ভয়ের কথা
অসহায় জীবন ও তার সঙ্গীদের গড় বয়স ২০ বছরের বেশি হবে না। এত অল্প বয়সেই তারা তাদের বয়সের চেয়ে বেশি হত্যার সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে। হত্যা তাদের কাছে একবেলা ভাত খাওয়ার মতই। কোন অনুশোচনা নেই মনে। কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেই হল, কেন মারবে, তার অপরাধ কি এসকল বিষয় তাদের কাছে অবান্তর।
ভাড়াটে খুনিদের একটি বড় অংশের যোগান হয় এই পথশিশুদের মধ্য থেকে। ভাড়ায় খুন করা, ডাকাতি ছিনতাই করা, মাদক বহন করা লোকগুলোর জীবন ইতিহাস অসহায় জীবনদের মতই।
রাজনৈতিক নেতারা হীন স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করছে । অস্ত্র আর কিছু টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক কর্মে তাদের খুনী হয়ে উঠতে দেখা যায়। নেতাদের ছত্রছায়ায় এক সময় হয়ে উঠে ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী।
অবাধ মাদকগ্রহন ও অনিরাপদ যৌনতা তাদের মধ্যে কিছু রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে যা সংক্রামিত হয়ে মহামারীর আকার ধারন করতে পারে।
আশার কথা
আশার কথা হল সরকারী ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কিছু বেসরকারী উদ্যোগে পথ শিশুদের শিক্ষাপ্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতে ভেড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যদিও সে চেষ্টার গুনগত মান নিয়ে আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে সরকারী শিশু পরিবার বা সংশোধনাগারের অবস্থা একেবারেই হতাশাজনক বলা যায়। কিছু উদ্যোমী তরুন/তরুনী বিশেষতঃ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু অতিমাত্রাই আশাবাদি মানুষের প্রচেষ্টা সত্যিই আমাদের মনে আশা জাগায়। সমাজের বিত্তবানরা এ বিষয়ে তাদের আর্থিক সহযোগীতা দিয়ে শুধু পথশিশুদের উন্নয়ই নয়, তাদের নিজ জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টিরও উন্নয়ন করতে পারেন বলে আমার মনে হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি যোগ্যতা ও ইচ্ছানুযায়ী কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। এক কথায় উপার্জনের উপায় নিশ্চিত করতে হবে। প্রচলিত আইনের প্রতি তাদেরকে সচেতন করার উপায় হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তাগন বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে আমার মনে হয়। এতে করে পুলিশের সাথে তাদের দূরত্ব কমবে এবং তারা অন্যের দ্বারা নির্যাতিত হলে আইনের আশ্রয় লাভে উৎসাহী হবে যা আরেকটি অপরাধকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
দেশের সমাজবিজ্ঞানী, অপরাধ বিজ্ঞানী, পুলিশ ও সমাজের বিত্তবান প্রতিনিধিগন একত্রিত হয়ে একটি বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সমস্যার একটি সুন্দর ও মানবিক সমাধানের পথ খুজে বের করবেন বলে আমি আশাবাদী।