আর একটি নক্ষত্রের বিদায়

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
Published : 29 Sept 2012, 08:19 AM
Updated : 29 Sept 2012, 08:19 AM

সাংবাদিকদের অভিভাবক, নির্ভীক কলম যোদ্ধা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আতাউস সামাদের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতে সাংবাদিক জগতের আরেকজন উজ্জল নক্ষত্র ফজলে রশিদের না ফেরা দেশে চলে যাওয়ায় সাংবাদিকদের মাথার উপর থেকে আরেকটি বট বৃক্ষের ছায়া সরে গেল। অসুস্থ অবস্থায় না ফেরার দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রবীন সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই বইয়ের লেখক নির্মল সেন এবং আরেকজন সাংবাদিকদের অভিভাবক এবিএম মূসা।

প্রবীন সাংবাদিকদের প্রিয় সহকর্মী আতাউস সামাদ ও ফজলে রশীদের বিয়োগ তাদের হৃদয়কে কষ্টের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে আমাদের প্রার্থনা যারা এখনো বেচে আছে আমাদের অগ্রজ গিয়াস কামাল চৌধুরী, নির্মল সেন এবং এবিএম মূসা সহ সকলকে সুস্থ্যও শোক সইবার শক্তিদান করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফাজলে রশিদ যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)।নিউইয়র্ক সময় শুক্রবার বেলা পৌনে তিনটায় সেখানকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।গত কয়েক মাস ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে মরহুমের মরদেহ ওই হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে।

তার এই মৃত্যুর সংবাদে সাংবাদিকদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। সকলেই আফসোস করে বলে, এভাবে আমাদের মুরুব্বীরা এত দ্রুত বিদায় নিলে আমাদেরকে কে শিক্ষা, শাসন এবং আদর, স্নেহ দিবে। তাদের প্রতিটি লেখনীতে ছিল দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার উপাদান। সততা, সাহসীকতা নির্ভীকতা নিয়ে তারা সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশের জন্য, মানবতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য লিখে চলেছিলেন।
শনিবার বিভিন্ন অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে যখন খবর আসলো ফজলে রশীদ আর নেই তখন নির্বাক হয়ে অনেকক্ষণ আকামের দিকে তাকিয়েছিলাম আর হৃদয় থেকে তাগিদ অনুভব করছিলাম আকাশ থেকে আরেকটি উজ্জল নক্ষত্র বিদায় নিল।

ফাজলে রশিদ ১৯৩৮ সালে ১ আগস্ট ভারতের কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান অবজারভারে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। এরপর বাংলাদেশ অবজারভার, মর্নিং নিউজ, নিউনেশন পত্রিকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

সর্বশেষ তিনি উইকলি হলিডের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ফজলে রশীদ জাতীয় প্রেসক্লাবের দুইবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশে ইংরেজি সংবাদিকতার অন্যতম অগ্রপথিক ছিলেন ফজলে রশীদ।
মরহুমের বাবার নাম আব্দুল করীম। মা সৈয়দা আমাতুজ জোহরা। তার স্ত্রী অধ্যাপিকা মমতাজ খান বর্তমানে মেয়ে খাদিজাতুলের সঙ্গে আমেরিকা রয়েছেন।

ঢাকার জাতীয় বিভিন্ন দৈনিকে লেখার পাশাপাশি সর্বশেষ তিনি উইকলি হলিডের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।ফাজলে রশিদ জাতীয় প্রেসক্লাবের দুইবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।বাংলাদেশে ইংরেজি সংবাদিকতার অন্যতম অগ্রপথিক ফাজলে রশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলেরও অধিনায়ক ছিলেন।মরহুমের বাবা মরহুম আব্দুল করীম এবং মা সৈয়দা আমাতুজ জোহরা। তার স্ত্রী অধ্যাপিকা মমতাজ খান বর্তমানে মেয়ে খাদিজাতুলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

ফাজলে রশিদের মৃত্যুতে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া নিউইয়র্কে সফররত প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী বাংলাদেশের সাংবাদিকবৃন্দও শোক প্রকাশ করেন।

মরহুম অধ্যাপক আবু রুশদ মতিনুদ্দিন, মরহুম অধ্যাপক আবু জামাল, মরহুম অধ্যাপক আবু তৈয়ব, মরহুম বাজলে কাদের, মরহুম হেদায়ত মওলা, মরহুম খাদেমাতুল মওলা ও মরহুম শাহাদৎ মওলা এরা সবাই ফাজলে রশিদের সহোদর।

তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও কন্যা রেখে গেছেন। তার ছেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং মেয়ে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সাংবাদিক মহল সহ রাজনীতিবীদ, সামাজিক সংগঠন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ফার্স্ট নিউজ বিডি টোয়েন্টিফোর ডট কম এর সম্পাদক মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা এক বিবৃতিতে বলেন, নন্দিত সাংবাদিক ফজলে রশীদের মৃত্যুতে যে অপূরনীয় ক্ষতি হলো তা কিছুতেই পুরনীয় নয়। তিনদিনের ব্যাবধানে আমাদের মাঝথেকে দুইজন সাংবাদিকদের অভিভাবক বিদায়নিল যা সাংবাদিক সমাজ তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তাদের যে সাহসী ভূমিকা ছিল তা সারা জীবন গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তিনি তার বিদেহীআত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।