যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার ও কিছু প্রশ্ন???

আরিফ রহমান
Published : 19 June 2012, 04:46 AM
Updated : 19 June 2012, 04:46 AM

আমি আসলে লিখার চেয়ে পড়তে বেশী ভালবাসি। বিভিন্ন ব্লগ গুলো পড়ে গর্ববোধ করছি এই ভেবে যে, আমরা আমাদের দেশটাকে অনেক ভালোবাসি। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আলোচিত (সাগর রুনি হত্যা, যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার, মিয়ানমার দাঙ্গা ইত্যাদি) ঘটনা অবলম্বনে ব্লগ গুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দেশপ্রেম দেখেছি, দেশের জন্য ভাবনা দেখেছি।

যারা ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ টাকে এতটুকু ভালবাসি তারা চাই স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার হোক। যারা আমার মা বোনকে ধর্ষণ করেছে, আমার বাবা ও ভাইদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার কি কখনও হবে না? আজ এই প্রশ্ন শুধু আমার না, বাংলার লক্ষ কোটি সাধারণ মানুষের (পাকি দালালদের ছাড়া)। আমাদের বলতে পারেন, তাদের তো গ্রেফতার করা হচ্ছে, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে ! কিন্তু আমি বলব, বিচারের গতি এত ধীর কেন? কেন ট্রাইব্যুনাল আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের তিন বছর পর গঠন করা হল? যেখানে বি এন পি নেতাদের গ্রেফতারের কয়েক দিনের মধ্যে চার্জশীট গঠন করা হয়, সেখানে কেন যুদ্ধ অপরাধীদের বেলায় তা হচ্ছে না? আওয়ামীলীগ সরকার কি এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে চাচ্ছে? যদি তাই না হয়, তাহলে বিচার প্রক্রিয়া কেন দীর্ঘ করা হচ্ছে? কতজন সাক্ষীর দরকার তাদের ফাঁসিতে ঝোলানের জন্য?

এগুলোর কোনটার উত্তর আমাদের জানা নেই। এখন পর্যন্ত আমরা তাদের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলতে পারি তোরা রাজাকার, দেশের শত্রু। কিন্তু এটা আমরা বুঝতে পারছি যে, তারা যদি ছাড়া পেয়ে যায় তাহলে তারা হবে অপ্রতিরোধ্য। হতে পারে ৭১ এর মুক্তিকামী জনতার উপর যে স্টিম রোলার চালানো হয়েছিল তা আবার শুরু হয়ে যাবে।

"একদল শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক হিসাবে ঘোষণা করে রাজাকার ও দেশদ্রোহীদের বগলদাবা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের মুক্তির জন্য হরতাল করছে, গাড়ির ভেতর মানুষ পোড়াচ্ছে।

আরেক দল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক ঘোষণা করে, নিজেদের মুক্তি যুদ্ধের সপক্ষের দল হিসাবে ঘোষণা করে, রাজাকার ও দেশদ্রোহীদের বিচারের নামে প্রহসন শুরু করেছে। "

এসকল কি আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে? নাকি চিন্তা করছি যে "বিচারের মধ্যে আমার বাবাকে জুতা মেরেছে, আর আমি সম্মান নিয়ে বেঁচে গেছি"। দেয়ালে পিঠ না ঠেকে গেলে আমাদের টনক নড়ে না, কিন্তু কাজটা তখন হাজার হাজার গুন কঠিন হয়ে যায়।

কি করবো জানা নেই, দেয়ালে পিঠ ঠেকা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, নাকি তার আগেই জেগে উঠবো???