৭১ এর কুখ্যাত অপরাধীদের বিচারে বেগম জিয়ার গাত্রদাহের দাবদাহ

মোঃ হাসেম
Published : 13 Oct 2011, 05:45 AM
Updated : 13 Oct 2011, 05:45 AM

# গত ২৭/৯/১১ তারিখে ঢাকার জনসভায়,বেগম জিয়া তার বক্তব্যে,"যুদ্ধাপরাধের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক ট্রাইব্যুনাল। বিচারের নামে এখানে প্রহসন হচ্ছে" বলে উল্ল্যেখ করে, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সকল গ্রেফতারকৃ্ত যুদ্ধাপরাধীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়ে, ৭১ এর কুখ্যাত অপরাধীদের পক্ষে তার সুস্পষ্ট অবস্থান জানান দিয়েছিলেন।গত ১১/১০/১১ তারিখে সিলেটের জনসভায় একই কথার পুনরাবৃত্তি করে,তার ভাষায় যুদ্ধাপরাধের নামে গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।এর সাথে তিনি আরো যোগ করেন-"আগে রক্ষীবাহিনী এবং আওয়ামীলীগের বিচার করতে হবে"।

মনে পরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার আরম্ব হলে, বিদ্বেষ যন্ত্রনায় জর্জরিত বেসামাল বেগম জিয়া, সেই বিচারের প্রতি তাচ্ছিল্য করে তার মন্তব্যে বলেছিলেন-"ওরা(মানে আওয়ামীলীগ) কিসের বিচার করবে? বরং সিরাজ সিকদার সহ আরো অনেক হত্যার জন্য ওদেরই বিচার করা হবে।লিপি হত্যা(১৯৯৭ এর দিকে সাতক্ষিরা অঞ্চলে এস এস সি পরীক্ষা চলা কালে সৃষ্ট বিশৃংখলায় মানূষের ভিড়ে পদপৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত) সহ অনেক হত্যার বিচার আগে হতে হবে,তারপর অন্যসব হত্যার বিচার"।

অথচ ১৯৭৫ এর পর থেকে সেনাপতিশাসক জেনারেল জিয়া এবং তার(জিয়ার)উত্তরসূরী হিসাবে তিনি(বেগম জিয়া) মিলিয়ে বেশিরভাগ ছিলেন এ দেশের শাসন ক্ষমতায়।তখন তারা,বেগম জিয়ার কথিত এই রক্ষীবাহিনীর,আওয়ামীলীগের,সিরাজ সিকদার,লিপির এবং আরো 'অন্যসব' হত্যার বিচার করেননাই কেন?যা হোক আগে না করেছেন,এখন ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে বেগম জিয়া তার কথিত সে সব হত্যার বিচার করার ঘোষনাও দিতে পারেন।কিন্ত আগে তার কথিত সে সব হত্যার বিচার হতে হবে,অন্যথায় ১৫ আগষ্ট এবং ৭১ এর খুনীদের বিচার হতে পারবেনা-এটা কেমন কথা?

আসলে এসব কোন কথা নয়।কথা হলো ১৫ আগষ্টের খুনী এবং ৭১ এর খুনীদের সাথে বেগম জিয়াদের পরম আত্নার সম্পর্ক।তাই এই খুনীদেরকে,তাদের কুকর্মের জন্য-নির্মমমতা ও বর্বরতার জন্য,পুরুস্কৃত করেছেন নানানভাবে,আদর যত্ন এবং দূধকলা দিয়ে পুষেছেন বৎসরের পর বৎসর।সুতরাং এদের বিচারে তারা(বেগম জিয়ারা)বেসামাল এবং বিদ্বেষ যন্ত্রনায় দ্বগ্ধ হবেন,এদের রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়ে এদের পাশে দাঁড়াবেন,ইহাইতো স্বাভাবিক।তাই এদের বিচার বন্ধে বা যেকোন উপায়ে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপ-মতলবেই,পালটা হিসাবে এইসব 'রক্ষীবাহিনী-সিরাজ সিকদার-লিপিহত্যা-অন্যসব হত্যা' ইত্যাদি সব প্রসঙ্গ টেনে এনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা।১৫ আগষ্ট এবং ৭১ এর কুখ্যাত খুনী-অপরাধীদের বিচারে বেগম জিয়াদের গাত্রদাহের পরিমানটা যে কত ভয়াবহ এর প্রমান-বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারে আজ পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে তারা একটি কথাও বলেননাই।অথচ দলমত,শ্রেনী-পেশা নির্বিশেষে সমগ্র জাতি এই বিচারকে স্বাগত জানিয়েছে।

# সিলেটের জনসভায়,প্রসঙ্গক্রমে বেগম জিয়া আরো বলেছেন-"আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি"। তো বেগম জিয়া আবার মুক্তিযুদ্ধ করলেন কবে এবং কিভাবে!!তিনিতো মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাস আরাম আয়েসে কাটিয়েছেন ক্যান্টনমেন্টে হানাদার পাকসেনাপতিদের আদর আপ্যায়নে এবং ভোগ-বিলাসে,মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর সাথে যোগ দেয়ার পাকাপোক্ত সমস্ত ব্যাবস্থা বারবার অগ্রাহ্য করে ফিরিয়ে দিয়ে।যার ফলশ্রুতিতেই বেগম জিয়ার রক্তে মিশে গেছে পাক হানাদার এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের প্রতি তার এই সহমর্মীতা ও পরম আত্নার সম্পর্ক।যার স্বাক্ষর মিলে তার অনেক আচার আচরন,পদক্ষেপ ও কর্মকান্ডে।