‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ জাবি শাখাকে বাঁচান

অহনা
Published : 7 June 2012, 03:38 PM
Updated : 7 June 2012, 03:38 PM

আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন সিলেটে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। আমার এক বান্ধবী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। তার সাথে মাঝে মাঝেই আমার কথা হয়। কয়েকদিন আগে সে আমাকে জানায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যক্তি স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে দেয়ালগুলোতে দু'জন লোকের সমন্বয়ে একটি পবিত্র সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চিকা মারা হয়েছে। কেউ প্রশ্ন তোলতে পাড়েন কেন এটা স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে করা হলো। কারণ যাদের নাম ওই চিকা গুলোতে দেখা গিয়েছে তাদের একজনের ছাত্রত্ব নেই অপরজনের নিভু নিভু।

ব্যক্তিগত কাজ হাসিলের জন্য ওই চিকাগুলোতে যে নাম ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো গোলাম মুজতবা ধ্রুব ও ইমন রহমান। ফেসবুক মারফত জানতে পারলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংগঠনের সভাপতি গোলাম মুজতবা ধ্রুব। কাজ করেন জামায়াত পন্থী অনলাইন বার্তা ২৪ ডট কমে।

তার ফেসবুক স্টাটাস থেকে আরো যে তথ্য জানা গেল তাতে সবুজের এই পবিত্র ক্যাম্পাসকে অপবিত্র শিবির জামাতের আস্তানা হিসাবে চিন্থিত করা হয়েছে। মুজতবা ধ্রুব নাকি ক্যাম্পাসে শিবির খুজতে বের হয়েছেন। কিন্তু ক্যাম্পাসে কোনদিন শিবির প্রবেশ করলো এমন একটি কমেন্ট এর উত্তর তিনি দিতে অক্ষম হয়েছেন। তার প্রোফাইল থেকে আরো জানতে পারলাম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সমিতি নামক সংগঠনগুলোতে শিবির নেতা আছে। অথচ বান্ধবী জানালো, চিকাতে নাম থাকা ইমন ও ধ্রব নাকি এক সময়ের সাংবাদিক সমিতির ট্রেজারার ও সদস্যসহ বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। নিজেরা যখন সেখানে ছিলেন তখন শিবির খোঁজা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সাংগঠনিক দায়িত্ব কোথায় ছিল? বান্ধবী তার এক সহপাঠী (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান)'র সাথে কথা বলে জানালো তাদের আগে ১৯৯৬ সাল থেকে এ ক্যম্পাসে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নামে সংগঠনটি চালু ছিল। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করতে নিজস্ব কিছু সাংবাদিক নিয়ে সংগঠনটি আগের কমিটি থেকে নিয়ে পুনরায় চালু করা হয়। প্রশ্ন উঠতে পারে ক্যাম্পাসে কি সাংবাদিকরাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাকি শিক্ষার্থীরা??

আর সাংস্কৃতিক শিক্ষার্থীদের শিবির বলার কারণ ছাত্রলীগ ও পদত্যাগী ভিসি শরীফ এনামুল কবিরের হুকুম বাস্তবায়ন। যে কোন অন্যায় কাজে প্রতিপক্ষকে শিবির বানাতেই মূলত আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লেবাস গায়ে জড়িয়েছে এই দুই পল্টিবাজ সুবিধাভোগী সাংবাদিক।

শুধু তাই নয় ছাত্রলীগের সাথে যোগ সাজসে সদ্যবিদায়ী উপাচার্যের ম্যানেজ থিওরীতে পড়ে ক্যাম্পাসের কোন দেয়াল বাকী তো রাখেইনি। সম্প্রতি ফেসবুকের মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে শিবির মুক্ত করার ঘোষনাও দেয়ায় প্রশ্ন উঠেছে শিবির মুক্ত ক্যাম্পাস করতে যদি জামায়াতপন্থী কোন লোক নেতৃত্ব দেয় তাহলে তা কতটুকু গ্রহনযোগ্যতা বা কার্যকর হবে? শোনা যাচ্ছে ছাত্রলীগের আসন্ন নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে নিজেকে বিভিন্ন স্থানে পরিচয় দিচ্ছেন। ঢাকায় লবিংও করছেন কমিটিতে নিজের নামটি রাখতে এ সুবিধাবাদী ব্যক্তিটি।

এসব দেখে আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে,'যখন কেউ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসের দেয়াল রাঙিয়ে দেয়, যে সংগঠনের সভাপতি আবার যুদ্ধাপরাধীদের সংবাদ মাধ্যমে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করে তখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিতে অস্বস্তি বোধ করি।

এমতবস্থায় আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট আমার আকুল আবেদন এ পদলোভী ব্যক্তিদের হাত থেকে আমাদের পবিত্র সংগঠন এর অঙ্গ সংগঠনটিকে বাঁচাতে আশু পদক্ষেপ গ্রহন করুন। ১৯৯৬ সাল থেকে যে সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে তা দুই একজন পদলোভী, সুবিধাবাদী ব্যক্তির কারনে তা নষ্ট হতে পারেনা।