সময়ের সাথে যুদ্ধের রূপ ও প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়ে যায় । প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃতির সাথে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃতি ভিন্ন রকমের ।বিশ্বব্যাপী চলমান অশান্তির কারণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ । দৃশ্যমান না হলেও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিতর পরপরই ।
কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে নয়া উপনিবেশের নামে এই যুদ্ধ চলমান আছে । পৃথিবীর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইউরোপ এবং আমেরিকা নয়া উপনিবেশ গড়ার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের নামে প্রতিনিয়ত বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে । রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ বিনা বাক্যব্যয়ে বিশ্ব মোড়লের ইচ্ছা পূরণ করছে ।
নয়া উপনিবেশ তত্ত্ব প্রয়োগ করতে গিয়ে মধ্য প্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করতে হচ্ছে । জনগণের মনোনীত সরকার প্রধানকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেদের আজ্ঞাবহ লোকদেরকে উক্ত দেশের ক্ষমতায় বসাচ্ছে।
ইরাক , সিরিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, জর্ডান ও মিশরে প্রতিদিন রক্তের হোলি ঝরছে। এসব দেশের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তঃসংঘাত-সংঘর্ষের ফলে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে । বিশ্বব্যাপী কমিউনিস্টদের প্রতিহত করার জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহের প্রত্যক্ষ মদদে ইসলামী মিলিট্যান্ট সৃষ্টি হয়েছে । পরবর্তীতে নিজেদের সৃষ্ট মিলিট্যান্ট দের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তাদেরকে জঙ্গী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়ে উচ্ছেদ করার নামে স্বাধীন সার্বভৌম অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ও দুর্বল রাষ্ট্র সমূহের উপর আক্রমণ করে সে দেশের নিজেদের সেবা দাস এবং আজ্ঞাবহদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে রাষ্ট্রকে নিজেদের করদ রাজ্যে পরিণত করছে।
নয়া উপনিবেশ তথা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন আবহে সম্প্রসারিত হচ্ছে । লাখো মানুষের আর্তনাদ কারো কানে যাচ্ছে না। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যত লোক মারা গেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে শুরু হতে এই পর্যন্ত তার চেয়ে বেশী লোক মারা গেছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে গত রমজান মাসে নিরস্র ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইল শতাব্দীর বর্বরতম হত্যা যজ্ঞ চালিয়েছে ।
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘ বিশ্ব মোড়লদের স্বার্থ রক্ষার ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে । যুদ্ধের দামামা বেজে উঠার পরও বিবদমান পক্ষ সমূহকে শান্তি আলোচনায় বসাতে ব্যর্থ হওয়ায় আরাধ্য শান্তি হয়ে গেছে সুদূর পরাহত।