সম্বনধটা ছোট মামা নিয়ে এসেছিলেন। সাথে একটা ছবি। বাসার সবার পছন্দ। বিয়ের দিন তারিখও স্থির হল অবশেষে বিয়ের আগের দিন জানান হল পাত্রি পক্ষ এখন আর আগ্রহি নয়। কারণ হিসেবে জানা গেল আমার পেশা তাদের ভারি অপছন্দ। ছেলে পুলিশ এ কথা শুনে মেয়ের কোন একজন আত্মিয় বেকে বসেছেন। তিনি সবাইকে বুঝিয়েছেন পুলিশের সাথে মেয়ের বিয়ে দেয়ার চেয়ে মেয়েকে মেরে ফেল। তার সাথে যোগ হয়েছিল অনেক উদাহরণ। ফল হল এই বিয়ের আগের দিন পাত্রীপক্ষ বিয়ে দিল ভেঙে।
কারো সাথে আর কোন কথা না বলে চলে এলাম।
আর কোন দিনই বাড়ি যাইনি। এরপর চাকরিসূত্রে এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। গত কয়েকদিন আগে বদলি হয়ে ঢাকায় এসেছি।
আকস্মিক থানা ইন্সপেকশনে এসেছি। ওসি তড়িঘড়ি করে ছুটে এলেন। ওসির রুমে ঢুকতেই চমকে উঠলাম। সেই মুখ। পনের বছরের ব্যবধান কিন্তু একদিনের জন্যও ভুলিনি। আমাকে চিনতে পেরেছে বলে মনে হয়নি। পারার কথাও নয়। সংসারের বাস্তবতায় কত কিছুই তো হারিয়ে যায়।
ওসি সাহেব বললেন, ভদ্র মহিলা মামলা করতে চান স্বামীর বিরুদ্ধে।
এখন প্রায় ভোর। সারারাত সিগারেট একটার পর আরেকটা জ্বলেছে হাতে। আমার সারাজীবন ধরে বয়ে বেড়ানো অপমান, লজ্জা আর ক্লেশের অনুভুতিগুলো যেন হাওয়ায় মিলিয়ে দিলাম একটু একটু করে সারারাত ধরে। আমার পনের বছরের সমস্ত শূন্যতা ভরে গেছে জ্বলন্ত সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়ায়।