'গম্বুজ' ইংরেজিতে 'Dome' যা ল্যাটিন 'Domus থেকে উদ্ভূত । স্থাপত্যের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যে দেখতে অনেকটা অর্ধ গোলকের মতো । ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ভবনে গম্বুজের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। স্থাপনার ছাদ হিসেবে কলাম বা স্তম্ভের উপর নির্মিত হয় 'গম্বুজ' । আকার ও নির্মাণ শৈলী ভেদে 'গম্বুজ' অনেক রকমের হয় , ভারতবর্ষের গম্বুজ গুলো অধিকাংশ 'পেঁয়াজ আকৃতির'। 'গম্বুজ' ভবনকে অধিকতর উচ্চতা প্রদান করে , ফলে স্থাপনার ভিতরে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা এমন রূপে প্রবাহমান হয় , গরম কালেও এর অভ্যন্তর থাকে শীতল । ভবনের রুফ স্লাব গম্বুজাকৃতি হলে কাঠামোটির ওজন অপেক্ষাকৃত কম হয় এবং সম্পূর্ণ স্ট্রাকচারটি অধিক সহনীয় হয় যা ভবনটিকে একটি কার্যকরী সুসংহত স্থাপনায় পরিণত করে । 'গম্বুজ' আচ্ছাদিত স্থাপনায় যখন কোন বক্তব্য বা নির্দেশনা প্রদান করা হয় , সেই ভয়েস খুব সুস্পষ্ট হয় এবং ভবনের যে কোন স্থান থেকে সহজেই তা শোনা যায় । স্থাপনায় 'গম্বুজ' থাকলে এর চূড়া অনেক দূর থেকে দৃশ্যমান হয় । এটি এমন একটি স্থাপত্য রীতি যা ধর্মীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবনকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করে তোলে এবং তাকে সনাক্ত করা সহজতর হয়। 'গম্বুজ' দ্বারা ভবনটি একটি ভাবগম্ভীর সুপ্রশস্থ এবং শক্তিশালী ম্যাসিভ ফর্মে পরিবর্তিত হয়, যা মানব মনে স্রষ্টার অসীম শক্তির প্রকাশ কে নির্দেশনা দেয়। প্রচলিত বিশ্বাস , 'গম্বুজ' আচ্ছাদিত ধর্মীয় স্থাপনা মহান সৃষ্টিকর্তার পরম পবিত্রময় নিবির এক ছায়াতল যা স্রষ্টার একক আধিপত্য কে স্বীকার করে । ইহকালের পাপ শোক দুঃখ অশান্তি থেকে মুক্তি এবং পরকালে স্বর্গালোক প্রত্যাশায় এখানে প্রার্থনায় সমবেত হয় বান্দারা । স্থাপনার কেন্দ্র কিংবা প্রযোজ্য অংশে 'গম্বুজ' স্থাপিত হলে সেটি হয়ে যায় স্থাপনার মূল ফোকাল পয়েন্ট , হয়ে যায় শক্তির এক প্রতিকায়িত রূপ 'সিম্বল অব পাওয়ার'।