প্রগতিশীল বুদ্ধিবণিক ও আমাদের রাজনীতি

জীবন পথিক
Published : 14 March 2012, 06:11 AM
Updated : 14 March 2012, 06:11 AM

বুদ্ধিবৃত্তিক তর্ক আর যুক্তির ধারে কাছে না গিয়ে কেবল নিজের মনগড়া মন্তব্য করা কিছু ব্লগারের মনে হয় স্বভাবজাত। অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে নিয়ে যে তর্ক আর বিতর্কের অবতারনা করা হয়েছে উক্ত ব্লগে তা পড়লে মনে হয় যুদ্ধাপরাধী বিষয়টাই বাংলাদেশের এখন একমাত্র বিবেচ্য বিষয়। কেবল এই একটা সমস্যার সমাধান হলেই বাংলাদেশ সুখের সাগরে হাবুডুবু খাবে।

কিছু মানুষ যুদ্ধাপরাধ আর জামায়াত ইসলাম কে সমার্থক করে ফেলেছেন। তাদের আহলাদ দেখে মনে হয় জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজেদের প্রগতিশীল বুদ্ধিবণিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলবেন।

৪০ বছর !! ৪০ টা বছর পার করছে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। অথচ সমসাময়িক স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশগুলি আজ কোথায় !!! যুক্তি সহকারে যে কয়েকজন মানুষ সত্য বলার মত সৎসাহস দেখাচ্ছেন তাদের সবাইকে কেবল বির্তকিতই নয় অপমানের চুড়ান্ত করে ফেলছি আমরা। যুদ্ধাপরাধের মত একটা জঘন্য কলঙ্ক থেকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আর সবার মত আমিও মুক্তি পেতে চাই । রাষ্ট্র তার সর্বোচ্চ চেষ্টা টুকু করছে অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে। কিন্তু যে মানুষ গুলো বলে বিচারটা যেন বিচার শব্দটার ন্যায্যতা পায়, বিচারটা যেন সঠিক বিচার হয়, বিচারটা যেন পরবর্তি প্রজন্মের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয় সেই মানুষগুলিকে আমরা কোন যুক্তি ছাড়াই রাজাকারের দোসর বলে উপাধি দিয়ে দিচ্ছি। কেন ? সত্য কথা বলা যাবে না ? যৌক্তিক কথা বলা যাবে না ? বললেই তারা দোষী হয়ে যাবেন ? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার পক্ষে জনমত তৈরী করতে হবে কেন ? জনমত তো তৈরী করবে যারা এর বিপক্ষে !! 'মধু' কে যখন খাঁটি মধু বলা হয় তখনই মনে সন্দেহ তৈরী হয় যে সমস্য তাহলে কোথাও আছে ।

দেশের সামগ্রিক অস্থিরতার চিত্র ক্রমান্বয়ে ভয়াবহ থেকে ভয়াবহতর হচ্ছে। অর্থনীতির যারা পণ্ডিত ব্যক্তি তারা সবাই একবাক্যে বলছেন কঠিন অবস্থার দিকে চলে গেছে আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতি। প্রান্তিক ভোগী হিসেবে আমরা যারা সাধারণ নাগরিক তারা প্রতিটা মুহূর্তেই টের পাচ্ছি তার বাস্তবতা।

সমাবেশ আর পাল্টা মহাসমাবেশ, সমগ্র বাংলাদেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্নকরণ, ছাত্রলীগ কর্মীদের, সাধারণ নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা প্রদানের দ্বায়ীত্ব নিজেদের কাধে তুলে নেয়া এবং গণমাধ্যম কে কুৎসিত ভাবে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে নতুন এক সংস্কৃতির জন্ম দিলো ভবিষ্যতে তা কি রুপ ধারণ করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।