তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত নারীবাদী মুক্তচিন্তার লেখক । তসলিমা নাসরিন নিজে নারী হওয়ার কারনে বিভিন্ন সময় আমাদের পুরুষ প্রাধান্য সমাজে নারীর কী আকাংখা বা কী চাহিদা তা তিনি নিজেকে দিয়েই উপলব্ধি করতে পেরে নিজের সাহিত্য কর্মের মাধ্যমে সে চাহিদা বা আকাংখার কথা প্রকাশ করতে বিন্দু মাত্র কুন্ঠাবোধ করেননি। আর তাতে আমাদের অসামাজিক সমাজের সমাজপতিদের আসল চেহারা উন্মোচিত হয়েছে ।
ধর্মকে পুঁজি করে সমাজের সমাজপতিরা নারীকে কিভাবে ভোগ্যপণ্যের মত ভোগ করছে, তাই তসলিমা নাসরিন তার বিভিন্ন সাহিত্য কর্মে প্রকাশ করতে সফল হয়েছেন । আর তাতে গা জ্বালা শুরু হয়ে যায় আমাদের দেশের তথা কথিত ধর্মিক সমাজের। তসলিমা নাসরিন একের পর এক অত্যাচারের শিকার হতে থাকেন ধর্মীয় উগ্রবাদীদের । ধর্মীয় উগ্রবাদীদের দ্বারা একের পর এক মামলার শিকার হতে হয় তসলিমা নাসরিনকে। এতে আদালত তাঁর বিরূদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে । অবশেষে ১৯৯৪ সালে তসলিমা নাসরিনকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়। অদ্যাবধি তিনি নিবার্সিত জীবন যাপন করছেন ।
কী অপরাধ ছিল তসলিমা নাসরিনের? মুক্তচিন্তা, মুক্তমত প্রকাশই তার একমাত্র অপরাধ । একটি স্বাধীন গনতান্ত্রিক দেশে মুক্তচিন্তা, মুক্তমত প্রকাশের অধিকার সবারই আছে। আর সে অধিকারের জন্য কাউকে নির্বাসনে যেতে হবে তা কোন সভ্য বিবেক মানতে নারাজ । অতি সম্প্রতি তসলিমা নাসরিন তার ফেইসবুক স্টাটাসে বাংলাদেশে ফেরার যে আকুলতা প্রকাশ করেছেন। তাতে প্রত্যেক মানব বিবেকই তার দেশে ফেরার আকুতিকে সমর্থন করে । তাই তসলিমা নাসরিন যেমন আছেন স্বদেশের মাটিতে ফেরার প্রতীক্ষায়, ঠিক তেমনি তার স্বদেশের প্রতিটি মানব বিবেক আছেন তার স্বদেশের মাটিতে ফেরার প্রতীক্ষায় ।