ধর্মের নামে অসহায় মানুষগুলোর সাথে এ যেন নির্মম উপহাস

মোঃ গালিব মেহেদী খান
Published : 1 August 2015, 05:51 PM
Updated : 1 August 2015, 05:51 PM


মসজিদ আল্লাহর ঘর। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের স্থান। মসজিদ কোন আরাম আয়েশের বা এলাকার গৌরবের স্থাপনা নয়। মসজিদ প্রয়োজন অনুযায়ি নির্মিত হবে। এটাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হল মসজিদকে আলিশান হতে হবে কেন। একটি মসজিদ স্থাপিত হবে, সেখানে ইবাদতের জন্য প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু তাকে সুসজ্জিত করতে হবে কেন? আমাদের দেশের মসজিদ সমূহকে এখন এয়ার কন্ডিশনড করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? আপনি আল্লাহর কাছে হাজিরা দিতে মসজিদে উপস্থিত হচ্ছেন। দীনহীন, অসহায়, পাপী একজন বান্দা। সেখানে আপনাকে এত আরাম আয়েশের দিকে লক্ষ রাখতে হবে কেন? যারা আল্লাহর ঘরের দোহাই দিচ্ছেন তাদের কি ক্ষমতা আছে মহান আল্লাহর ঘরকে সুসজ্জিত করে দেয়ার? আল্লাহ কি তাগিদ দিয়েছেন মসজিদকে সুসসজ্জিত করার? মহানবি (সঃ) কি সেই তাগিদ দিয়েছেন? বরং মহানবী(সঃ) তাগিদ দিয়েছেন এই বলে যে, "তোমার প্রতিবেশি যদি না খেয়ে থাকে এবং তুমি যদি পেট পুরে খাও তাহলে তুমি ঈমানদার নও, মুসলমান নও।' লক্ষনীয় বিষয় হল এখানে প্রতিবেশীর কথা বলা হয়েছে। মুসলমান প্রতিবেশীর কথা বলা হয় নি।

এই কথাগুলো এজন্যেই বলছি, যখন দেখি একটি আলিশান মসজিদের পাশের ফুটপাতেই গৃহহিন মানুষ খোলা আকাশের নিচে শুয়ে আছে তখন মনে হয় ধর্মের নামে মানুষ যেন অসহায় মানুষগুলোর সাথে নির্মম উপহাস করছে। মসজিদকে কেন্দ্র করে সারা দেশ ব্যাপি চাঁদার নামে একধরনের ভিক্ষাবৃত্তি চালু হয়েছে। যেখানে চাঁদা গ্রহিতারা যদি শতভাগ সততার সাথেও আদায়কৃত চাঁদার টাকা মসজিদের তহবিলে জমা করেও থাকে সে ক্ষেত্রেও মসজিদ পায় ৩০ ভাগ বাকি ৭০ ভাগ নেয় চাঁদা আদায়কারিরা। অর্থাৎ এটাকেই তারা অবলীলায় পেশা হিসেবে গ্রহন করছে। আর যদি চাঁদা গ্রহিতা পূরো টাকাটাই মেরে দেয় সে ক্ষেত্রেও তাদের বাধা দেয়ার কেউ নেই। এ সবই সম্ভব হচ্ছে মসজিদকে দৃষ্টি নন্দন আলিশান করে গড়ে তোলার মানসে। এখানে কতটা পার্থিব স্বার্থ জড়িত আর কতটা মহান আল্লাহকে খুশি করতে সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

ছবিঃ এটি বরিশালের বায়তুল আমান জামে মসজিদ। এই মসজিদটি গুঠিয়া মসজিদ নামেও পরিচিত। মসজিদটি বরিশালের, উজিরপুর গুঠিয়ার, চাঙ্গুরিয়া নামক এলাকায় অবস্থিত । মসজিদটি কোন ঐতিহাসিক মসজিদ নয়। মসজিদটি তৈরি করেছেন ঐ এলাকার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু নামের জনৈক ব্যাক্তি।