খরচ বেশি পড়ায় রাজধানীতে পাতাল রেল প্রকল্প থেকে সরে এসেছে সরকার। যানজট নিরসনে তার বদলে স্কাই রেল (এমআরটি-৬) প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জাপানের সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে প্রায় ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ১২ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ অর্থ সহজশর্তে ঋণ দেবে জাপান। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে এ প্রকল্প করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে উত্তরা থেকে মিরপুর হয়ে এটি বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত চলবে। প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর থেকে এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ৪ বছর।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির বৈঠকে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, রাজধানীতে যানজট নিরসনে আমাদের গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিতে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ প্রকল্পের মাধ্যমে গণপরিবহন ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নতি ঘটবে বলে আশা করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন যোগাযোগ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, বিআরটিসি, রেলওয়ে, সেতু বিভাগ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিবি) রাজউক, ওয়াসা, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সেতু বিভাগের সচিব মোশারফ হোসেন ভূইয়া, ডিটিসিবি’র অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক ড. এসএম সালেহউদ্দিন।
বৈঠকে জানানো হয়, এমআরটি-৬ বা মাস্ট রেপিড ট্রান্সপোর্ট নামের এই দ্রুতগতির স্কাই রেলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা পেরুতে এটি সময় নেবে ৪৫ মিনিট। এটি উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট রোড হয়ে পল্লবী, কাজিপাড়া, বিজয়সরণি, বাংলামোটর, শাহবাগ, রমনা পার্ক, ৩ নেতার মাজার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তোপখানা রোড হয়ে মোট ১৮টি স্টেশন ধরে মতিঝিল (বাংলাদেশ ব্যাংক) পেঁৗছবে। পরবর্তীতে এটি সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত করা হবে বলে জানানো হয়। এই ট্রেনে প্রতি কিলোমিটারের জন্য ভাড়া পড়বে আড়াই টাকা।
অর্থমন্ত্রী জানান, রাজধানীতে গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ২৫ বছরের একটি কৌশল পরিকল্পনা রয়েছে। ২০০৪ সালে করা এ পরিকল্পনার মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজ ফ্লাইওভার, স্কাই রেল এসব প্রকল্পের আলোচনা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, রাজধানীতে গণপরিবহন ব্যবস্থাপনার জন্য কোন প্রতিষ্ঠান নেই। পৃথকভাবে রেলওয়ে, বিআরটিসি, ডিটিসিবি এগুলো দেখছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি গণপরিবহন কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া ২৫ বছরের এই কৌশলগত গণপরিবহন পরিকল্পনা শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এমআরটি-৬ এয়ারট্রেন নিয়ে জাপান সমীক্ষা করছে। সোমবার জাপানের এম্বাসেডর ও জাইকা প্রতিনিধির সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এসব বিষয়ের অগ্রগতি হচ্ছে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এটির কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, যানজট নিরসনে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে যে জমি লাগবে সেসব জমি রাজউক, ওয়াসা, বিটিআরসি বিভিন্ন সংস্থার কাছে আছে। তারা বলেছে জায়গা দিতে কোন সমস্যা হবে না।
মন্ত্রী জানান, রাজধানী থেকে প্রাইভেটকার তুলে দেয়ার কথা আমি বলেছি; কিন্তু এর মানে এই নয় যে, এটি এখনি উঠে যাবে। যে পর্যন্ত গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি না হচ্ছে সে পর্যন্ত তো প্রাইভেটকার তুলে দেয়া যাবে না। আর গণপরিবহন ব্যবস্থা ঠিক থাকলে রাজধানীর ৫০ ভাগ যানজটমুক্ত হয়ে যাবে।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, আমরা পাতাল রেল করার কথা ভাবছি না। কারণ এটি বাস্তবায়নে যেমন খরচ বেশি পড়বে তেমনি এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচও বেশি।
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী জানান, গণপরিবহন ব্যবস্থায় দু’ধরনের যানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর একটি এয়ারট্রেন অপরটি হচ্ছে বাস। দ্রুতগতির এ দুটি যান ঠিকমতো চলাচল করলে এমনিতেই প্রাইভেটকার থাকবে না। কারণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হচ্ছে বাসের জন্য প্রাইভেটকারের জন্য না।
সেতু বিভাগের সচিব মোশারফ হোসেন ভূইয়া বলেন, স্কাই রেল প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপান সরকার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। তারা এবার পদ্মা সেতুর জন্য ঋণ দিচ্ছে, আগামীতে স্কাই রেল প্রকল্পে ঋণ দেবে। সহজশর্তে মোট প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৭০ ভাগ অর্থ জাপান থেকে পাওয়া যাবে। বাকি অর্থ দেবে সরকার।
ডিটিসিবি’র ড. এসএম সালেহউদ্দিন বলেন, স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের অংশ হিসেবে আমরা এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়াও রাজধানীতে কিছু বাইরোড তৈরি করছি। হাতিরঝিল প্রকল্পটি এর মধ্যে একটি। এটি হলে বাংলামোটর থেকে গাড়িগুলো ওই পথে চলে যাবে। এটিও যানজট নিরসনে সহায়তা করবে। এছাড়া গাজীপুর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কপথ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি সমীক্ষা হচ্ছে। গণপরিবহনের জন্য কী পরিমাণ যান, কতটা সড়ক, কত যাত্রী পাওয়া যাবে এগুলো নিয়েও সমীক্ষা হচ্ছে।
——————————————————————————-
যানজট নিরসনে নয়া প্রকল্প স্কাই রেল
প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় ১২ হাজার কোটি টাকা সময় লাগবে ৪ বছর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হবে
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
দৈনিক সংবাদ, বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১১
কৌশিক আহমেদ বলেছেনঃ
গ্রেট। শুনতে তো ভালোই শোনাচ্ছে।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেনঃ
আসলেই ! 😮 😮 শুনতে তো ভালোই শোনাচ্ছে। 😕 😕
ফারুক বলেছেনঃ
স্কাই রেলে উত্তরা হইতে মতিঝিল মাত্র ২২ কিঃমি এর জন্য ১২হাজার কোটি টাকায় ব্যয়!
উত্তরা থেকে মতিঝিল, উদাহরণ স্বরূপ সদরঘাট থেকে মতিঝিল, বাড্ডা নতুন বাজার হতে মতিঝিল, কল্যাণপুর হতে মতিঝিল এই ভাবে শুধুমাত্র মতিঝিলে বিভিন্ন প্রান্ত হতে সহজ লিংক দেওয়ার জন্য কত হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এবং কত বছরে সম্ভব এই ছোট্ট রাজধানীর জন্য ? যদি স্কাই রেলই ভাল প্রকল্প হয়ে থাকে তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প কেন গ্রহন করা হলো ?
আবার ঢাকাকে চাপ মুক্ত করতে যদি বিকেন্দ্রীকরণ করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় তবে এত ব্যয় বহুল প্রকল্প গ্রহনের কি প্রয়োজন ? ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে তখন ঘন্টায় ৬০হাজার ক্যাপাসিটির স্কাই রেল প্রয়োজন পড়বে না। পরিশেষে হয়তো স্কাই রেলেও লোকসান গুনতে হতে পারে বছরের পর বছর।
আসলে যানজট নিরসনে সঠিক সিদ্ধান্ত / প্রযুক্তির প্রয়োজন। শুধু প্রকল্প গ্রহনই এর সমাধাণ নয়। এগুলোতে অর্থ ও সময়ই ব্যয় হতে পারে কিন্তু সমাধান না হওয়ার আশংকাই বেশি।
“ফারুক-ইকরাম প্রযুক্তিই যানজটের প্রকৃত সমাধান”
“যানজট নিরসনে জনস্বার্থে আমাকে একটু সুযোগ দিন!
——– মোঃ ফারুক ———- ০১৯২৭৩৭৪৭২২
white বলেছেনঃ
😀
let’s see starting sky rail. it can’t be true if infrastructure should not be changed first..
lets dream for it
ফারুক বলেছেনঃ
thanks brother for important comments
শিবলী বলেছেনঃ
শুনে ভাল লাগে। যদি দখতে পাই তাহলে আরও ভাল লাগবে।
Software Company in Bangladesh
ফারুক বলেছেনঃ
স্কাই রেলে উত্তরা হইতে মতিঝিল মাত্র ২২ কিঃমি এর জন্য ৪ বছর সময় ১২হাজার কোটি টাকায় ব্যয়!
উত্তরা থেকে মতিঝিল, উদাহরণ স্বরূপ সদরঘাট থেকে মতিঝিল, বাড্ডা নতুন বাজার হতে মতিঝিল, কল্যাণপুর হতে মতিঝিল এই ভাবে শুধুমাত্র মতিঝিলে বিভিন্ন প্রান্ত হতে সহজ লিংক দেওয়ার জন্য কত হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এবং কত বছরে সম্ভব এই ছোট্ট রাজধানীর জন্য ? যদি স্কাই রেলই ভাল প্রকল্প হয়ে থাকে তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প কেন গ্রহন করা হলো ?
আবার ঢাকাকে চাপ মুক্ত করতে যদি বিকেন্দ্রীকরণ করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় তবে এত ব্যয় বহুল প্রকল্প গ্রহনের কি প্রয়োজন ? ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে তখন ঘন্টায় ৬০হাজার ক্যাপাসিটির স্কাই রেল প্রয়োজন পড়বে না। পরিশেষে হয়তো স্কাই রেলেও লোকসান গুনতে হতে পারে বছরের পর বছর।
আসলে যানজট নিরসনে সঠিক সিদ্ধান্ত / প্রযুক্তির প্রয়োজন। শুধু প্রকল্প গ্রহনই এর সমাধাণ নয়। এগুলোতে অর্থ ও সময়ই ব্যয় হতে পারে কিন্তু সমাধান না হওয়ার আশংকাই বেশি।
“ফারুক-ইকরাম প্রযুক্তিই যানজটের প্রকৃত সমাধান”
“যানজট নিরসনে জনস্বার্থে আমাকে একটু সুযোগ দিন!
——– মোঃ ফারুক ———- ০১৯২৭৩৭৪৭২২