প্রসঙ্গ: ভারত এবং ভারত বিরোধিতা

মোঃ হাসেম
Published : 7 Sept 2011, 08:32 AM
Updated : 7 Sept 2011, 08:32 AM

ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি করছে সরকার,ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে,স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিচ্ছে,ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়া হচ্ছে(ট্রানজিট আর করিডোরকে একসাথে গুলিয়ে ফেলে),গোলামীর চুক্তি করছে ,ইত্যাদি পাইকারি কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ হওয়া দরকার।অনেক হয়ছে।এর আগেও "মসজিদে মসজিদে আজানের বদলে ওলো ধ্বনি,ফেনি পর্যন্ত বাংলাদেশি পতাকার বদলে ভারতীয় পতাকা,২৫ বছরের গোলামী চুক্তি"ইত্যাদি নানান অপ-কল্পিত কথা বলে দেশের মানূষের মাঝে যারপরনাই বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।কিন্ত কোন মসজিদে কোনো ওলো ধ্বনি কোন দিন শোনা যায় নাই,ফেনি পর্যন্ত ভারতীয় পতাকা ওড়ে নাই,২৫ বছরের চুক্তিতেও গোলামির কোন নিদর্শন পাওয়া যায় নাই।

আসল কথা হলো,কোন সরকারই জ্ঞানতঃ দেশবিরোধী বা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর কিছু করেনা,করতে চায়না,করতে পারেনা।পারিপার্শ্বিক কঠিন বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়েই,দেশ ও জাতির বৃহত্তর এবং সুদূরপ্রসারি কল্যান চিন্তায়,হয়তোবা অনেক কিছুই করতে হয়,অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়,অনেক কিছুর সাথেই আপোষ করতে হয়।সব সরকারই দেশ ও জাতির মঙ্গল চায়,ভালো চায়।ভালো করতে চায়।এই অতি স্বাভাবিক আস্থাটুকু না থাকা দূর্ভাগ্যজনক।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি করার মতো কোন জিনিষ নয়।ইচ্ছা করলেও তা বিক্রি করা যায়না।আর তা কিনার জন্য আমাদের দরজার পাশে কেউ ওৎ পেতে বসেও নেই।আধুনিক সভ্যতায় এসব একেবারেই অপ-উদ্দেশ্যপ্রনোদিত এবং নীচুমানের কিছু অচল কথা।

আরো সব চেয়ে কঠিন বাস্তবতা হলো,ভারত আমাদের তুলনায় সব দিক দিয়েই এক বিরাট মাপের নিকট প্রতিবেশি দেশ।আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ভারতের অবস্থান অন্যতম এক পরাশক্তির পর্যায়ে।ভৌগলিক এবং আরো অনেক কারনেই ভারতের সাথে আমাদের সব কিছুই হতে হবে কূটনৈতিক এবং যুক্তিনির্ভর সমঝোতাভিত্তিক।পাল্টা-পাল্টি এবং সাংঘর্ষিক নয় কোন অবস্থাতেই।এই বাস্তবতাটা বিবেচনায় রাখার দরকারটা কিন্ত আমাদেরই বেশি।ভারতের নয়।ভারত আমাদেরকে এভয়েড করলেও পারে,আমরা পারিনা।

ভারতের 'বড় ভাই সুলভ-প্রভাব বিস্তারি আচরন,সম মর্যাদাশীল চিন্তার অভাব' ইতাদি প্রসঙ্গে অনেক কিছুই বলা যেতে পারে,বলা হয়ে থাকেও।কিন্ত বিকল্পটা কি?অনেকে পারলে এখনই লাঠি হাতে ভারতের দিকে ছুটে যান।বিকল্প তা নয় কোন অবস্থাতেই।বিকল্প কঠিন বাস্তবতাকে আমলে নিয়ে আলোচনার টেবিল।বিকল্প-ধৈর্য এবং যুক্তি ও মেধা নির্ভর কূটনৈতিক কৌশল।আর সরকারের প্রতি,দলমতনির্বিশেষে সকলের যথাযথ সহযোগিতা ও আস্থা-সে যে বা যারাই সরকারে থাকুক না কেন।