর পরও যখন প্রতিষ্ঠানটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল তখন মামলা করা হল গায়ের জোরে । লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে কর্মহীন করে সন্তান ও মা-বাবা সহ মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করা হল । দুধ ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হল শিশুরা । গ্রেফতার করা হল প্রাণপ্রিয় এমডি-কে । অতঃপর…… বিচারের নামে প্রহসন………

৭-
>>আজ সবকিছু যখন শেষ তখন প্রমাণ হল ইরাক ছিল ষড়যন্ত্রের শিকার । সাদ্দাম হোসেন ছিল নিরপরাধ । তাতে কি লাভ হল ইরাকের জনগনের ???
>>যখন সকল তদন্ত শেষ হবে, একদিন প্রমাণ হবে ডেসটিনি ছিল ষড়যন্ত্রের শিকার । রফিকুল আমীন ছিলেন নিরপরাধ । কিন্তু তাতে কি কিছু এসে যাবে ডেসটিনির সদস্যদের ?

তাদেরকে কি বিগত দশটি মাস ফিরিয়ে দেয়া যাবে?
সমাজের কাছে তাদের সম্মান-হানি হয়েছে তা কি ফিরিয়ে দেয়া যাবে?
লক্ষ-লক্ষ মানুষের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা কি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব?
অবুঝ শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়া যাবে তার আনন্দমাখা খেলার সময়টুকু?
অপপ্রচারের কারনে সৃষ্ট ভুল-বুঝাবুঝিতে অনেকের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কে যে ফাটল ধরেছে তা কি ফিরিয়ে দেয়া যাবে ?
ক্ষুধার্ত দুধের সন্তানের দিকে তাকিয়ে বাবার বুকফাটা কষ্টের স্মৃতি কি কখনো মুছে দেয়া সম্ভব হবে ?
দেশমাতৃকা যে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারিয়েছে সে ক্ষতি কি পুষিয়ে দেয়া সম্ভব ?
আরো শত শত জানা-অজানা, প্রকাশিত-অপ্রকাশিত কষ্ট আছে যা কখনোই মুছে দেয়া সম্ভব হবে না ।

কিন্তু আজ গর্বে বুকটা ভরে উঠে শুধু এই ভেবে যে, এতকিছুর পরও ডেসটিনির ৪৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর হাল ছেড়ে দেয়নি, মনোবল হারায়নি। তারা এখনও প্রাণপণে যুদ্ধ করে যাচ্ছে ডেসটিনিকে রক্ষার জন্য । এখনও তারা স্বপ্ন দেখে একটি সুন্দর আগামীর, অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন একটি সুন্দর বাংলাদেশের ।

Spartan Tanvir