ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এত উতলা কেন…?

আমিন আহম্মদ
Published : 20 May 2011, 09:43 AM
Updated : 20 May 2011, 09:43 AM

আমাদের দেশের একটা বধ নিয়ম ও ট্রাডিশন দাঁড়িযেছে যে, নির্বাচনে হারলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় নাই। সেটা যদি স্বয়ং একজন ফেরেশতা এসেও বলে যান। অন্যদিকে নির্বাচিতরা জিতেই তার বাহবাহ দিতে দিতে, ০২-০৩ বছর পার করে দেন তারপর তারা বাকি সময় নিজেদের আখের গুছাতে ব্যাস্ত হয়ে যায়, আমরা সাধারণ জনতা যেই লাউ সেই কদু।

অন্যদিকে বিরোধীদল ক্ষমতায় না যাওয়ার শোক কাটিয়ে নতুন করে ক্ষমতার জন্য আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ে ১-২ বছরের মধ্যেই। তাই সরকারী কাজকর্ম ও উন্নয়ণ যা হয়, তা তো আর বলার দরকার নেই।

বিরোধীদল, তাদের কার্যতালিকায় রাখেন আন্দোলন, ভাংচুর, হরতাল এবং দেশের সকল বিদেশী প্রভুদের পায়ের উপড় মাথা ঠুকরানো, যাতে আগামীতে তাদের প্রভুরা তাকে ক্ষমতায় বসায়। এটা যে হয় তা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কথাই বোঝা গেল। গত ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে এ রকম একটা সমঝোতা হয়েছিল। যেখানে দুই নেত্রীকেই প্রপোজাল দেয়া হয়েছিল কে আগামীতে গ্যাস সহ খনিজ সম্পদ আমেরিকাকে দিবে, হাসিনা (তার ভাষায়) সাফ জানিয়েছিলেন তিনি এর মধ্যে নেই, কিন্তু আমাদের দেশনেত্রী (!!!) সেখানে রয়ে গেলেন এবং শর্ত মেনে নিলেন, যার ফলাফল আমরা তো দেখতেই পেয়েছি। প্রমান লতিফুর রহমানরা ভাল জানেন, তাদের ডেকে জেনে নিন।

যাক অতীত থাক। এবার আসুন বর্তমানে। খালেদা কিছুদিন আগে চীনে গিয়েছিলেন, অনুরোধ করে এসেছেন যেন এ সরকারকে বেশী সহায়তা না করার জন্য। এজন্য ১৯৭১ ও ১৯৭৫ কে মনে করিয়ে দিতেও তিনি ভুল করেন নাই। পাঠক ভাই-বোনেরা আপনারা সবাই ঐ সময়ে চীনের ভুমিকা জানেন। এর আগে চিরাচরিত নিয়মানুসারে মধ্য প্রাচ্যে গিয়ে দেশের ধর্ম গেল, ধর্ম শেষ তাই এই সরকারকে আর দয়া করে সহায়তা করবেন না, জনশক্তিও আনা বন্ধ করুন দেখন জনতা ক্ষেপে যাবে, যা আপনারা দেখেছেন যে, উনার সফরের পর একটা আকাল পরেছিল, যদিও এখন অনেকটা কেটে উঠেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি লন্ডনে। সেখানে দেশের আইন, বিচার ও ইত্যাদি অভ্যন্তরীন বিষয়ে যেন ব্রিটেন সরকারকে চাপ দেয়, এবং আগামীতে তিনি ক্ষমতায় আসলে ব্রিটেনের স্বার্খ অবশ্যই দেখবেন বলে মুচলেকা দিয়ে আসলেন। এরাই আমাদের দেশনেত্রী ও আপোসহীন নেত্রী, যারা নিজের স্বার্থের জন্য কারোও সাথে এমনকি দেশের সাথেও আপোষ করেনা।

এখন সরকার বলে বেড়াবে দেশের সার্বভৌমত্ব খালেদা শেষ করে দিয়েছে। যেমনা আবার বিএনপিও বলত। এখানে নিজেরা যা করে তাই ঠিক ও দেশ-জনগণের স্বার্থে (!!!) করেন, কোন আপোস এখানে হয় না।

আসল কথা হল : ১। তারেকের মামলা চলমান, তাই যদি সরকারকে সরানো যায়, তবেই তারেক মুক্ত।
২। যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচার বিএনপি কোনভাবেই হতে দিবে না, কিন্তু সরকারে মেয়াদ পুর্ন হলে হয়ত ঠেকানো যাবেনা এই ভেবে উত্তলা।
৩। খালেদার বিরুদ্ধে সাবেক সরকারের মামলাও বিচারাধীন, এটা থেকে মুক্ত হতে হবে।
৪। এর আগে তাদের অন্তত ৩০ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা ছিল, যা মঈন-ফখরুদ্দিনের কারনে হয়নাই, কিন্তু অনেক জঙ্গী গোষ্ঠী ও মিত্রদের নানা আশ্বাস দেয়া ছিল যা পুরন করা যায় নাই। এজন্য চাপও বাড়ছে, এটা হতে মুক্ত হতে হবে।
৫। কোকোর নামে মামলার কার্যক্রম চলমান, এটাও বন্ধ করতে হবে। শত হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সু-পুত্র দ্বয়ের একজন।

এছাড়াও অনেক পাওয়া-না পাওয়া, হারানো, হতশাতো আছেই। তাই এ সরকার আর ক্ষমতার থাকার কোন সুযোগ দেয়া যাবেনা। তাতে মান-সম্মান নাও থাকতে পারে।

তাই দেশে কিছু রেখে প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। এখন বিদেশী প্রভুদের আশ্বস্ত ও আশ্বাসের আশায় দেশের বদনাম গেয়ে বেড়ানো শুরু হল। এটা এতদিন হয়ে টেলিফোনে, এখন সরাসরি।

এরাই আবার আমাদের বিগত তিনবারের প্রধান মন্ত্রী, বর্তমান বিরোধী দলীয় নেত্রী, আর ভবিষৎ প্রধান মন্ত্রী। ভাবতে ঘৃনা হয়। কারন আজকের প্রধান মন্ত্রী আগামীর বিরোধী নেত্রী, যার ভুমিকাও হবে ঠিক আজকের মত ?

আমরাকি এদের হাত হতে মুক্ত হতে পারিনা ? উচিত নয় ?