দুই নেত্রীর প্রতিযোগিতা হউক দেশ গড়ার প্রতিযোগিতা

এম এ হাশেম
Published : 19 Feb 2012, 07:13 AM
Updated : 19 Feb 2012, 07:13 AM

দেশের দুই প্রধান নেত্রী শনিবার ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনা সন্দ্বীপ সফরে এসে বিকেলে সরকারি হাজী আব্দুল বাতেন কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন আর মাননীয় বিরোধী দলের নেত্রী সাবেক প্রধান মন্ত্রী বিএনপি'র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লক্ষীপুর সফরে এসে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন। দুই নেত্রীকে ধন্যবাদ কারন কোন ধরনের সহিংস ঘটনা ছাড়া তাঁদের সফর শেষ করেছেন। দুপুরে 'সোলার হোম সিস্টেম' বিতরণ এবং বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন কর্মসূচি উদ্বোধন শেষে দীর্ঘ বক্তৃতায় তিনি দেশের বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রাধান্য দিয়াছেন এবং আগামী ২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালের মধ্যে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আর ২০২১ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় আশার কথা বলেছেন এ বছরের মধ্যেই দেশে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে। বিদ্যুৎ সমস্যার মতো একটি জাতীয় সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর আন্তরিকতা দেখে আমরা সত্যি আনন্দিত। কিন্তু প্রধান মন্ত্রীর এই আন্তরিকতা যেন কোন অশুভ শক্তির জালে আটকে আমাদের আনন্দ বিলিন না হয়। তাঁহার পরিকল্পনা মতো আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি এবং ২০২১ সালেন মধ্যে বাংলাদেশ যেন বিদ্যুতে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারে। এটাই বাংলাদেশের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা।

পক্ষান্তরে মাননীয় বিরোধী দলের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী নিয়ে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে হাজির হন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে মাঠ গরম করার চেষ্টা করেন। বোধ করি লক্ষীপুরের জনগণের রক্তে হীম ধরেছে তাই গরম করতে পারেন নি। তত্ত্বাবধায়কের দাবি না মানলে আগামী ১২ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশের পরে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে বিদায় করবেন বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন। তবে সুরে আগের তুলনায় নমনীয় ভাব দেখা গেছে বলে মনে হয়। কারন তিনি বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক বা অন্য যে নামেই হোক, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে অন্য নামের কথা আসায় তত্ত্বাবধায়কটা গৌণ হয়ে গেছে। আমরাও চাই একটা সুরাহা হউক। রক্ত নিয়ে হুলি খেলাটা বন্ধ হউক। দেশের আর কোন মায়ের বুক খালী না হউক। একটা কাজে মাননীয় দেশনেত্রীকে ধন্যবাদ না দিলে নয়। ইতিমধ্যে চাদপুর সফরে এসে সরকারকে নেংড়া লুলা করার ঘোষণা দিয়ে পঙ্গু প্রতিবন্ধী লোকদের অপমানিত করেছেন এবার কিন্তু সে কাজটি করেননি বরং লক্ষীপুরে যাওয়ার পথে দুইজন পঙ্গু ভিক্ষুক রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি গাড়ী থেকে নেমে তাঁদেরকে কিছু টাকা দিলেন। এই না হলে কি দেশনেত্রী হয়। জয় হউক, সুমতি হউক আমাদের দেশনেত্রীর। তবে ২৯শে জানুয়ারী মিছিলে নিহত দুই কর্মীর পরিবারকে কি বলে সান্তনা দিয়ে এসেছেন আল্লাহ মালুম। কি সান্তনার বানী তাঁর কাছে ছিল? আমার মতে পৃথিবীতে এমন কোন বানী নেই, যে বানী দিয়ে সন্তান হারা মাকে সান্তনা দিবেন। একমাত্র আল্লাহ যতক্ষণ সান্তনা না দেন। পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে ফরিয়াদ করি দুই নেত্রীর প্রতিযোগিতা যেন দেশ গড়ার প্রতিযোগিতা হয়।