মিথুন রাশির জাতক বলেই…

নীলকণ্ঠ জয়
Published : 25 August 2012, 04:36 AM
Updated : 25 August 2012, 04:36 AM

রাশিচক্রে বিশ্বাস করুন আর নাই করুন।তার যে কিছুটা প্রভাব সমগ্র মানব জাতির উপর আছে এতটুকু নিশ্চয়ই মানবেন সবাই। জন্মসূত্রে আমি মিথুন রাশির জাতক।মিথুন অর্থ জমজ।অর্থাৎ নারী-পুরুষ এই দুই এর সংমিশ্রণ।২২মে থেকে ২১ জুন এর মাঝেই এই জাতক-জাতিকাদের আবির্ভাব।

আর তাই শর্তমতেমিথুন রাশির জাতক বলেই, আমার প্রকৃতি এবং স্বভাব বুধ নিয়ন্ত্রিত।জন্মগ্রহনের ক্ষণটাও বুধবারের শেষরাত।জ্যোতিষশাস্ত্র মতে মৃগশিরার ৬ ডিগ্রী ৪০ মিনিট, আদ্রার ১৩ ডিগ্রী ২০ মিনিট এবং পুনর্বসুর ১০ ডিগ্রী নিয়েই আমি গঠিত।যদিও গঠনতত্ত্বটি সময়-কাল ও পাত্র ভেদে পরিবর্তনীয়।এ রাশির মধ্যে যেমন পুরুষের দৃঢ়তা, কর্মশক্তি ও উৎপাদনশীল শক্তি রয়েছে, তেমনি রয়েছে নারীসুলভ নম্রতা, ভালবাসা এবঙ স্নেহমমতার রহস্যময় দুর্বলতা।আমার ক্ষণস্থায়ী তীব্র রাগই তা প্রমাণ করে।

মিথুন রাশির জাতক বলেই, আমার দৈহিক গঠন নাতিদীর্ঘ, নাতিহৃস্ব।অর্থাৎ না দীর্ঘকায়,না খর্বকায়।দেহ প্রয়োজন মোতাবেক পুষ্টকায়।যদিও দীর্ঘ ও উচ্চ নাসিকা এ জাতকের বৈশিষ্ঠ্য এক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা রয়েছে।তবে খর্বাকার ও নাতিদীর্ঘও নয়।রাশি অনুযায়ী চক্ষুদ্বয় উজ্জ্বল, পেশীদ্বয় মাংসল এবং ত্বক ঈষৎ হরিদ্রাবর্ণের।পুরুষদের কপালের সমুখ অংশ থেকে চুল পড়ার একটা ব্যাপার রয়েছে (এটা সম্ভবত তাদের মস্তিষ্কে প্রবাহিত হাজার চিন্তার ফল) যেটা এখনো বুঝিনি কিন্তু সম্ভাবনা আছে।

মিথুন রাশির জাতক বলেই, আমি একটু বেশিই প্রশংসাপ্রিয়। তাই অপরের প্রশংসাবাণী বালকের মত উৎফুল্ল করে তোলে আমাকে।যে কোন অবস্থায় যে কোন লোকের সঙ্গে বেশ ভালভাবে মিশতে পারার গুণটা এ রাশির কল্যাণেই পেয়েছি এবং খুব সহজেই সকলের বিশ্বাস অর্জন করাটাও।একই সঙ্গে দুটো কাজে লেগে থাকা মিথুনের আর একটি স্বভাব। আমার ক্ষেত্রেও এটা হয়।একটা কাজ শেষ না করেই আরেকটি কাজে জড়িয়ে পড়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সফল হই তবে ততক্ষণে কাজগুলোর আসল প্রয়োজণিয়তা প্রায়শই শেষ হয়ে যায়। যেহেতু জাতক নির্ভীক-স্পষ্টবাদী,আমিও ব্যতিক্রম নই। তবে তার পরিণামে বহুবার খারাপ ফলাফলের সম্মুখিন হয়েছি।

মিথুন রাশির জাতক বলেই, সবসময় দেরি করে গন্তব্যে পৌছানোয় আমার একটা বিশেষ খ্যাতি আছে।আজকের কাজ কালকে করবো বলেও ফেলে রাখাটা আমার অভ্যাস।তাই নানাকারণে পিছিয়ে পড়ি সবক্ষেত্রেই।যদিও গুছিয়ে নিতেও সময় লাগেনা।

মিথুন রাশির জাতক বলেই,আমার মানসিক দ্বন্ধ অত্যন্ত বেশী। কোন কিছুতেই মনকে স্থির করতে পারি না। আত্ম বিশ্বাস থাকে প্রচন্ড। কিন্তু তার চেয়ে না পাওয়ার ভয়টাই বেশি কাজ করে। নিজে মানতে পারি আর নাই পারি অন্যকে জ্ঞান দেবার অভ্যাস আছে খুব।যুক্তিতর্কে যথেষ্ট পটু।তাই বন্ধুবান্ধবেরা এ ব্যাপারে একটু দুরত্ব রেখে চলে।বানিয়ে বানিয়ে,ইনিয়ে বিনিয়ে বিশ্বাস করার মতো গাল্ গল্প বলার স্বভাবটাও রাশিগুণে প্রাপ্ত। অধ্যবসায় খুব প্রবল।এ কথাটি আমার ক্ষেত্রে খাটেনি।তবে জেদ করলে তা করে ছাড়ি এই অর্থে কথাটি মেনে নেয়া যায়। জ্যোতিষশাস্ত্র বলে সাহিত্য, বিজ্ঞান, জ্যোতিষ, চিকিৎসাশাস্ত্রের দিকে জাতকের ঝোঁক থাকে অত্যন্ত তীক্ষ্ণ। তা আমার ক্ষেত্রে যথার্থই সত্য নইলে কি আর বাবার কথা অমান্য করে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই আর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ভেষজ বিদ্যা(ফার্মেসী) পড়তে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি?

মিথুন রাশির জাতক বলেই, আমার বন্ধুভাগ্য আসলেই ভালো।সংখ্যায় তা অনেক বেশি এবং তার মাঝেই আমি খুজে পেয়েছি প্রকৃত কিছু বন্ধু। তবে রাশিমতে সতর্ক না হওয়ার ফলশ্রুতিতে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বারবার।

মিথুন রাশির জাতক বলেই, আমার অর্থ ভাগ্য পাহাড়ের মতো উচু-নিচু।যখন অর্থ থাকে তখন আমি থাকি জ্ঞানশু্ণ্য,আর যখন থাকে না তখন থাকি নিরূপায়।মাসের শুরুতে বিলাসিতা আমাকে পেয়ে বসে,অর্ধেক মাস না পেরুতেই মরুভুমির মতো খাঁ খাঁ করে পকেট।রাশিজাত স্বভাব ,তাই বারবার হিসেবী হওয়ার প্রতীজ্ঞা করেও লাভ হয় না। ২৪ বর্ষ থেকে মিথুনের জাতকের উন্নতি আরম্ভ হয়। সবে সেটায় পা ফেলেছি।দেখা যাক কি হয়।কোন নতুন ফন্দি-ফিকির করে বা কোন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থ আয় করার চেষ্টা এ রাশির থাকে। তা যথেষ্ট করেছি,কিন্তু ফলপ্রসু হয় নি।

মিথুন রাশির জাতক বলেই, স্নায়ুপীড়া ও বাচালতা আমার মধ্যে বিদ্যমান ছোটবেলা থেকেই।বিবিধ আহারের প্রতি ঝোঁকও একটু বেশী।যদিও বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে নিম্নগামী হবে তার প্রমাণ পেতে শুরু করেছি ইতিমধ্যে।সর্বক্ষেত্রে সিংহ ও মিথুন রাশির সাথেই সুসম্পর্ক থাকবে এমন্টাই জ্যোতিষবিদদের গবেষণা।যদিও অন্য রাশির সাথেই আমার বন্ধুত্ব গাঢ় হয়েছে হয়েছে।তাই এ ক্ষেত্রে দ্বি-মত আছে তাদের সাথে।

পরিশেষে,যে জীবনে পা রাখিনি সে জীবনের শাস্ত্রীয় মতটা এ রকমঃ দাম্পত্যজীবন বিশেষ ভাল হয় না। গুপ্তপ্রেমের দিকে জাতক খুব বেশী আকর্ষণ বোধ করে। তাছাড়া যৌবনের প্রারম্ভে কোন অবাঞ্ছনীয় ব্যাপারে (২৩-২৮) জাতক আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। স্ত্রী সুন্দরী ও মনোহারিণী হয়ে থাকে। জাতক যাকে ভালবাসবে তাকে অকৃত্রিম ভাবেই পেতে চাইবে। মিথুনের জাতকের ভালবেসেই বিবাহ করা উচিত(সম্ভাবনা শূন্যের কোটায়)। বিবাহের পর জাতকের মধ্যে স্থিতপ্রজ্ঞতা ফিরে আসে। প্রেম জাতককে মহান করিয়া তোলে। সন্তান সংখ্যা ১-৩টির মত। কন্যাই হয় বেশি। ২৩ থেকে ২৮, ৩১ থেকে ৩৪ মধ্যে বিবাহ করা উচিত।(জানিনা কি আছে ললাটে)।

[আমার এ রাশিচক্রের বিশ্লেষণটি Bangladesh Zodiac Signs Astrology Consultancy-এর তথ্যের ভিত্তিতে করা।যাদের একটি ওয়েভ পোর্টাল আছে।যেটির লিঙ্ক নিচে দেওয়া হলো।]