গণতান্ত্রীক দেশে চলছে অগণতান্ত্রীক শাসন

মাহবুবুর রহমান
Published : 2 April 2012, 04:42 PM
Updated : 2 April 2012, 04:42 PM

আমাদের জানা দরকার গণতন্ত্র আসলে কি জিনিস, এটা কোন খাবার না পুতুল। এটাকে নিয়ে একটু খেললাম তাই না ?
না এটি কোন খেলার পুতুল নয়। এটাকে নিয়ে দয়াকরে কেউ খেলবেন না।

গণতন্ত্রর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে আব্রাহাম লিংকন বলেন "জনগনের সরকার, জনগনের দ্বারা পরিচালিত সরকার এবং জনগনের স্বার্থে পরিচালিত সরকার পৃথিবী থেকে মুছে যাবেনা। ( The government of the people, by the people, for the people, shall not perish from the earth)"

সুতরাং গণতন্ত্র হল জনগনের স্বার্থের সরকার যা জনগন নিজেই বেছে নিয়েছে তাদের স্বার্থকে হাঁচিল করার জন্য।

কিন্তু একি ! এদেশের জনগনের একোন অবস্থা। তারা তাদের স্বার্থকে হাঁচিল করতে পারছেনা তাদের নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। তাদের নিরাপত্তার যেন বড়ই অভাব। পত্রপত্রিকা খুললেই দেখা যায় খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ, গুম আরও অনেক অপরাধ। এর কোনটার কোন বিচার করতে পারছে না সরকার। তাহলে কি এই দেশে গণতন্ত্র বিরাজ করছেনা, তাহলে কি বিরাজ করছে এই দেশে?

আসুন একটু ফেলে আসা দিনগুলোর দিকে তাকায়

আমাদের স্বাধীনতার বড় একটি লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র । ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থার পথে চলে, গঠন করা হয় বাকশাল। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে বুঝি অনেক দলের উপস্থিতি। তারা নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এবং নির্বাচনে অংশ নেয়। এখানে বহুত্ববাদ স্বীকৃত। কিন্তু বাকশালে তা উপেক্ষা করা হয় বলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তাদেরকে মনে রাখতে থাকে। বাকশালের অবসান যে প্রক্রিয়ায় ঘটে তার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। দেশের বুকে নেমে আসে সামরিক শাসন। সেখানে শুধু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডই নিষিদ্ধ হয় না, কোন মতপ্রকাশেরও অবকাশ থাকে না।

কিন্তু গণতন্ত্র কি মুক্তি পেয়েছে?

তাহলে কেন প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনের আগে অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি হয়? ২০০৭ সালে আমরা দেখেছি, গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা অন্যের হাতে চলে যায়। কেয়ারটেকার সরকারের মেয়াদ দাঁড়াল তিন মাসের রেওয়াজের বদলে টানা দুই বছর। আবার এটাও বেশ মজার যে, এই অগণতান্ত্রিক শক্তি যে ভোটার তালিকা তৈরি করল সেটা অনেকটা নির্ভুল বলে সবাই মেনে নিল। এই অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো থেকে এটাও বলা হলো যে, গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে প্রণীত ভোটার তালিকায় এক কোটির বেশি ভুয়া ভোটারের অস্তিত্ব ছিল এবং এ মতকে কোনোভাবেই অতিশয়োক্তি বলা চলে না। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সংগঠন এনডিআইয়ের ভাষ্যও এর সঙ্গে মিলে যায়। স্পষ্টতই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দায়িত্ব যাদের তাদের মধ্যে এ ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেঁৗছানো যায় না, বরং বারবার হোঁচট খেতে হয়।

এখন ক্ষমতায় সেই আওয়ামী লীগ সরকার। তারা আবার ও একদলীয় শাসন ব্যবস্থার পথে চলে যাচ্ছে ।