শেষ পর্যন্ত ব্লগ কি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করল?

আমিন আহম্মদ
Published : 4 July 2011, 12:00 PM
Updated : 4 July 2011, 12:00 PM

গত ০৩ তারিখের হরতালে দিনমজুর নিকের এক ব্লগারকে গ্রেফতার করার অপরাধে আজ বিডিনিউজ২৪.কম জনাব আবু সাঈদ আহমেদ-এর পোষ্ট কৃত "ব্লগার গ্রেপ্তার: ডিজিটাল সরকারের ব্লগ ও ফেসবুক আতংক" ব্লগটিকে ব্যানার করেছেন। যে কোন ব্লগারের লেখাই ব্লগ সংকলক ব্যানার করতে পারেন যদি তা অধিক গুরুত্বপূর্ন ও সময়োপযোগী মনে করেন।

কিন্তু ব্লগার যে পোষ্ট দিয়েছেন এবং পোষ্টের যে শিরোনাম দিয়েছেন তা কি পুরোটা সত্য? মোটেই না। কারন প্রথমত : পুলিশ যাকে গ্রেফতার করেছে তার প্রথম পরিচয় ছিল সে "হরতালকারী"। তার সাথে তখন কোন পোস্টার বা ব্যানার ছিল কি যেটা তাকে প্রমান করে যে তিনি একজন ব্লগার? যদি না থাকে তাহলে এটা কেন প্রচার করা হচ্ছে যে ব্লগকে সরকার ভয় পাচ্ছে, সরকারের আতংক? এ দ্বারা কি লেখক ব্লগ কালচারকে রাজনীতির কেন্দ্রে নিয়ে এসে বিতর্কিত করতে চাচ্ছেন না তো? কারন উনি যেভাবে হেড করেছেন, তা সম্পূর্ন রাজনৈতিক ভাবে ব্লগকে ব্যবহার করে একটা প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়। উনি কতজন ব্লগারকে চেনেন ? উনি কি জানেন বা ওনার কাছে সব ব্লগার বলেছেন যে তারা এ চুক্তির বিরুদ্ধে বা এ হরতালের পক্ষে ? যদি নাই বলে থাকেন তাহলে কিসের ভিত্তিতে লেখক এটাকে ব্লগের সাথে জড়িয়ে ব্যাক্তি বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইলেন ? আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

লেখকের পোষ্টে দেয়া কয়েক জন মন্তব্য কারীর মন্তব্য আমি এখানে হুবহু তুলে ধরছিঃ

বাসন্ত বিষুব বলেছেন:
রাত্রি ০.৩৯ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ব্লগিং করার কারণে ব্লগার দিনমজুরকে গ্রেফতার করা হয়নি। হরতাল আহ্বানকারীদের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর তিনি শুধু একা গ্রেফতার হননি। আরো অনেকে আজ গ্রেফতার হয়েছেন। তাই এটাকে ব্লগার গ্রেফতার হিসেব চিহ্নিত করা উচিত নয়।
কিন্তু তারপরো একজন সাধারণ ব্লগার হিসেবে দিনমজুরের পক্ষেই আমার অবস্থান। সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ব্লগার দিনমজুরকে মুক্তি দেয়া। কারণ সব ব্লগাররাই এক সূত্রে গাথা। ভিন্ন প্রেক্ষিতে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটলেয় এটা লেখনির উপর আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে যাবে। আর তরুণ প্রজন্মের সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা সরকারের থাকা উচিত।
ব্লগার দিনমজুরকে মুক্তি দেয়া হোক এবং তাকে যেন হয়রানি না করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সরকারের কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

তাজুল ইসলাম বলেছেন:
সকাল ৮.৩২ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

এখন যদি ডিজিটাল আগ্রাসন চলতে থাকে তাহলে আর উপায় নাই। এখন তো দেখছি ব্লগ ছেড়ে পালাতে হবে! । এটা কেমন কথা বাক স্বাধীনতাকে হনন করার কোন অভিপ্রায়………

মোসাদ্দিক উজ্জ্বল বলেছেন:
দুপুর ১২.২৩ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

লেখার শিরোনাম আর মুল বিষয় এর মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে।
আপাত দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয় ব্লগিং করার অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা একটু ভিন্ন। হরতালে সমর্থন এর জন্য অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে আমাদের ব্লগারও একজন। কাজেই ব্লগিং এর অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে এমন সংবাদে ব্লগের অনেকে আতংকিত হয়ে উঠবে।
আমারা আমাদের ব্লগের ভাইরা যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের মুক্তি দাবি করি। কারন তারা আমাদের ভাই।

মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী বলেছেন:
দুপুর ২.০১ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

লেখাটি চরমভাবে প্রোপাগান্ডামূলক এবং মাত্রাতিরিক্ত মিথ্যাচারে ভরা । ব্লগার কি আইনের ঊর্ধ্বে ? ব্লগার কি অপরাধ করেনা ? হরতাল আহবান করে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে । আবু সাঈদ আহমেদ, আপনাদেরকেও গ্রেফতার করা উচিত প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর দায়ে। ব্লগারের ধোঁয়া তুলে ব্লগার কমিউনিটির মধ্যে উস্কানি দেওয়ার এই অপ-লেখনীর তীব্র নিন্দা জানাই ।

ব্লগার কি ব্লগার না, এটা এখানে বিবেচ্য না। বিশৃঙ্খলা এবং অপপ্রচারকারী ব্লগার ননব্লগার সকলেই আইনের আওতায় আসবে -এটাই সঙ্গত ।

যহরত বলেছেন:
বিকাল ৩.৫৮ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

অসত্য কথার মাধ্যমেই শিরোণামের শুরু ।
আপনি যেভাবে লিখেছেন এবং কিছু ব্লগার যেভাবে পোস্ট দিচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে ব্লগিং এর অপরাধেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে 、যা আদৌ সত্য নয় ।
ব্লগিং এর সাইটকে যদি নোংরা রাজনৈতিক খেলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার
করা হয় তাহলে তো ব্লগার হিসেবে নিজের পরিচয় দেয়াটা এখন থেকে লজ্জাকর
পরিস্হিতির মধ্যে পড়ে যাবে ।

আমিন আহম্মদ বলেছেন: (আমার নিজের মন্তব্য)
বিকাল ৪.৫৭ মিনিট , সোমবার ৪ জুলাই ২০১১

@ উজ্জল, ইমতিয়াজ এবং যহরত ভাহদের সাথে আমিও একমত। এখানে লেখাটা যেভাবে হেড কভার করা হয়েছে বা শিরোনাম করা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে পুলিশ "ব্লগার" খুজে খুজে ধরেছে। হরতাল করেছে এবং পুলিশ তার নিয়মিত কাজের অংশ হিসাবে একজন "হরতাল সমর্থনকারী"কে গ্রেফতার করেছে। এখানে ফেসবুক বা ব্লগ শব্ধটা মুখ্য হল কিভাবে ? এটা থেকে ষ্পষ্ট লেখক রাজনৈতিক মতাদর্শের আলোকে একটা রাজনৈতিক পোষ্ট দিয়েছেন, কিন্তু উনি ব্যবহার করেছেন ব্লগ ও ফেসবুকের মত সামাজিক ও জ্ঞান চর্চার মাধ্যমকে। এর মাধ্যমে লেখক একদিকে সরকারকে ব্লগ ও ব্লগারদের প্রতিপক্ষ করার একটা অপচেষ্টা করেছেন। এটা মোটেই কাম্য হতে পারেনা।

ব্লগ সংকলক একটি ব্লগের মোটিভ ও সারগর্ভ না বিচার করেই তাকে ব্যানার করে কি, তিনিও আমাদের প্রাণপ্রিয় ব্লগকে রাজনৈতিক প্লাট ফর্মে রুপান্তর করলেন?

আনু সাহেব বা যারা হরতাল ডেকেছেন তারা আজ পর্যন্ত বিষয়টি জাতির সম্মুখে পরিস্কার করে উপস্থাপন করছেন কি? করেন নাই। তারা যে সব বিষয়কে এখানে মুখ্য বলে টেনে এনেছেন, এর চেয়ে ভয়াবহ চুক্তি গত জোট সরকার করেছিল, কিন্তু সেদিন কোথায় ছিলেন আনু মোহাম্মদেরা ? আমি এ ব্লগে একটা পোষ্ট করেছিলাম। এটা ছিল চুক্তির দিন। তারপর চুক্তির বিষয়বস্তু যা দেখলাম, আর আনু মুহাম্মদরা যার বিরোধীতা করেছেন তার মধ্যে আমি যা বুঝলাম বিরোধিতাকারীরা যা বলেছেন তা ঠিক আছে তবে, চুক্তিটিও আমাদের জন্য দরকার। কারন পাইপলাইনে যখন চীন ও ভারত আমাদের গ্যাস চুরি করে নিয়ে যাবে তখন আনু মুহাম্মদরা কি জবাব দিবেন ? ওনারা তখন কিছুই বলবেন না। কারন ওটা ওনাদের প্রভু চীন নিয়েছে বলে কথা !!!

তাই যুক্তিপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়া জন হয়রানির কি কারন আছে? আমি আমার বহু লেখায় বলেছি, ওনারা যদি সঠিক থাকেন আর যদি দেশের ভাল চান তাহলে হরতাল না দিয়ে আদালতে গেলেন না কেন ? কেন বিরোধী জোটের সাথে সিরিয়াল করে দেশকে টানা ১০ দিনের পঙ্গুত্ব বরন করালেন ?

যারা আইন অমান্য করে সে ব্লগার হোক আর নন-ব্লগার হোক কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হল পুলিশ বা সরকার ব্লগার বা ফেসবুক হোল্ডারদের ধরেছেন বা ধরার নির্দেশ দিয়েছে কি? যদি না দিয়ে থাকে তাহলে কেন এখানে এটাকে রাজনৈতিক রং লাগানো হলো? আমরা অবশ্যই একজন ব্লগারের উপড় নির্যাতন হলে তার প্রতিবাদ করব । কিন্তু এখানে তো পুলিশ কোন ব্লগারকে ব্লগার পরিচয়ে আটক বা নির্যাতন করে নাই, তাহলে কেন ব্লগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার। বন্ধ করা হোক এ ধরনের অপ-ব্যবহার।