রোহিঙ্গা: দাতা সংস্থার ভূমিকা

মির্জা আরিফুর রহমান
Published : 16 June 2012, 08:10 AM
Updated : 16 June 2012, 08:10 AM

যত চাপ সব বাংলাদেশের উপর ! মিয়ানমার যে তাদের দাঙ্গা নিরসনে উদ্যোগ নিচ্ছে না ….এদিকে আন্তজার্তিক মহলের কোন খেয়ালই নেই ! ওরা যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পর্যন্ত দিতে রাজী নয়, এটা'ত দাঙ্গার চেয়েও বড় ক্রাইম । একবার ভেবে দেখুন ওই মানুষগুলোর মনের কি অবস্থা ! দেশ থেকেও নাই বলে কেউ আশ্রয় দিতে চায় না ! নিজ মাতৃভূমিতেই যেন পরাধীন !

বহির্বিশ্বে রোহিঙ্গাদের নিয়ে দাতা সংস্থার যে মানবিকতার ব্যাবসা চলছে তার জন্যই এ দেশের বিরুদ্ধে এত কু প্রচার-প্রচারনা চলছে বলে মনে হয় । যদি এটা না হত তাহলে বহি:বিশ্বে মিয়ানমার সরকারের ব্যার্থতার খবর প্রকাশ না করে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে না …এমন খবর সব মহলেই প্রচারিত হত না । যেন সব দোষ বাংলাদেশের , ওরা মারামারি/দাঙ্গা করতেছে অথচ আমাদেরকেই উল্টো জাতিসংঘ,দাতা সংস্থা গুলো অভিযুক্ত করবে যে আমরা দোষী । অথচ মিয়ানমারের এই সমস্যার সমাধানে কোন সংস্থাই এগিয়ে আসছে না । যে সংস্থাগুলো এখন চিল্লাচ্ছে তারা প্রায় সবাই দাঙ্গা কবলিত এলাকা থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে । কেন ? তাদের মানবতা কই গেল ? যে পরিমান প্রেশারে এখন বাংলাদেশ আছে সে পরিমান প্রেশার মিয়ানমারকে দিলে বোধহয় এতদিনে ঝামেলা চুকে যেত ।

তাই, ওই সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা উচিত, তোদের এত দরদ লাগলে রোহিঙ্গাদের তোরা তোদের দেশে নিয়ে যা না ! ২০০৮ সালে ভুটানে শরনার্থী হওয়া নেপালের ৮ লাখ লোককে আমেরিকা তার দেশে নিয়ে গিয়েছিল । আর আমাদের দেশে তো শরণার্থির সংখ্যা মাত্র ৪ লাখের মত ! নেপালিদের মত ওদেরকে ও তোরা নিয়ে যা না ! এত লোককে এতদিন এখানে বসবাস করার জায়গা দেওয়া হলো এরজন্য তো কোনদিন কোন প্রশংসা শুনলাম না ! এখানে একটা প্রশ্ন হলো কেন নিয়ে যায় না ? আমাদের মনে হয়, রোহিঙ্গারা মুসলিম বলেই নিয়ে যায় না । আর কোন কারন দেখি না ! আরেকটা কারন হতে পারে, ওদের নিয়ে গেলে মানবতার নামে ব্যবসা করতে পারবে না । বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর একটা ইস্যু কমে যাবে । তাই, মনে হয় ওরাই এক নম্বর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী……অথচ সবার কাছে প্রচার করে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ! বাংলাদেশের মানুষের জুতার সমান সহনশীলতাও পশ্চিমাদের আছে কিনা সন্দেহ ! পশ্চিমাদের দালাল আরবেরাও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ ! ওদের ব্যাপারে কি আর বলা যায় ! ওরা তো ফিলিস্তিনিদেরই কোন প্রকারের সহযোগিতা করে না , রোহিঙ্গাদের কি করবে !

সমস্যার সমাধান না করে, ওটাকে যারা জিইয়ে রাখতে চায় তাদের সাথে সম্পর্ক রাখার ও কোন কারন থাকতে পারে না । শেষমেষ একটা কথাই বলতে চাই, পরিচয়হীন মানুষকে কেউ আশ্রয় দিতে চায় না, তাই মিয়ানমার সরকার ওদেরকে নাগরিকত্বের মাধ্যমে পরিচয় দিক, তারপর যদি বাংলাদেশ আশ্রয় না দেয় তখন চিল্লাইয়েন । আর যদি দাতা সংস্থা মনে করে, পরিচয়হীন লোকগুলোকে আশ্রয় দেওয়া হোক তাহলে আপনারা বিমান পাঠান, কক্সবাজার বিমান বন্দরে আপনাদের স্বাগতম । আমরা নিজেরা টেকনাফ থেকে বাসে করে এনে বিমানে তুলে দেব….আশা করি ৪-৫ লাখ লোকের জন্য আমেরিকা/ইউরোপে অনেক জায়গা পড়ে রয়েছে, আপনাদের তো কোন সমস্যাই হবে না , উল্টো জনসংখ্যা স্বল্পতার অভাব মেটাতে পারবেন আবার মানবিকতার ঝান্ডাও তুলে ধরতে পারবেন ।