“হরতাল” না কি মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ!

ইমরান মল্লিক
Published : 23 Sept 2011, 01:42 PM
Updated : 23 Sept 2011, 01:42 PM

গত বাইশেঁ সেপ্টেম্বর ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হল প্রধান বিরোধীদলের ডাকা ১১ ঘণ্টার হরতাল। প্রতিটি হরতালের পিছনেই এক বা একাধিক ইস্যু বা কারণ থাকে। বিনপি এ হরতালের জন্য বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বলছে তারা যুদ্ধু অপরাধীদের বাঁচাতে এবং জামাতকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে। যাইহোক হরতাল ডাকা হয়ছে এটাই আমার আলোচনার বিষয়।

বিনপি বলছে তারা জনগণের দুঃখ ও দুর্দশার কথা চিন্তা করেই হরতাল ডেকেছে। আমার কথা হলো যেখানে দ্রব্যমূল্য ও পরিবহণ ব্যয়ের কশা ঘাতে মানুষের জীবন কাটছে চরম হতাশায়। সেখানে তারা (বিনপি) বলছে জনগণের দুঃখ ও দুর্দশার কথা চিন্তা করেই জন্যই হরতাল ডেকেছে। তাহলে তো হরতাল দ্বারা জনগণের সুবিধা হওয়ার কথা। তা কি হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর কে দিবে? হরতাল দ্বারা যদি জনগণের কিছুটা হলেও সুবিধা পেত তাহলে বুঝতাম যে হরতাল ডাকার পেছনে যুক্তি আছে।

হরতালের কারনে জনগণের দুঃখ ও দুর্দশার সুবিধা তো দূরের কথা বরং আরও বেশী ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমান বাজারে এমনেতেই রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ঊর্ধ্ব গতি এবং তার সাথে গুনতে হয় বাড়তি পরিবহণ ভাড়া। হরতালে এই সমস্যাগুলি যেন হুঁ হুঁ করে বেড়ে যায়। হরতাল হলে কাঁচা বাজার, পরিবহণ ব্যয়, মাছ, মাংস সহ প্রায় সব পণের দামই বেড়ে যায়। তাহলে এই প্রমাণ হলো না যে- হরতাল কোন ভাবেই জনগণের জন্য কাম্য নয়।

আমরা জানি যে বাংলাদেশের মত গণতান্ত্রিক দেশে "হরতাল" গনতন্ত্র টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। কিন্তু যে হাতিয়ারে জনগণের মাথা কাটা যায় সে হাতিয়ার আমাদের কারও প্রত্যাশিত নয়। যে হাতিয়ার আজ কোটি কোটি মানুষের রক্তে রঞ্জিত সে হাতিয়ার আমরা কোনভাবেই চাইতে পারিনা। হাতিয়ারের ব্যবহার হবে স্বতঃস্ফূর্ত। তা কি হয়েছে? হয়নি।

একবার ভেবে দেখুন হরতালের কারনে কত হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। আবার কেউ বা পাচ্ছে চরম আঘাত। যারা নাকি দিন আনে দিন খায় তাদের অবস্তা চিন্তা করে দেখুন। নিম্নশ্রেণীর অনেকেরই হয় তো না খেয়ে থাকতে হয় এই দিনটিতে।

হরতাল তাহলে কাদের জন্য? দুইটি রাজনৈতিক দলের প্রতিহিংসার আগুনে আর কতকাল আমরা, আমাদের মত সাধারণ জনগণ জিম্মি থাকবো? আমরা কি এই জন্য তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি? যাদের নির্বাচিত করি তারাই কিনা আমদের চিবুক টিপে রক্ত পান করছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই। আমার এ লেখায় হয়তো হরতাল বন্ধ হবেনা কিন্তু এইটুকু বলতে পারি যারা এই সাধারণ লেখাটুকু পরবেন তারা অন্তত হরতালকে বয়কট করুন তা না হলে বাংলাদেশ অনেক পিছেয়ে পরবে। তার দায় দায়িত্ব হয়তো আপনাকে আমাকে একদিন নিতে হবে।