থ্রিজি গ্যাড়াকল ও বিদেশি অপারেটরের দাপট

থ্রিজি ঢাকা
Published : 10 June 2012, 02:36 PM
Updated : 10 June 2012, 02:36 PM

মোবাইল ফোনে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রি-জি) সেবা আসছে! গত এক বছর ধরে এই আশার বানী শুনাচ্ছেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়। তবে সেই থ্রিজির দেখা নেই। রাষ্ট্রয়াত্ব প্রতিষ্ঠান টেলিটক থ্রিজি সেবা নিয়ে আসার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে সেই উদ্যেগও পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে।

টেলিটকের থ্রিজি সেবা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ২৬ মার্চ। মার্চ থেকে এখন জুন চলছে। কেন এ গড়িমসি?? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে যেতে হবে বিদেশী অপারেটরদের কাছে।

অন্যান্য অপারেটররা বাজারে আসার আগেই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটক গত মার্চ থেকে ছয় মাস পরীক্ষামূলক থ্রি-জি সেবা দেওয়ার অনুমতি পায়। আর এ নিয়ে মাথাব্যাথা শুরু হয় বিদেশি অপারেটরদের।

মূলত গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি চাইছে না তাদের আগে টেলিটক থ্রিজি নিয়ে আসুক। টেলিটক থ্রিজি সেবা নিয়ে আসলে প্রথমেই ১০ লাখের বেশী গ্রাহক করায়াত্ব করে ফেলবে। এ হিসেবে ১০ লাখ গ্রাহক হারাবে বিদেশী অপারেটররা।

বিদেশি অপারেটররা চাচ্ছেন না তারা থ্রিজি সার্ভিস শুরু করার আগে টেলিটক তাদের থ্রিজি সেবা শুরু করুক, তাই টেলিটক ও মন্ত্রনালয়ও চাচ্ছে না থ্রিজি সেবা শুরু করতে।

বিদেশী অপারেটররা এখন প্রভু, তারা যা বলবে সেই অনুযায়ীই কাজ হবে। নামে মাত্র টেলিটককে থ্রিজি সেবা কার্যক্রম শুরু করতে দেয়া হবে আর বিদেশী অপারেটররা আসার পরই সেই সেবায় ধ্বস নামবে। এই চক্রান্ত নিয়েই চলছে দেশের থ্রিজি সেবার ভবিষ্যৎ।

সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ঘোষনা দিয়েছে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থ্রিজি নিলাম হবে। কিন্তু সেখানেও হতাশার সুর, থ্রিজি খসড়া নীতিমালা টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ে পাঠালেও তা এখনো চুড়ান্ত হয়নি।

অপারেটরদের দাবি থ্রিজি লাইসেন্সে তরঙ্গ ফি অতিরিক্ত ধরা হয়েছে আর এ দাবি শেষ পর্যন্ত বিবেচনায় নিবে মন্ত্রনালয়। তাই অপারেটরদের সাথে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত আসবে অপারেটরদের পক্ষে।

দেশের অমুল্য সম্পদ তরঙ্গ খুব কম দামে অপারেটদের তুলে দেয়া হবে বলেই নানা চক্রান্ত চলছে এ সেক্টরে। অতীত ইতিহাস থেকে দেখা যায়, গত বছর দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স নবায়ন নিয়ে অপারেটরদেরে সাথে দ্বন্দ শুরু হয়, ৪টি অপারেটরদের লাইসেন্স নবায়ন ফি ১৪ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা অর্ধেক নেমে গিয়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে দাড়ায়।

আগামীতে থ্রিজি তরঙ্গ নিলামেও এ ধরনের চক্রন্ত চলছে এবং তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল সার্ভিস (থ্রি-জি) লাইসেন্স থেকে আনুমানিক ৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বিটিআরসি সেই আশা অর্ধেকে নেমে আসবে।

এ চক্রান্ত থেকে রক্ষা নেই আমাদের, থ্রিজি গ্যাড়াকল থেকে কবে মুক্তি তা হয়ত জানেন মন্ত্রনালয় ও বিটিআরসি।

থ্রি-জি প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ গতিতে তথ্য পরিবহন সম্ভব বলে মোবাইল ফোনেই টিভি দেখা, জিপিএসের মাধমে পথ নির্দেশনা পাওয়া, উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহারসহ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া সম্ভব।