ডেসটিনির ভাগ্য নিয়ে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা

মাসুম মাহবুব
Published : 22 Nov 2012, 06:20 AM
Updated : 22 Nov 2012, 06:20 AM

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপের সমস্যার সমাধান কবে হবে এ নিয়ে এক ধরনের হতাশা বিরাজ করছে কোম্পানিটির গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। কী উপায়ে তাদের টাকা ফিরে পাবেন বা আদৌ ফিরে পাবেন কিনা, সরকার কি ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন তার উপর নির্ভর করছে এসব বিনিয়োগকারীর ভাগ্য।

'বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, ২০০০ সালে যখন ডেসটিনি যাত্রা শুরু করে তখন গ্রাহক কিংবা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল কম, সদস্য হতে টাকা খরচও কম হতো। সে সময় যদি সরকার এর কার্যক্রমের দিকে কড়া নজর রাখতেন তবে আজকে আর লক্ষ লক্ষ মানুষকে পথে বসতে হতো না।

এ প্রতিষ্ঠানের একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী মিসেস ফিরোজা আফরোজ বলেন, ২০০৬ সালে ৩১ ডিসেম্বর তিনি আট হাজার টাকায় ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশনের আওতাধীন একটি প্রিমিয়ার প্যাকেজ কিনেছিলেন। শর্তমোতাবেক ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ২০০০ টাকা এবং ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি ২০,০০০ সহ সর্বমোট ৩০,০০০ টাকা পাওয়ার কথা। ডেসটিনি গ্রুপের বর্তমান অবস্থায় তিনি হতাশাগ্রস্থ।

জানা গেছে, এই সব এমএলএম প্রতিষ্ঠানগুলো নিত্যনতুন কৌশল আবিষ্কার করেন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য। তাদের চমকপ্রদ উপস্থাপনায় এবং অল্প বিনিয়োগে কম সময়ে বেশি লাভের প্রত্যাশায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে গ্রাহকরা। ডেসটিনি ২০০০ লিঃ যেসব পণ্য বাজারজাত করেছে তার অনেকগুলোই আমাদের দেশের বাজারে নতুন।এগুলোর প্রকৃত বাজার মূল্য কত হবে সে সম্পর্কে গ্রাহকদের সচ্ছ কোন ধারণা ছিলনা। আর সে সুযোগে অধিক মূল্যে এসব পণ্য বিক্রয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আরো জানা গেছে যে, ডেসটিনির সদস্য হতে গেলে সংগ্রহ করতে হয় ৫০০ পয়েন্ট। যারা প্রথম পর্যায়ে সদস্য হয়েছিলেন তারা দু'ভাবে এ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারতেন। ২২০০ টাকায় সরাসরি কেনা যেত ৫০০পয়েন্ট অথবা ৩৫০০ টাকার প্যাকেজ পণ্য কিনতে হতো যার বাজার মূল্য ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকার বেশি নয়। এরপর নতুন গ্রাহকের শুরু হতো মূল কাজ, গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি। লেফ্ট এন্ড রাইট হ্যান্ড পূরণ করতে পারলে গ্রাহক পাবেন ৬২৫ টাকা(২৫% ভ্যাট বাদে) আর কোম্পানির আয় ৪৪০০ টাকা। এভাবে যত গ্রাহক বৃদ্ধি করতে পারবে, আয় তত বাড়বে, বাড়বে পদমর্যাদা- সিলভার, গোল্ড, প্লাটিনাম ইত্যাদি ইত্যাদি। এরপর বিগত ১২ বছরে ৩৯টি কোম্পানি খোলে ডেসটিনি গ্রুপ।

বাণিজ্য মন্ত্রালয় সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীতে কর্মরত তিন জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসক নিয়োগ করে গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের অধিকার নিশ্চিত করায় এখন সরকারের প্রধান বিবেচ্য হওয়া উচিত। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন নিয়ে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন গ্রাহক-বিনিয়োগকারীরা।