ঘোড়া বনাম গাধা!

ইমরান মল্লিক
Published : 14 Sept 2011, 10:27 AM
Updated : 14 Sept 2011, 10:27 AM

লেখার পূর্বে ছোট একটা গল্প বললে পাঠকদের বুঝতে সুবিধা হবে———-
একদিন এক বাবা তার ছেলেকে নেয়ে গেছে ঘোড়ার রেস দেখাতে। তো ঘোড়ার রেস যথারীতি শুরু এবং শেষ হল। বাড়ি ফেরার পথে ছেলে বাবাকে জিজ্ঞাস করল বাবা ঘোড়া গুলি এত আস্তে আস্তে দৌড়াল কেন? বাবা ছেলেকে বলল- ঘোড়া গুলি আজ অনেক খাওয়া-দাওয়া করেছ তো তাই ঠিক মত দৌড়াতে পারছেনা। এ গল্প থেকে তিনটি জিনিস পাওয়া যায় –
১. ঘোড়ার দায়িত্ব হলো মানুষকে আনন্দ দেয়া।
২. মানুষের দায়িত্ব হলো ঘোড়াকে করতালির মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করা। এখন গাধাকে দিয়ে যদি ঘোড়ার রেস দৌড়ানো হয় তবে সেই গাধা কোনদিন রেস জিততে পারবেনা।
৩. ঘোড়ার পরিচর্যা যে করে তারও রয়েছে অনেক কর্তব্য।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির সাথে উপরের গল্পটির ভারী মিল পাওয়া যায়। পাঠক আপনারা সম্প্রতি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন বর্তমান সম্মানিত মন্ত্রী মহাদয়ের কথা ও কাজের মধ্যে কোন মিল পাওয়া যায় না। আবার অনেকে এমন কথা বলেন যা উনি নিজেও হয়তো জানেন না উনি কি বলছেন এবং কেনই বা বলছেন।

আসলে ওনাদের সমস্যাটা কোথায়? নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল বর্তমান সময়ের সবচাইতে জনপ্রিয় আইকন হয়ে উঠেছেন। যে মন্ত্রী বলে কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া যেতে পারে এবং আমাদের যোগাযোগমন্ত্রী তার সাথে সাথে বলেন গাড়ি চালকদের শুধু কয়েকটি সিগন্যাল চিনলেই হবে। যেমন-গরু, ছাগল ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে, চালকেরা মানুষকে গরুই ভাবে নইলে এত মূল্যবান প্রাণ বলি দিতে হবে কেন?

যেখানে একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর কাজ হবে জনগণের সেবা করা সেখানে তিনই কিনা জনগণকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন। এটা আমরা কোন দেশে বাস করছি?
অপরদিকে জনগণের কাজ হবে জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য ও সমস্যা সমাধানের উপায় দেখাতে সহযোগিতা করা।

যারা নাকি মন্ত্রীদের লালন পালন করেন তাদেরও রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। শুধু গাধাকে ঘোড়া বানিয়ে ছেড়ে দিলেই ঘোড়ার দায়িত্ব পালনে সফলতার মুখ দেখবে এমন ভাবনাটা যে গাধা বার বারই ভুল প্রমান করছে!