শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২

আল রশিদ
Published : 16 June 2012, 08:36 AM
Updated : 16 June 2012, 08:36 AM

অনেকদিন পর খবরের কাগজে সংবাদটি পড়ে খুশি হলাম। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সবাই কে সাধুবাদ জানাই এই মহৎ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য । সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত সময়যোগী হয়েছে বলে মনে করছি।

যখন চারিদিকে কোচিং-বাণিজ্য রমরমা আর অন্যদিকে অভিভাবকদের নাভি:শ্বাস তখন এই সংবাদ সবার জন্য এক সুন্দর ভবিষতের হাতছানি দিচ্ছে ।

এখন দেখার বিষয় শিক্ষকরা কতটা আন্তরিক এবং নীতিমালা মেনে চলার পক্ষে কাজ করবে । কারন যারা ইতিমধ্যে কোচিং-বাণিজ্য ও প্রাইভেট টিউশনি করে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করেছে তাদের পক্ষে মেনে নেওয়াটা অনেক কঠিন । যেমন বাঘ একবার রক্ত পান করলে বার বার পান করার জন্য মত্ত হয়ে ওঠে । বনে ঘোষিত নীতিমালা নেই এবং বাঘ নিজেই রাজা । কাউকে সে পরোয়া করে না ।

কিন্তু মনুষ্য সমাজে এই রাঘববোয়াল শিক্ষক আর তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড (কারন তারা ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিং এ পড়াতে আগ্রহী এবং শিক্ষার্থীকে চাপ প্রয়োগ করে পড়তে বাধ্য করেন। পড়লে বেশি নম্বর দেন, প্রশ্ন বলে দেন।) নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি আছে।

তাছাড়া আছে নীতিমালা তদারকির জন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা তদারক কমিটি । এর মধ্যে বিভাগীয় শহরে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ও উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে তদারক কমিটি থাকবে। এসব কমিটিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। পালাবে কোথায় ।

যদি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নীতিমালা ভঙ্গ করে তাহলে অসদাচরণের দায়ে সরকারের শৃঙ্খলা ও আপিল বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধু সাবধান ।

অভিভাবকদের সোচ্চার থাকতে হবে যেন শিক্ষকরা আর তাদের সন্তানদের টিউশনির ফাঁদে ফেলতে না পারে । পৃথিবীর আর কোথাও এমন ঢালাওভাবে কোচিং/টিউশনি বাণিজ্যের উদাহরন নেই বললেই চলে। শিক্ষকরা যেখানে মানুষ গড়ার কারিগর সেখানে তারা বাণিজ্য করছেন। প্রহসন কাকে বলে! কত প্রকার ও কী কী !

যারা সামর্থবান তারা যেভাবেই হোক টিউশনির টাকা জোগাড় করেন । কিন্তু যাদের সামর্থ নেই তারা সন্তানদের টিউশনির টাকা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন । একই দেশে দুই ব্যবস্থা । এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মেনে নেওয়া যায় না । তাই আমাদের উচিত হবে এই নীতিমালা মেনে চলা এবং ভবিষতে আরও যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করা।

এই নীতিমালা'র একটা সীমাবদ্ধতা হচ্ছে তারা শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করেনি যা সবচেয়ে বেশি জরুরি এই নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য।

***
ফিচার ছবি: http://www.chapainawabganjnews.com থেকে সংগৃহিত