এত বড় অভিমান করতে নেই!

বিন্দুবিসর্গ
Published : 16 July 2012, 08:48 AM
Updated : 16 July 2012, 08:48 AM

স্বহন্তারক হলেন সরকারের একজন বড় কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন ওএসডি থাকা, জুনিয়রদের চোখের সামনে সিনিয়র হতে দেখা, সহকর্মীদের টিপ্পনী, আত্বীয় পরিজনের ব্যথিত মুখ, আত্মসম্মান সবকিছু মিলিয়ে তিনি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। আত্মহত্যা করলেন গলায় ফাস লাগিয়ে। একটি সংবাদ ছাপা হল। আমরা পড়লাম। আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে কত মামলা হতে দেখি। গ্রেফতারও হয়। বিচারও হয়। এই ঘটনায় কেউ মামলা করলেন না। অথচ মামলা হওয়ার মত উপাদান ছিল যদিও আইন সম্পর্কে আমার ধারনা কম বা নেই। রাষ্ট্রের বিরূদ্ধে কি মামলা চলতে পারে না? অথবা যে ব্যক্তি যার স্বাক্ষর এ তার পদোন্নতি হয়নি তার বিরুদ্ধে? যদি উনার বিরূদ্ধে এমন কোন গুরুতর অভিযোগ থাকে যা পদোন্নতি দেবার পথে মারাত্বক প্রতিবন্ধক তা হলে আমার কোন কথা নেই । মাঝে মাঝে মহামান্য আদালত কিম্বা কোন আইনজীবি নিজ উদ্যোগে (সুয়ো মুটো) কত মামলা করে থাকেন। এ ব্যাপারে উনারাও কি কিছু করতে পারতেন বা পারেন না? স্পষ্টতই সরকারী চাকুরিজীবী দু ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এই দু ভাগের মাঝখানে অনেক নিরীহ সাধারন লোকজন মুখ বুজে জীবনের তাগিদে চাকরি করছেন।

তাদের হয়ত মান নেই, জীবনটাই আছে। যারা ৫ বছর ধরে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে আর যারা পরের ৫ বছরের অপেক্ষায় থাকে তাদের এমন স্বহন্তারক হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ দেখি না। তারপরও যদি কেউ এমনটি করে তাহলে আমি তাকে আহাম্মক আর অবিবেচকই বলব। তবে নোম্যানস ল্যাণ্ডের কেউ এ কাজটি করলে তা আমাদেরকে ভাবাই বৈকি। হাজার খানেক লোক ওএসডি থাকলেও সরকারী যন্ত্রের কোন কাজ থেমে থাকে না। দশ জন লোকের জায়গায় বিশজন লোক নিয়োগ দিলে দশ জন সব সময় ওএসডি থাকবে। তাদেরকে জনগনের টাকায় সম্মানী দিতে হয়, যা একটি অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। এই দশজনকে অন্য কোন কাজে লাগালে তাদের সেবা পেত জনগন। যদি কারো বিরুদ্ধে গুরতর কোন অভিযোগ (দেখতে নারি চলন বাকা প্রবাদটি উহ্য থাকল) না থাকে এবং তিনি পদোন্নতির যোগ্য হন তবে তিনি যে দলেরই হোক না কেন তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিত। না হলে এমন স্বহন্তারকের মিছিলে অনেকেই যোগ দিতে পারেন। হয়ত একদিন অসংখ্য মামলাও হতে পারে। ওএসডি হলে এমন কোন সৃষ্টিশীল কাজ যা করতে চেয়েছেন সময় পাননি, সেই না করা কাজগুলো করে ফেলতে পারেন । উপদেশ মার্জনীয়— । যারা বিভিন্ন কারনে ওএসডি আছেন বা হবেন তাদের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ আপনারা এত বড় অভিমানি হবেন না। আমরা আপনাদের মৃত্যুতে কষ্ট পায়। দয়া করে আমাদের কষ্টের পুনরাবৃত্তি করবেন না।