ব্যর্থতা

বনফুলের বয়ান
Published : 27 May 2012, 06:50 AM
Updated : 27 May 2012, 06:50 AM

"লোডশেডিং আমার জীবনের সবচে আনন্দের কিছু সময় এনে দিয়েছে। জীবনের এই শেষ পর্যায়ে এসে লোডশেডিং এর সেই আলোকিত দিনগুলোকে আবার ফিরে পেতে ইচ্ছে করে" বলছিলেন ইউসুফ সাহেব।

তিনি বলে চললেন , আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। তখন সন্ধ্যার পর নিয়ম করে এক ঘণ্টা বিদ্যুত্‍ থাকতনা। সারাদিন পর বাবা আসতেন অফিস থেকে। আমরা চার ভাই বোন বাবাকে ঘিরে বসতাম। হাতের কাজ সেরে মা ও যোগদিতেন আমাদের সাথে। আমার কাজ ছিল বাবার চুলে বিলি কেটে দেয়া। আমার ছোট ভাইয়ের কাজ ছিল বাবার হাত-পিঠে হাত বোলানো।বাবা তখন গল্প শুরু করতেন। হাসির গল্প। প্রতিদিন একটা করে হাসির গল্প। কোনদিন যদি কোনও কারণে গল্পটা ততটা হাসির না হতো, সেটা নিয়ে শুরু হতো হাসাহাসি। তখন লোডশেডিং শব্দটার সাথে আমার পরিচয় ছিলনা। তবে সারাদিন অনেক খেলাধুলার মাঝেও সন্ধ্যার ওই অন্ধকার সময়টার জন্যে অপেক্ষায় থাকতাম।

"তবে প্রার্থনা করি" তিনি বলছিলেন " আমাদের দেশ লোডশেডিং মুক্ত হোক। আমরা বিদ্যুত্‍ উত্পাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণ হই।আপনারা যারা রইলেন কাজটা আপনাদের। আমি বিশ্বাস করি আপনারা সফল হবেন।"

কথাগুলো বলে বক্তব্য শেষ করলেন ইউসুফ আহমেদ যিনি বিদ্যুত্‍ অধিদপ্তর এর সর্বোচ্চ কর্তা ছিলেন এবং যাদেরকে বিদ্যুত্‍ সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থতার জন্যে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাদের অন্যতম।

যারা ঘরোয়া ভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন শুধু তারা জানেন এই অসাধারণ সৎ আর কর্মনিষ্ঠ মানুষটার এমন বিদায় প্রাপ্য ছিলনা।