এর নাম সাংবাদিকতা!! বন্দুক যুদ্ধ নাকি কথিত বন্দুক যুদ্ধ নাকি দাবি???

রাফে সাদনান আদেল
Published : 17 March 2012, 12:09 PM
Updated : 17 March 2012, 12:09 PM

বন্দুক যুদ্ধ ও কিছু কথা !!!

দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আমাদের দেশের বিশেষায়িত বাহিনী র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমাদের গণমাধ্যমে একটি বিষয় নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। আর সেটি হল র‌্যাবের বন্দুকযুদ্ধ। আমরা (সাংবাদিকরা)বন্দুক যুদ্ধ কাকে বলবো? আমি যেটা বুঝি, আমরা দুই পক্ষের গুলি বিনিময়কেই শুধুমাত্র বন্দুক যুদ্ধ বলতে পারি। তবে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে যে দু পক্ষই গুলি বিনিময় করেছে। তবে সাধারণত র‌্যাবের সব অপারেশনের পরই সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা পৌছান। সেক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা ছাড়া কেউই বলতে পারবে না যে, দু'পক্ষই গুলি বিনিময় করেছে কি না! কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা হলো আমারা সাংবাদিকরা সেটার বাছ বিচার না করেই অনেক সময়ই ঢালাওভাবে লিখে দিচ্ছি "বন্দুক যুদ্ধ"! এটা কোনোভাবেই যথার্থ সাংবাদিকতার নমুনা নয় বলেই আমি মনে করি। আমরা (সাংবাদিকরা) বলতে পারি, র‌্যাব দাবী করছে অথবা র‌্যাব বলছে কিংবা র‌্যাব জানিয়েছে। আবার কখনো কখনো যে অভিযান চলার সময় সেখানে সাংবাদিকরা থাকেন না তা কিন্তু নয়। যখন অভিযানে থাকেন তখন সাংবাদিকদের থাকতে হয় র‌্যাবের নিরাপত্তার চাদরেই। তখন কি আমরা (সাংবাদিকরা) নিজ চোখে দেখতে পাই দুস্কৃতিকারীরা গুলি করার দৃশ্য। আমার কথা হচ্ছে যদি দেখতে পাই তাহলে অবশ্যই আমরা লেখবো বন্দুক যুদ্ধ। আর তা নয়তো কোনোভাবেই আমরা লিখতে পারি না বন্দুক যুদ্ধ। আমাদের এই সামান্য অবহেলায় সত্য চাপা পরার যে সুযোগ সৃষ্টি হয় সেটির দায় আমাদেরই। র‌্যাবের জনসংযোগ ও আইন শাখার পরিচালক কমোডর এম সোহায়েল এর সাথে আমার পেশাগত কারণেই বহুবার এই বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনিও আমার সাথে একমত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্রধারী দুস্কৃতিকারিদের প্রতিহত করতে এবং তাদের ধরতে এমনকি অনেকসময় আত্মরক্ষায় করতেও গুলি বিনিময় হয়। আর এই পাল্টাপাল্টি গুলি হবার কারণেই তারা এই অভিযানগুলোর বিবৃতিকে বন্দুক যুদ্ধ বলেন। র‌্যাব তাই বলবে দাবীও করবে। এমনকি সাংবাদিকরাও তাই বলবে যদি এবং কেবল যদি তা তার নিজের চোখের সামনে ঘটে। বন্দুক যুদ্ধ বলতে বা লিখতে তার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ থাকে শুধুমাত্র তবেই। আশা করছি অচিরেই এই মতভেদ দূর হবে। বন্দুক যুদ্ধ শব্দটির যথার্থ ব্যবহার করতে শিখবো আমরা সাংবাদিকরা।

পরিশেষে: বিডিনিউজের মতো গণমাধ্যম যেখানে আবু সুফিয়ান এর মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদক কাজ করেন যিনি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রীতিমত জিহাদ ঘোষণা করে কাজ করে যাচ্ছেন সেখানেও একই অবস্থা দেখে বিব্রত হয়েছি। আর টিভি চ্যানেলগুলোর কথা এবার নাই বা বললাম। আমি শঙ্কিত তবে আশাবাদী।