ক : তোমার কোন আত্মীয় স্বজন নেই?
খ : আছে।
ক : তারা কী করে?
খ : এক পক্ষ বাঁশ দেয়, আরেক পক্ষে হাতে ডিম দেওয়া হারিকেন দেয়।
ক : পরিবার?
খ : পরিবারের সদস্যরা কেউ পাগল কেউ ছাগল।
ক : কী করতে চাও?
খ : এই অবস্থা কিছু করা যায় না, শুধু একটা করে দিন পিছে ফেলতে হয়।
ক : কিন্তু কিছু করার চেষ্টা তো তুমি করো …
খ : চেষ্টা করাটা দিন পিছে ফেলারই অংশ।
ক : কি করতে চেয়েছিলে?
খ : সমাজে কিছু অবদান রাখতে চেয়েছিলাম।
ক : কীভাবে?
খ : সরাসরি সম্ভব নয়। চাইলেও এখন প্রাইমারি লেভেলে কিছু করতে পারব না। সেকেন্ডারি এবং টারশিয়ারি লেভেলে আমরা সার্টফিকেটধারী শিক্ষিত মানুষেরা কাজ করি। যারা প্রাইমারি লেভেলে কাজ করে তাদেরকে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলাম।
ক : লেখালেখি করো?
খ : করি, তবে, সত্যি বলছি-ভিতরে লেখক হওয়ার কোন তাগিদ নেই, কিছু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে, সত্য কথাটা, মনের কথাটা লেখার জন্যই লেখলেখি করি। মনের কথা লিখতে পারলে, বলতে পারলে মানুষের সুখ হয়।
ক : মনের কথা কি এখানে বলা যায়?
খ : বলা যায় না। বলতে দেওযা হয় না।
ক : তাহলে?
খ : এজন্য-ই আমাদের বন্ধ্যাত্ব কাজ করে, সবাই হাসফাঁস করে। কেউ সত্য কথাটা বলতে পারে না। শুধু মনগড়া কিছু ভাল কথা বললেই হয় না, মানুষের ভেতরটা উম্মোচন করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা শিক্ষিত এবং সক্ষম মানুষেরা যদি সত্যিটা লুকোয় তাহলে মিথ্যাটাই অশিক্ষিত এবং অক্ষমদের জীবন হয়ে যায়। এভাবে তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এরপর কেউ সত্য বললে তারা আর তা সইতে পারে না। এজনই অভিজিৎ রা খুন হয়। দায়টা আমাদের মত শিক্ষিত জনেরই। শুধু মাদ্রাসার অশিক্ষিতদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।
ক : তুমি কি তাহলে লেখালেখি আর করবে না?
খ : করব কীভাবে? বললাম তো যে, আমি লেখক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার জন্য লিখি না, আমি লিখি নির্দষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে। বেছে বেছে লিখতে গেলে লক্ষ্য অর্জত হয় না।
ক : এখন কী ভাবছ তাহলে?
খ : তিনটি অপশন সামনে আছে। চিপায় চাপায় ঘাপটি মেরে পড়ে থাকা, স্রোতে গা ভাসানো (লুটপাট শুরু করা), উন্নত বিশ্বে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে জীবন-যাপন করা।
ক : যাওয়ার সুযোগ থাকলে চলে যাও।
খ : সুযোগ আছে, তবে এখনই যাব না। আরেকটু চেষ্টা করে দেখি।
ক : কীভাবে চেষ্টা করবে?
খ : সেটাই ভাবছি। ভাবছি-কী কৌশল নেওয়া যায়।
ক : পরিবার?
খ : যে ক্ষত শুকাবার নয়-সেখানে মাঝে মলম লাগানোটাই কাজ, ওটা নিয়ে ভাবার কোন মানে হয় না।