এক ফোটা চিনির রস ও শয়তানের গল্প!

আবদুর রহমান
Published : 4 June 2012, 08:49 AM
Updated : 4 June 2012, 08:49 AM

এটা আসলে একটা গল্প, আমার শ্রদ্ধেয় বাবার নিকট থেকে শুনা।এই গল্পটা হচ্ছে এইরকমঃ………..

একদা এক ব্যক্তির সাথে শয়তানের দেখা হওয়া মাত্র সে শয়তানকে একটা গালি দিয়ে বলল " তোর কারনে যত সমস্যা, তোরে মাইরা ফেলতে মন চাইতেছে"। এই কথা শুনে শয়তান তার স্বভাবসূলভ শয়তানী হাসি দিয়ে বলল, " ভাইজান কথাটা ঠিক কইলেন না, আমি কিন্তু বেশী কিছু করি না। যা করার আপনারাই করেন"। এই কথা শুনে লোকটি ক্ষেপে গেলে শয়তান তাকে বলল, ভাইজান যখন বিশ্বাস করলেন না তখন আসেন আমার সাথে। আমার কর্মকান্ড দেখে বিচার করবেন কে বেশী দোষী………….. এই বলে শয়তান তাকে নিয়ে বাজারে একটা মিষ্টির দোকানে গেল। তারপর লোকটিকে দোকানের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রেখে শয়তান দোকানের ভিতরে গেল এবং একটা মিষ্টি থেকে সামান্য একটু রস নিয়ে পাশের দেওয়ালে লাগিয়ে দিল। একটু পরে এই রসের লোভে পিঁপড়া চুটে এল রস খেতে আর ওমনিই পিঁপড়াকে দেখে একটা টিকটিকি চুটে এল তাকে খাওয়ার জন্য। পাশে বসা ছিল একটা বিড়াল, টিকটিকি দেখে এমন একটা ভাব নিয়া দৌড়ান দিল যে, " শালা কই যাবি"? আর এই সময় দোকানের বাহির দিয়ে এক কুত্তার মালিক তার বাংলা কুত্তা নিয়ে যাচ্ছিলেন । চোখের সামনে একটা জলজ্যান্ত বিড়ালকে দেখে, আর পাশে মালিক আছে এই ভরসায় সাহসি বাংলা কুত্তা লাফ দিল বিড়ালকে ধরার জন্য। ব্যাস… লক্ষ্যভ্রষ্ট লাফ গিয়ে পঢ়ল মিষ্টির শোকেসে, যার ফলাফল শোকেস ভেঙ্গে সারা দোকানে মিষ্টি চড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার। কুত্তা ভয়ে মালিকের পাশে আশ্রয় নিল….. আর দোকানের মালিক কুত্তার মালিককে তাড়া করল। কুত্তার মালিক প্রথমে প্রনভয়ে দৌড় লাগালেও সে ছিল সরকার দলের লোক, বাড়ি গিয়ে আরো হাজারো কুত্তা নিয়ে ফিরে এল…… অন্যদিকে দোকানের মালিক ছিল বিরোধী দলের, তাই ওত শক্তি না থাকলেও তিনি ক্ষমতা দেথানোর জন্য কিছু বিলাই নিয়ে রুখে দাঁড়ালেন। ব্যাস শুরু হয়ে গেল কুত্তা আর বিলাই এর যুদ্ধ, কিন্তু আশ্চর্য্য! কুত্তা আর বিলাই এর মালিকরা যুদ্ধের মাঠে নেই, কেউ তাদের খূজে পেল না। পরে অবশ্য জানা গেছে তেনারা নিরাপত্তার জন্য মাঠের বাহিরে বুলেটপ্রুফ এসি রুমে বসে ছিলেন। যুদ্ধের ফলাফল দুটা কুত্তা মরল, ৪ টা আহত হল। অন্যদিকে সরকার দলীয় লোকটির বেশী কুত্তা থাকায় এবং প্রশাসন পক্ষে থাকায় তারা ২০ টা বিলাই মারতে পারল, ২২ টা আহত হল এবং বাকিরা পালিয়ে গেল। এছাড়া সারা বাজার আগুনে পুড়ে দিল……… একটা খবরের মত খবর হল, শুরু হল মিডিয়ার ব্যস্ততা। সরকার দলের কুত্তার মালিক তার কুত্তা হত্যার বিচার ছেয়ে মামালা করল। আর বিলাইয়ের মালিক বিরোধীদলের হওযার কারনে প্রশাসন মামলা নিল না………. মিডিয়ার সামনে সরকারী দল বিবৃতি দিল, " সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এটা করেছে। আর বিরোধী দল বিবৃতি দিল, " সরকার বিরোধীদল রাখতে চায় না, তাই এমন দমন পীড়ন চালাচ্ছ "। সরকার এই ঘটনার সুস্ঠু তদন্তের জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করল…… হাইকোর্টে রূল জারি হল…… ইত্যাদি…. ইত্যাদি…..

বিরোধী দলীয় বিলাইয়ের মালিক ৫ বছর পর প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নিলেন………..

এইসব দেখে, আমাদের সেই লোক যিনি কিনা শয়তানকে অভিযোগ করেছিলেন তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন…. আর শয়তান হাসি দিয়ে বলল আমি কি করেছি? আমি তো সামান্য করলাম মাত্র। আর তোমরা মানুষরা সেই সামান্য নিয়ে কত কি করলা। আসলে আমি তোমাদের কাছে ব্যার্খ…… তোমাদেরকেই আমার গুরু মানা উচিত।