আমরা হরতাল-মারামারি চাইনা, সুষ্ঠু সমাধান চাই।

আমিন আহম্মদ
Published : 1 June 2011, 02:31 PM
Updated : 1 June 2011, 02:31 PM

২৮ ব্যবসায়ী সংগঠনের বিবৃতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির বিরোধিতা করেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। এফবিসিসিআইসহ ২৮টি ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষে বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আর নয়, স্বাধীন-নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানই সংবিধানসম্মত ব্যবস্থা। বিবৃতিতে ২৮টি সংগঠনের সভাপতিরা সাক্ষর করেছেন।

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানই একমাত্র সংবিধানসম্মত ব্যবস্থা। বৈধ এই ব্যবস্থা একদিকে যেমন জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে একটি স্থায়ী ও শক্তিশালী ভিত্তি দেবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ, বিজিএমইএ সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিকেএমইএ সভাপতি এ.কে.এম. সেলিম ওসমান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি এ.টি.এম. ওয়াজিউল্ল্যাহ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি সভাপতি সালমান এফ রহমান, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি নসরুল হামিদ, এম.পি., বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান শেখ কবীর হোসেন, বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বায়রা সভাপতি মো. আবুল বাশার, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সভাপতি আমির হোসেন খান প্রমুখ।

বিবৃতিতে বলা হয়, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের বৈধ প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে দেশের সাংবিধানিক সংকট দেখা দেবে এবং দেশ গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত হবে। ফলে দেশে এক নৈরাজ্যেকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। অপরদিকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন।

তারা বলছেন, ১৯৯১ সনে গঠিত প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ এ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে প্রত্যেকটি নির্বাচনের ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলো অভিযোগ করেছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার (২০০৭-২০০৯) ৯০ দিনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করে ২ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে। এ সময়ে জনগণের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, ক্ষুদ্র দোকানদার– সবার ওপর অমানবিক অত্যাচার ও নিপীড়ন করা হয়।

ব্যবসায়ী নেতারা আরো বলেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত গত ১০ মে, ২০১১ তারিখে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে উল্লেখ করে তা অবৈধ ঘোষণা করেছেন। সর্বোপরি, ২০১১ সালে সর্বশেষ অবসর গ্রহণকারী প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে তীব্র আপত্তি উত্থাপিত হয়। এ কারণে মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

বিবৃতিতে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এ প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে যেভাবে নির্বাচন হয় অর্থাৎ একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। এ বিষয়ে ঐক্যমতে উপনীত হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

***
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ০১ জুন, ২০১১।

উপরোক্ত সংবাদটি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম – এর সৌজন্যে।