ওএসআই মডেল কি?
এক কম্পিউটার আরেক কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ এর মূল উদ্দেশ্য হলো তথ্য শেয়ার করা। মনেকরি দু্ইটি কম্পিউটার ভিন্ন স্থানে অবস্থিত এবং এই দুইটি কম্পিউটার তথ্য আদান প্রদান করতে চায়। তাহলে একটি কম্পিউটার যখন ডাটা সেন্ড করবে তখন ডাটা অনেকগুলো মিডিয়া হয়ে ডেস্টিনেশন কম্পিউটারে পেৌছাবে।সোর্স থেকে ডেস্টিনেশনে যাওয়ার সময় ডাটা যেন কোন সমস্যা না হয় মানে ত্রুটি মুক্ত ভাবে পেৌঁছাতে পারে সে জন্য কিছু রূল নির্ধারন করা আছে। এই নিয়মকানুনগুলোকেই বলা হয় প্রটোকল। আর এই প্রটোকলগুলোর সমন্বয়ে যে মডেলটি তৈরি করা হয়েছে এই মডেলটিকেই বলা হয় OSI model. এই মডেলটি নির্ধারণ করেন ISO.
ওএসআই মডেলকে সাতটি লেয়ার বা স্তরে ভাগ ভাগ করা হয়। এর স্তরসমূহ হলো :
৭. এপ্লিকেশন লেয়ার :
এটি হলো ওএসআই মডেলের সপ্তম লেয়ার। এপ্লিকেশন লেয়ার ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে এবং নেটওয়ার্ক ডাটা প্রসেস করে।এপ্লিকেশন লেয়ার যে কাজ গুলো করে থাকে রিসোর্স শেয়ারিং, রিমোট ফাইল একসেস, ডিরেক্টরী সার্ভিস ইত্যাদি। এপ্লিকেশন লেয়ারের কিছু প্রটোকল এর পোর্ট এড্রেস দেওয়া হলো
প্রটোকল | এফটিপি | টিএফটিপি | টেলনেট | ডিএইচসিপি | ডিএনএস | পপ | আইম্যাপ | এসএমটিপি | এইচটিটিপি |
পোর্ট এড্রেস | ২০/২১ | ৬৯ | ২৩ | ৬৭/৬৮ | ৫৩ | ১১০ | ১৪৩ | ২৫ | ৮০ |
পোর্ট নাম্বারগুলো মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ সিসিএনএ পরীক্ষায় সাধারণত এ ধরনের প্রশ্ন থাকে , যেমন এইচটিটিপি এর পোর্ট নাম্বার কত?
৬.প্রেজেন্টেশন লেয়ার :
এই লেয়ার নেটওয়ার্ক সার্ভিসের জন্য ডাটা ট্রান্সলেটর হিসেবে কাজ করে। এই লেয়ার যে কাজ গুলো করে থাকে ডাটা কনভার্শন,ডাটা কমপ্রেশন, ডিক্রিপশন ইত্যাদি। এই লেয়ারে ব্যবহিত ডাটা ফরম্যাট গুলো হলো .জেপিজি, .এমপিইজি ইত্যাদি।
৫. সেশন লেয়ার :
সেশন লেয়ারের কাজ হলো উৎস এবং গন্তব্য ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলা , সেই সংযোগ কন্ট্রোল করে এবং প্রয়োজন শেষে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। ডাটা পাঠানোর জন্য ৩ ধরনের কন্ট্রোল ব্যবহার করা হয় ।
৪. ট্রান্সপোর্ট লেয়ার :
ওএসআই মডেলের চতুর্থ লেয়ার ট্রান্সপোর্ট লেয়ার । এই লেয়ারের কাজ হলো সেশন লেয়ারের কাছ থেকে পাওয়া পাওয়া ডাটা নির্ভরযোগ্যভাবে অন্য ডিভাইসে পৌছানো নিশ্চিত করে। এই লেয়ারে ডাটা পৌছানোর জন্য দু'ধরনের ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে:
কানেকশন ওরিয়েন্টেড এ ডাটা পাঠানোর আগে প্রেরক গ্রাহক এর সাথে একটি একুনলেজ সিগন্যাল এর মাধ্যাম কানেকশন তৈরি করে থাকে। ইহা টিসিটি এর ক্ষেত্রে ঘটে থাকে।
কানেকশনলেস ওরিয়েন্টেড এ ডাটা পাঠানোর আগে প্রেরক গ্রাহক এর সাথে কোন একুনলেজ সিগন্যাল এর মাধ্যাম কানেকশন তৈরি করে থাকে না। ইহা ইউডিপি এর ক্ষেত্রে ঘটে থাকে।
৩. নেটওয়ার্ক লেয়ার :
নেটওয়ার্ক লেয়ারের কাজ হলো এড্রেসিং ও প্যাকেট ডেলিভারি। এই লেয়ারে ডাটা প্যাকেটে নেটওয়ার্ক এড্রেস যোগ করে এনক্যাপসুলেশনের মাধ্যমে।এই লেয়ারে রাউটার ব্যবহিত হয়ে থাকে এবং রাউটিং টেবিল তৈরি করে থাকে।
২. ডাটালিংক লেয়ার :
এটি হলো ওএসআই মডেলের ২য় লেয়ার। ডাটালিংক লেয়ারের কাজ হলো ফিজিক্যাল লেয়ারের মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে আরেক ডিভাইসে ডাটাগ্রামকে ক্রটিমুক্তভাবে প্রেরণ করা। এই লেয়ার দুটি ডিভাইসের মধ্যে লজিক্যাল লিংক তৈরি করে। এই লেয়ারে ডাটাকে ফ্রেম এ পরির্বতন করে।
১. ফিজিক্যাল লেয়ার :
ওএসআই মডেলের সর্ব নীচের লেয়ার হলো ফিজিক্যাল লেয়ার । এই লেয়ার ঠিক করে কোন পদ্ধতিতে এক ডিভাইসের সাথে আরেক ডিভাইসে সিগন্যাল ট্রান্সমিট হবে, ইলেকট্রিক সিগন্যাগ বা ডাটা বিট ফরম্যাট কি হবে ইত্যাদি। এই লেয়ারে ডাটা বিট টু বিট ট্রান্সফার হয়ে থাকে। এই লেয়ারে ব্যবহিত ডিভাইস গুলো হলো হাব, সুইজ ইত্যাদি।
চলুন এবার নিচের লেয়ার থেকে উপর লেয়ার পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা করি,
ফিজিক্যাল লেয়ারে ক্যাবলের মধ্যে সিগন্যালগুলো বিট আকারে ট্রান্সফার হচ্ছে এই বিট গুলো ডাটালিংক লেয়ারে ফ্রেমে রূপান্তরিত হচ্ছে আর যেহেতু ফ্রেম গুলো রাউটারের মধ্যে দিয়ে যাবে তাই ফ্রেমগুলোকে প্যাকেট এ রূপান্তরিত হচ্ছে। এখন চলুন দেখি এই প্যাকেট গুলো কিভাবে যাবে কানেকশন ওরিয়েন্টেড অবস্থায় নাকি কানেকশনলেস অবস্থায় এই সিদ্ধান্তটি নিয়ে থাকে টান্সপোর্ট লেয়ার। টান্সপোর্ট লেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই সেগমেন্ট গুলো কোন মোড এ (সিম্পলেক্স, হাফ ডুপ্লেক্স , ফুল ডুপ্লেক্স) ট্রান্সফার হবে এই সিদ্ধান্তটি নিয়ে থাকে সেশন লেয়ার । তারপরই এই ডাটা গুলো কি ফরম্যাট এ ( .jpg, .mpeg etc) প্রেজেন্ট হবে তা নির্ধারণ করে প্রেজেন্টেশন লেয়ার। সবশেষে ইউজার এর সাথে ইন্টারফেস তৈরি করে এপ্লিকেশন লেয়ার।
অনেক সময় একটি প্রশ্ন আসে এপ্লিকেশন লেয়ার অথবা নেটওয়ার্ক লেয়ার OSI model এর কততম লেয়ার সহজেই মনে রাখার জন্য এই বাক্যটি মনে রাখতে পারেন।
All People Seem To Need Data Processing. এখানে
এধরনের আরও অনেক টিপস এবং ট্রিকস থাকবে আমাদের পরবর্তী লেকচারে।
আজকের মতো তাহলে ওএসআই মডেল এখানেই শেষ করি ।আমাদের পরবর্তী লেকচার হলো TCP/IP. সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন!