৯ অক্টোবর বরিশালের জনসভা ১৪ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
Published : 3 Oct 2012, 05:12 PM
Updated : 3 Oct 2012, 05:12 PM

৯ অক্টোবর বরিশালের জনসভা ১৪ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন –

১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল আগামী ৯ অক্টোবর বরিশাল বেলস পার্কে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছোটভাই মেজর অবঃ সাইদ ইস্কান্দারের মৃত্যু এবং বরিশালে বিরামহীন বৃষ্টির ফলে ৯ অক্টোবরের জনসভার তারিখ পিছিয়ে ১৪ই নভেম্বর ঘোষনা করা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয় থেকে ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে নতুন তারিখ নিশ্চিত করা হয়। এর আগে ৯ তারিখের জনসভা স্থগিত হওয়ার খবর শুনে বরিশাল বিভাগের তৃনমূল পর্যায়ে নেতা কর্মীরা হতাশায় নিমজ্জিত হয়। দীর্ঘদিন পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা বরিশালে আসছে এই খবরে বরিশালের প্রতিটি জেলা, থানা উপজেলায় বিএনপির নেতা কর্মীরা প্রতিদিন গনসংযোগ, সভা সমাবেশ করে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতারা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা জেলা সহ উপজেলাতে সভা সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন প্রান সৃষ্টি করেছিলেন।

নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ ধীরে ধীরে প্রশমিত হয়ে ঐক্যের বাঁধনে সকলে একত্রিত হচ্ছিলেন। জনসভাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে কয়েকটি কমিটি দিনরাত পরিশ্রম করছিলেন।
দীর্ঘ আড়াই বছর পর বরিশালে দলীয় প্রধানের আগমন উপলক্ষে বিভাগ জুড়ে নেতাকর্মীদের মাঝে যে উত্সাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল, তা ঝিমিয়ে পড়েছে। দলীয় কর্মসূচি বেগবান ও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে খুব শিগগিরই বরিশালে বেগম জিয়ার কর্মসূচির দাবি জানান নেতাকর্মীরা।

মহাজোট সরকারের দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, হত্যা-গুম-খুন, বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নানা হয়রানি, নির্যাতন এবং গ্যাস-বিদ্যুত্-পানিসহ অব্যাহত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাহীন জোট দীর্ঘদিন ধরে দেশজুড়ে নানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। এরই মধ্যে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে রোডমার্চ ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও দক্ষিণাঞ্চলে পালিত হয়নি এ ধরনের কোন কর্মসূচি। অবশেষে গত মাসে ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশজুড়ে মাসব্যাপী সরকারবিরোধী সাংগঠনিক কর্মসূচি। ৯ অক্টোবর বরিশালে অনুষ্ঠিতব্য জনসভার মধ্য দিয়ে তা শেষ হওয়ার কথা।

বেগম জিয়ার বরিশাল সফর সফল করতে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিভাগ জুড়ে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের তত্পরতা শুরু হয়। এরই মধ্যে বরিশাল মহানগর, বরিশাল দক্ষিণ ও উত্তর জেলা, ভোলা ও বরগুনা জেলায় জনসভা এবং প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভেকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপিসহ অন্য নেতারা অংশগ্রহণ করেন। আজ সকালে অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপির আহ্বানে বরিশালে বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একই ভাবে পিরোজপুরে ছিল দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের জনসভা। এ দুটি কর্মসূচি পালনে নেয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি।

এরই মধ্যে অনেক স্থানে তোরণ নির্মাণের কাজ শেষও হয়েছিল। একই সঙ্গে গৌরনদীতে নির্মাণাধীন ১২টি তোরণ ভাংচুর করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এমপি বলেন, ব্যর্থ এ সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে নানা আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। এ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশালে আয়োজন করা হয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জনসভা। অনিবার্য কারনে ৯ তারিখের জনসভা স্থগিত করা হলেও সরকারবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে এবং আগামী ১৪ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ১৮ দলীয় জোটের জনসভা। সে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

বরিশাল জেলা বিএনপি দক্ষিন এর সভাপতি, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, ৯ অক্টোবরের জনসভা সফল করার জন্য আমাদের প্রস্তুতি চুড়ান্ত ছিল। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলায় সভা সমাবেশ করে জনসভাকে সফলকাম করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তারিখ পিছানোর ফলে আরো ৫ দিন সময় পাওয়ায় লোকসমাগম আরো বেশী হবে।

জিয়া সেনা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান তপন বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বরিশাল আসছেন এই খবরেই বরিশালের বিএনপির নেতাকর্মীরা নতুন ভাবে উজ্জীবিত হয়েছে। আশা করছি স্মরণকালের সর্ব বৃহৎ জনসভা বরিশালের বেলস পার্কে অনুষ্ঠিত হবে।

ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর বলেন, জনসভাকে সফল করার জন্য রাজাপুর, কাঠালিয়া, নলছিটি ও ঝালকাঠিতে ব্যাপক গনসংযোগ করা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা বরিশালের সবচেযে নিকটবর্তী জেলা হওয়ার কারনে আমাদের প্রস্তুতিও ব্যাপক রয়েছে। ৯ তারিখের পরিবর্তে ১৪ নভেম্বর তারিখ নতুন ভাবে নির্ধারিত হওয়ায় প্রচার করার জন্য আরেকটু সময় পাওয়া গেছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।