জিয়ার মাজারে খালেদা-তারেক অনুসারী সংঘর্ষ

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
Published : 6 August 2012, 11:36 AM
Updated : 6 August 2012, 11:36 AM

বাংলানিউজ২৪.কম এর ১১টা ৪১ মিনিটের "জিয়ার মাজারে খালেদা-তারেক অনুসারী সংঘর্ষ, আহত ১৩" সংবাদটি চোখে পড়ল। সংবাদটি ছিল- বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়ার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সমর্থক গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জিয়ার মাজার এবং বেইলি ব্রিজের মাঝমাঝি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুসারী নেতাদের দ্বন্দ্ব থেকেই এ সংঘর্ষ হয় বলে সংঘর্ষরতদের আলোচনা থেকে জানা গেছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জিয়ার মাজারে ফুল দিতে আসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ড্যাবের নেতারা। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে দ্বিধা বিভক্ত ড্যাবের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরাই এ সময় মিছিল নিয়ে জিয়ার মাজারে আসেন। মির্জা ফখরুল মাজারে ফুল দিয়ে চলে যাওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ড্যাব মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এবং ড্যাব থেকে বহিষ্কৃত ড. মাজহারুল ইসলাম দোলনের গ্রুপ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। শিগগিরই পরিস্থিতি রূপ নেয় সংঘর্ষে। শুরু হয় মিছিল-পাল্টা মিছিল। পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী সংর্ঘষে প্রিন্স নামে এক কর্মীসহ দু'জনের মাথা ফেটে যায়। আহত হন আরও অন্তত ১১ জন। সহকর্মীরা তাদের সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের এই সংগঠনটির দু'গ্রুপের সংঘর্ষে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদল সদস্যদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। সংঘর্ষের পর ডা. দোলন সমর্থকদের আলোচনা থেকে জানা গেছে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুসারী ডা. দোলন ড্যাবের মধ্যে আলাদা গ্রুপ গড়েছেন। অপরদিকে ড. এম আজিজুল হককে সভাপতি ও ডা. জাহিদকে মহাসচিব করে ড্যাবের বর্তমান কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক যিনি বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন ড্যাবের বিভিন্ন বিষয় খোঁজখবর নেবেন। অথচ ড্যাব কোন ক্ষমতাবলে এবং গঠনতন্ত্রের কোন অধ্যায়ের কারণে বিএনপির নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মাজহারুল ইসলাম দোলনকে বহিস্কার করলেন। এই বহিষ্কার কতটা যৌক্তিক একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে ড্যাবের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের প্রশ্ন।

বিএনপির বিভিন্ন সভা/সমাবেশে চিকিৎসকরা নেতাকর্মীদের অভয় দিয়ে থাকেন আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে কেউ যদি আহত হয় কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করে তাহলে ড্যাবের প্রতিটি সদস্য অর্থাৎ চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা করবেন। সমাজের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে চিকিৎসকরা যখন মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সফল রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজার আঙ্গিনায় নিজেদের স্বীয় স্বার্থের জন্য রক্তক্ষরণের মত দুঃখজনক ঘটনা ঘটাতে পারে তাদের দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির কতটুকু অবদান হবে এটি এখন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা আশা করব, জাতীয়তাবাদী দলের অন্যতম এই সহযোগী সংগঠন ড্যাব শহীদ জিয়ার মাজারে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছে তার জন্য তারা কি পদক্ষেপ নেবে সেটি এখন একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে দেখার বিষয়। আমরা চাই না দলীয় কোন্দলে নিজেরা জর্জরিত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঈদের পর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনের দাবীতে যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কোন্দলে সেই আন্দোলন ব্যাহত হয়।